নিজ দেশে দূষণ ঠেকাতে এগিয়ে এসেছে চীন। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ঠেকাতেই ওই দেশের দুটো ভবনের মধ্যে রোপণ করা হবে হাজারো গাছ। আগামী বছরে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে। এই ভবনের নকশা করেছেন পৃথিবী বিখ্যাত স্থপতি স্টেফানো বোইরি।
চীনের শহরগুলোতে দূষণের কারণে ইতিমধ্যেই বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। তাই হয়তো তা থেকে রক্ষা পেতে উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।
ডেইলি মেইল ও নিউইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, চীনের পূর্ব উপকূলবর্তী শহর নানজিংয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে দুটি ভবন, যেখানে ভবনের প্রতি ধাপে রোপণ করা হবে সবুজ গাছ। ৩৫০ ফুটেরও বেশি উচ্চতার একটি ভবনে থাকবে ১১ হাজার সবুজ গাছ। আর এতে করে সেখানে বসবাসকারী মানুষের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন চাহিদা মিটবে বলে আশা করছে দেশটি।
ওই দুটি ভবনের নকশায় দেখা গেছে, ভবনের বাইরেটা থাকবে গাছপালাবেষ্টিত। ভবনে শপিং কমপ্লেক্স, সুইমিং পুল, জিম, হোটেল, রেস্তোরাঁ, কনফারেন্স হল, প্রদর্শনীর জন্য ফাঁকা জায়গা, বিনোদনমূলক স্থাপনার পাশাপাশি থাকবে বাচ্চাদের স্কুলও। এই কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে ভবনগুলোর নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এগুলো তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছে দেশটি। এগুলোর পর দেশটির আরও কয়েকটি শহরে এমন ভবন বানানো হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
‘নানজিং গ্রিন টাওয়ার’ নামের ওই ভবনগুলোর নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থপতি স্টেফানো বোইরি। তিনি বলেন, ভবন দুটো হবে পুরোপুরি সবুজ।
নানজিং গ্রিন টাওয়ারের দুটোর মধ্যে একটি ভবনের উচ্চতা ৬০০ ফিট। অপর, অর্থাৎ দ্বিতীয়টির উচ্চতা ৩৫৫ ফিট। ভবনের ছাদে থাকবে মিউজিয়াম ও ব্যক্তিগত ক্লাবও।
১ হাজার ১০০ গাছের মধ্যে ৬০০টি বড় লম্বা ধরনের আর ৫০০টি থাকবে মধ্যম আকার গাছ থাকবে। এগুলোর পাশাপাশি থাকবে আড়াই হাজার ছোট গাছও। এ গাছগুলো থেকে দৈনিক ৬০০ কেজি অক্সিজেন সরবরাহ হবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তা। এ ছাড়া বছরে ২৫ টন কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করবে গাছগুলো।
এর আগেও বোইরির পরিকল্পনা ও নকশায় ভবন তৈরি হয়েছে। ইতালির মিলান টাওয়ার বানিয়েছেন তিনি। ওই ভবনে ৯০০ গাছ লাগানো হয়। নানজিং শহরের যে ভবনগুলো হচ্ছে, সেগুলোর গঠনও অনেকটাই তেমন। মিলানের ওই ভবন ২০০৯ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০১৪ সালে। তবে চীনের ভবনগুলোর আবাসিক কাঠামোতে গাছপালার সংখ্যা দ্বিগুণ। সেই সঙ্গে ভবনগুলো মোট উচ্চতাও বেশি। সুইজারল্যান্ডেও এমন ভবন বানানো হয়েছে।