Monday, February 13, 2017

গ্রিনহাউস ঠেকাতে ‘গাছ ভবন’ বানাচ্ছে চীন


নিজ দেশে দূষণ ঠেকাতে এগিয়ে এসেছে চীন। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ঠেকাতেই ওই দেশের দুটো ভবনের মধ্যে রোপণ করা হবে হাজারো গাছ। আগামী বছরে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে। এই ভবনের নকশা করেছেন পৃথিবী বিখ্যাত স্থপতি স্টেফানো বোইরি।
চীনের শহরগুলোতে দূষণের কারণে ইতিমধ্যেই বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। তাই হয়তো তা থেকে রক্ষা পেতে উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।
ডেইলি মেইল ও নিউইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, চীনের পূর্ব উপকূলবর্তী শহর নানজিংয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে দুটি ভবন, যেখানে ভবনের প্রতি ধাপে রোপণ করা হবে সবুজ গাছ। ৩৫০ ফুটেরও বেশি উচ্চতার একটি ভবনে থাকবে ১১ হাজার সবুজ গাছ। আর এতে করে সেখানে বসবাসকারী মানুষের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন চাহিদা মিটবে বলে আশা করছে দেশটি।
ওই দুটি ভবনের নকশায় দেখা গেছে, ভবনের বাইরেটা থাকবে গাছপালাবেষ্টিত। ভবনে শপিং কমপ্লেক্স, সুইমিং পুল, জিম, হোটেল, রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল, প্রদর্শনীর জন্য ফাঁকা জায়গা, বিনোদনমূলক স্থাপনার পাশাপাশি থাকবে বাচ্চাদের স্কুলও। এই কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে ভবনগুলোর নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এগুলো তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছে দেশটি। এগুলোর পর দেশটির আরও কয়েকটি শহরে এমন ভবন বানানো হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
‘নানজিং গ্রিন টাওয়ার’ নামের ওই ভবনগুলোর নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থপতি স্টেফানো বোইরি। তিনি বলেন, ভবন দুটো হবে পুরোপুরি সবুজ।
নানজিং গ্রিন টাওয়ারের দুটোর মধ্যে একটি ভবনের উচ্চতা ৬০০ ফিট। অপর, অর্থাৎ দ্বিতীয়টির উচ্চতা ৩৫৫ ফিট। ভবনের ছাদে থাকবে মিউজিয়াম ও ব্যক্তিগত ক্লাবও।
১ হাজার ১০০ গাছের মধ্যে ৬০০টি বড় লম্বা ধরনের আর ৫০০টি থাকবে মধ্যম আকার গাছ থাকবে। এগুলোর পাশাপাশি থাকবে আড়াই হাজার ছোট গাছও। এ গাছগুলো থেকে দৈনিক ৬০০ কেজি অক্সিজেন সরবরাহ হবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তা। এ ছাড়া বছরে ২৫ টন কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করবে গাছগুলো।
এর আগেও বোইরির পরিকল্পনা ও নকশায় ভবন তৈরি হয়েছে। ইতালির মিলান টাওয়ার বানিয়েছেন তিনি। ওই ভবনে ৯০০ গাছ লাগানো হয়। নানজিং শহরের যে ভবনগুলো হচ্ছে, সেগুলোর গঠনও অনেকটাই তেমন। মিলানের ওই ভবন ২০০৯ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১৪ সালে। তবে চীনের ভবনগুলোর আবাসিক কাঠামোতে গাছপালার সংখ্যা দ্বিগুণ। সেই সঙ্গে ভবনগুলো মোট উচ্চতাও বেশি। সুইজারল্যান্ডেও এমন ভবন বানানো হয়েছে।

Saturday, February 4, 2017

আড়াই লাখ টাকার বেশি লেনদেন হলেই নিবন্ধন

আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আইন বাস্তবায়ন হবে। এই আইন চালু হলে অনলাইনেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো রিটার্ন জমা, কর পরিশোধসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ করতে পারবে। কিন্তু অনলাইনে সব কাজ করতে হলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে। ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের আওতায় এর প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। আগামী ১৫ মার্চ থেকে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হবে। মূসক নিবন্ধন নিতে সময় পাওয়া যাবে সাড়ে তিন মাস। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তবে মূসক নিবন্ধন সব ব্যবসায়ীকে নিতে হবে না। বছরে ৩০ লাখ টাকার কম লেনদেন হওয়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে এই নিবন্ধন নিতে হবে না। এর মানে হলো, প্রতি মাসে যেসব প্রতিষ্ঠানের গড় লেনদেন আড়াই লাখ টাকার কম, তাদের মূসক নিবন্ধন নিতে হবে না। বর্তমানে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক টার্নওভার হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো প্যাকেজ মূসক দেয়। নতুন আইনে এসব প্রতিষ্ঠানও মূসক নিবন্ধনের বাইরে থাকবে। তবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্যাকেজ মূসক বহাল রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন।
বার্ষিক লেনদেন ৩০ লাখ টাকার বেশি হলেই অনলাইন নিবন্ধনের আওতায় আসবে। ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প দুভাবে নিবন্ধন দেবে। বার্ষিক ৩০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হলে যে নিবন্ধন দেওয়া হবে, তা তালিকাভুক্ত বা অ্যানলিস্টমেন্ট হিসেবে দেখানো হবে। লেনদেনের ওপর ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার কর দেবে ওই প্রতিষ্ঠান। আর বার্ষিক লেনদেন ৮০ লাখ টাকার বেশি হলে ইলেকট্রনিক ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর (ইবিআইএন) নিতে হবে। তাঁদের ওপর ১৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ হবে।
অনলাইনে সেবা নেওয়ার জন্য যে ইবিআইএন দেওয়া হবে¹তা অনেকটা অনলাইন কর শনাক্তকরণ নম্বর বা ই-টিআইএনের মতো। ঘরে বসেই ব্যবসায়ীরা এ নিবন্ধন নিতে পারবেন। বিবরণী দাখিলসহ কর পরিশোধও করতে পারবেন। ইতিমধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের সনাতনী পদ্ধতিতে বিআইএন নেওয়া আছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকেও এখন নতুন করে অনলাইন নিবন্ধন হতে হবে।
ভ্যাট অনলাইন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বিআইএন নেওয়া যাবে। বিআইএন নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের অন্য শাখার ঠিকানা, ব্যাংক হিসাব নম্বর, ব্যবসায়ের ধরন, টার্নওভারের পরিমাণ, ব্যবসা শুরুর তারিখ, বিদ্যমান বিআইএনের তথ্য দিতে হবে। এ ছাড়া ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের তথ্য, তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, নাম, ব্যবসায়ে তাঁদের অংশ ইত্যাদি তথ্যও দিতে হবে। একই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে পরে নিয়মিত মূসক রিটার্ন ও কর পরিশোধ করা যাবে।
আবার প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা চাইলে নিজ নিজ কমিশনারেট কার্যালয়ে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সনাতনী পদ্ধতিতে এ নিবন্ধন নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে এসব তথ্য ওই কমিশনারেট থেকে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প কার্যালয়ে পাঠানো হবে। তারপর যাচাই-বাছাই শেষে নিবন্ধন দেবে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঘরে বসেই সব করতে পারবেন। তাঁদের মূসক কার্যালয়ে আসতে হবে না। হয়রানিও হতে হবে না। কর জমার পদ্ধতি সহজ হলে ব্যবসায়ীরা বেশি কর দিতে উৎসাহী হবেন।
এ পর্যন্ত সনাতনী পদ্ধতিতে ৭ লাখ ৮৪ হাজার প্রতিষ্ঠান বিআইএন নিয়েছে। তবে সব প্রতিষ্ঠান রিটার্ন জমা দেয় না। বছরে গড়ে ৫৭ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান রিটার্ন জমা দেয়। ২০২০ সালের মধ্যে ৩ লাখ প্রতিষ্ঠানকে ইবিআইএনের আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন মূসক আইন বাস্তবায়ন শুরু হলে প্যাকেজ মূসক উঠে যাবে। চলতি অর্থবছরের জন্য এলাকাভেদে প্যাকেজ মূসক রয়েছে। প্যাকেজ মূসক হলে বিক্রি যা-ই হোক না কেন, বছর শেষে নির্ধারিত পরিমাণ মূসক হলেই হয়। কোনো হিসাব রাখার বালাই নেই। প্যাকেজ মূসকব্যবস্থা উঠে গেলে নতুন আইন অনুযায়ী রেয়াতি সুবিধা নিতে সারা বছর হিসাব রেখে প্রমাণ দিতে হবে।
বিদ্যমান ব্যবস্থায় কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ব্যবসা গুটিয়ে নিলে বিআইএন বাতিল করার সুযোগ ছিল না। নতুন ব্যবস্থায় বিআইএন বাতিল বা স্থগিত করার সুযোগ রাখা হয়েছে।