Monday, February 28, 2011

জয় ক্রিকেটের


গোটা গ্যালারিতে তখন উৎকণ্ঠা। টিভি পর্দায় যারা খেলা দেখছিলেন, উৎকণ্ঠার কমতি ছিল না তাদেরও। শেষ তিন বলে ইংল্যান্ডের চাই ৫ রান। অতিরিক্ত থেকে একটি রান নিলেন আজমল শেহজাদ। পরের বলে দুটি রান নিলেন সোয়ান। শেষ বলে চাই ২ রান! উৎকণ্ঠা ছাড়িয়ে তখন একটা দম বন্ধ করার মতো পরিবেশ!
জয় যেতে পারে যে কারও ঘরে। যেন ফাঁসির মঞ্চে বোলার মুনাফ প্যাটেল আর ব্যাটসম্যান সোয়ান। মুনাফ যখন শেষ বলটা করতে দৌড়ালেন, তখন সোয়ান উত্তেজনায় নিজের ভেতরে ছিলেন কি না কে জানে! বল ব্যাটে লাগিয়েই দৌড়ালেন সোয়ান, এলো একটি রান। ভারত ৩৩৮, ইংল্যান্ডও ৩৩৮—ম্যাচ টাই, জয় হলো ক্রিকেটেরই!
ক্রিকেট যে সত্যিই ‘অনিশ্চয়তায়’ মোড়ানো খেলা, তা আরেকবার দেখা গেল ব্যাঙ্গালোরে। শচীন টেন্ডুলকার করলেন ১২০ রান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পাঁচটি সেঞ্চুরি হাঁকানোর কৃতিত্বটা এখন শুধুই তাঁর। শচীনের সেঞ্চুরি মাটি করে দিতে বসেছিলেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। খেললেন ১৫৮ রানের এক ‘অবিশ্বাস্য’ ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ম্যাচসেরাও হয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক। তবে ভারত হারেনি বলে বিষাদে ডুবতে হয়নি শচীন ভক্তদের।
৩৩৯ রান তাড়া করতে নেমে ৪০ ওভারে ২ উইকেটে ২৭২ তুলে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। ৬০ বলে দরকার মাত্র ৬৭ রান। গোটা গ্যালারিতে তখন উৎকণ্ঠা। ম্যাচ যে চলে যাচ্ছে ভারতের নাগালের বাইরে! পরের অংশটুকু ছিল উৎকণ্ঠা আর রুদ্ধশ্বাসের। ম্যাচ যেন এগিয়ে যাচ্ছিল হেলে-দুলে। অবশেষে ম্যাচের সমাধান আসে শেষ বলের নাটকীয়তায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ৩৩৮/১০ (৪৯.৫ ওভার)
শচীন ১২০, যুবরাজ ৫৮, গম্ভীর ৫১
ব্রেসনান ৪৮/৫
ইংল্যান্ড: ৩৩৮/৮ (৫০ ওভার)
স্ট্রাউস ১৫৮, ইয়ান বেল ৬৯
জহির ৬৪/৩, মুনাফ ৭০/২, চাওলা ৭১/২

Saturday, February 26, 2011

 টাইগারদের প্রতিশোধ


২০০৭ সালের বিশ্বকাপ, এরপর ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ—বিশ্ব আসরে দুই-দুবার আয়ারল্যান্ডের কাছে হার মানতে হয়েছিল টাইগারদের। প্রতিশোধের ম্যাচে ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে বোলারদের হাত ধরে মিরপুরে আজ ঠিকই ‘প্রতিশোধটা’ নিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।
ব্যাটসম্যানরা ২০৫ রানে অল আউট হওয়ার পর সংশয় জেগেছিল, শেষ পর্যন্ত প্রতিশোধ নেওয়া সম্ভব হবে কি না। তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আইরিশদের যন্ত্রণায় রাখেন শফিউল-সাকিব-আশরাফুলরা। যার পরিণতি, ৪৫ ওভারে ১৭৮ রানে অল আউট আয়ারল্যান্ড। টাইগারদের জয় ২৭ রানের!
পেসার শফিউল ইসলাম একাই চারটি উইকেট নিয়েছেন। বিনিময়ে আইরিশদের দিয়েছেন মাত্র ২১ রান। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ আশরাফুল শিকার করেন দুটি করে উইকেট। বোলারদের নৈপুণ্যে অসাধারণ জয় এলেও ব্যাটসম্যানদের নিয়ে একটু আক্ষেপ থেকেই যায়।
বাংলাদেশের ইনিংসটা এবার দেখুন—প্রথম পাঁচ ওভারে আসে ৪৯ রান, আর উদ্বোধনী জুটিতে ৫৩। এর পরই ব্যাটিং বিপর্যয়। সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন তামিম ইকবাল। এ ছাড়া রকিবুল হাসান ৩৮ এবং মুশফিকুর রহিম করেন ৩৬ রান। তবে নাঈম ইসলামকে আলাদা করে ধন্যবাদ দিতে হয়। ব্যাটসম্যানদের বিপর্যয়ের মধ্যেও শেষের দিকে এই ব্যাটসম্যানের ২৯ রানের ইনিংসের কল্যাণেই তো ২০০-র ঘর স্পর্শ করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের আন্দ্রে বোথা। এই বোলার শিকার করেন দলের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন জনস্টন ও ডকরেল।

রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে নেই শেখ রেহানার

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া কিংবা রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কোনও ইচ্ছে এই মুহূর্তে নেই শেখ রেহানার। তবে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হলে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন। আজ শুক্রবার তিনি কলকাতায় এই কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠা কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা আজ দক্ষিণ কলকাতার গ্যাঞ্জেস আর্ট গ্যালারিতে বাংলাদেশের চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের একক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। 
শেখ রেহানা বলেন, এই মুহূর্তে তার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে নেই। তিনি বলেন, রাজনীতিতে যোগ না দিয়েও নানা সমাজসেবামূলক কাজ করা যায়। তিনি সেই ধরনের কাজেই মনোনিবেশ করতে চান। বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর যেভাবে চাপ বাড়ছে, সেই চাপ তিনি কিছুটা শেয়ার করতে চান কিনা—এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে রেহানা বলেন, নতুন করে শেয়ার করার কিছু নেই। আর কাজের ব্যাপারে শেখ হাসিনা একাই যথেষ্ট।

Monday, February 21, 2011

পর্দার আড়ালের নায়কেরা


দলকে নিয়ে পরিকল্পনা করেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ফন্দি আঁটেন, দলকে প্রশিক্ষণ ও টেকনিক্যালি সহযোগিতা করেন, দলকে সাফল্যের মুখ দেখাতে কৌশল নির্ধারণ করেন, তিনি খেলেন না খেলান। হ্যাঁ, বলছিলাম কোচদের কথাই। খেলোয়াড়ের পাশাপাশি তারাও দলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। আর দলের সফলতা ও ব্যর্থতা অধিকাংশ নির্ভর করে তাদের ওপর। দলকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। খেলোয়াড়দের উত্সাহ-প্রেরণা জোগান। দলকে জেতাতে আগে থেকেই রণকৌশল ঠিক করে রাখেন। কোন স্টাইলে ব্যাটিং আর বোলিং করতে হবে, ফিল্ডিং কীভাবে দিতে হবে, কার কোন স্থান পরিবর্তন করতে হবে, কোন বোলার বল করবে, এসব সিদ্ধান্ত নেন মূলত কোচরাই। তবে মাঠে দলনেতা এসব সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করেন। পর্দার অন্তরালে থেকে যারা দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
টিমোথি জন নেলসন (অস্ট্রেলিয়া)
এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কোচ টিমোথি জন নেলসন। গত বিশ্বকাপের পর জন বুকানন কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দিলে অস্ট্রেলিয়ার কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দিতে তিনি সেভাবেই তৈরি করেছেন দলকে। জন নেলসন জম্মগ্রহণ করেন ব্রিটেনে ১৯৬৮ সালের ৫ মে। ১৯৯৯ সালে তিনি অবসরে যান। ২০০৭ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি জন বুকাননের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।
গ্যারি কারস্টেন (ভারত)
এবারের বিশ্বকাপের হট ফেভারিট ভারত। কোচের দায়িত্বে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক খেলোয়াড় গ্যারি কারস্টেন। ৪৩ বছর বয়সী গ্যারি ১৯৬৭ সালে ২৩ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার পল কারস্টেনের ভাই গ্যারি কারস্টেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১৮৫টি ওয়ানডে ও ১০১টি ম্যাচ খেলেছেন। তিনি দলের হয়ে টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৭৫ রানের রেকর্ড গড়েছিলেন। ২০০৩ সালে ২৭৭ রান করে জ্যাক ক্যালিস এ রেকর্ড ভাঙেন। ২০০৮ সালে তিনি ভারতের কোচের দায়িত্ব নেন।
এন্ডি ফ্লাওয়ার (ইংল্যান্ড)
এন্ডি ফ্লাওয়ার জিম্বাবুয়ের সাবেক খেলোয়াড়। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ড দলের গুরুদায়িত্ব নেন। ১৯৬৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি জম্মগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। তিনি মোট ৬৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। এরমধ্যে ছিল ১২টি সেঞ্চুরি আর ২৭টি হাফসেঞ্চুরি। ওয়ানডে ক্রিকেটেও তিনি সংগ্রহ করেছিলেন ৬৭৮৬ রান। ৪টি সেঞ্চুরি ও ৫৫টি হাফসেঞ্চুরি ছিল এর মধ্যে।
ট্রেভর বেলিস (শ্রীলঙ্কা)
ট্রেভর বেলিস। তিনি শ্রীলঙ্কা দলের কোচ। ১৯৬২ সালের ২১ ডিসেম্বর তিনি শ্রীলঙ্কাই জন্মগ্রহণ করেন। দেশের ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে ২০০৭ সালে তিনি কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দেশকে ১৫ বছর পর আবারও শিরোপা এনে দিতে এবারের বিশ্বকাপে তিনিই থাকবেন কোচের দায়িত্বে। বিশ্বের যে কোনো ক্রিকেট দলকে টক্কর দিতে শ্রীলঙ্কান দলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন।
ওয়াকার ইউনুস (পাকিস্তান)
এক সময়ের বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির পাকিস্তানি বোলার। নাম তার ওয়াকার ইউনুস। তবে পুরো নাম হচ্ছে ওয়াকার ইউনুস মাইতলা। তিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে পাকিস্তানের কোচের দায়িত্বে আছেন। ২০০৬ সালে তিনি দেশের বোলার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান। বিশ্বব্যাপী যখন পাকিস্তানি দলকে নিয়ে সমালোচনা আর অন্তর্কোন্দল, ফর্মহীনতা তখন ওয়াকার ইউনুস খুবই সতর্কভাবে এবারের বিশ্বকাপের জন্য দল গুছিয়েছেন। বিশ্বজয়ের স্বপ্নে শীর্ষদের এরই মধ্যে কৌশল ঠিক করে দিয়েছেন।
জন রাইটস (নিউজিল্যান্ড)
এবারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কোচ হিসেবে আছেন জন রাইটস। ১৯৫৪ সালের ৫ জুলাই তিনি নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। কিউইদের সাবেক এ অধিনায়ক কোচের অভিজ্ঞতা ১৮ বছরের। কিউইদের হয়ে ১৪৯টি ওয়ানডে ও ৮২টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। সংগ্রহে ছিল ৫৫৩৪ রান টেস্টে আর ৩৮৯১ রান ওয়ানডে ম্যাচে। ২০১০ সালে জন রাইটস নিউজিল্যান্ডের কোচের দায়িত্ব নেন।
জেমি সিডন্স (বাংলাদেশ)
টাইগারদের সাফল্যের পেছনে কাজ করে যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক খেলোয়াড় জেমি সিডন্স। ১৯৬৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় তার জন্ম। ২০০৭ সালের ২৮ অক্টোবরে তিনি বাংলাদেশে কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আগে তিনি ভিক্টোরিয়া ও সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছিলেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি মাত্র একটি ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেন। তবে খেলায় অভিজ্ঞতা যাই হোক, তিনি কোচ হিসেবে বেশি সফল।
অ্যালন বুচার (জিম্বাবুয়ে)
জিম্বাবুয়ের কোচ অ্যালন বুচার। ১৯৫৪ সালে তিনি ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। খেলতেন ইংলিশদের হয়ে। ২০১০ সালে তিনি জিম্বাবুয়ে দলের কোচের দায়িত্ব নেন।
ফিল সিমন্স (আয়ারল্যান্ড)
ফিল সিমন্স আয়ারল্যান্ডের কোচ। তিনি ১৯৬৩ সালের ১৮ এপ্রিল ত্রিনিদাদে জন্মগ্রহণ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার ছিলেন। খেলেছেন ২৬টি টেস্ট ও ১৪৩টি ওয়ানডে ম্যাচ। ২০০৭ সালে তিনি আইরিশদের কোচ হিসেবে যোগ দেন।
গিবসন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
প্রথম বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ গিবসন। ১৯৬৯ সালের ১৬ মার্চ বার্বাডোজে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি টেস্ট ও ১৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেন।
পিটার ড্রিনেন (নেদারল্যান্ডস)
নেদারল্যান্ডসের কোচ হিসেবে আছেন পিটার ড্রিনেন। ১৯৫৫ সালে তিনি নেদারল্যান্ডসেই জন্মগ্রহণ করেন। ২০১০ সালে নিজের দেশে কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন।
বেনজাইল (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকার কোচের দায়িত্বে আছেন বেনজাইল। তিনি ১৯৬১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্রিকেট জীবনে তিনি মাত্র দুটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন।
পাডুমো ডাসানায়েক (কানাডা)
কানাডা দলে আছেন পাডুমো ডাসানায়েক। ১৯৭০ সালে তিনি শ্রীলঙ্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কানাডা ও শ্রীলঙ্কার হয়ে খেলেছেন। ২০০৭ সালে তিনি কানাডার কোচের দায়িত্ব নেন।
এলডিন বেপটিন্স (কেনিয়া)
কেনিয়ার কোচ এলডিন বেপটিন্স। ১৯৬০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৪৩টি ওয়ানডে ও ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি কেনিয়ার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পান।

প্রভার অপূর্ববিচ্ছেদ

http://dc142.4shared.com/img/386393608/ce3af9eb/dlink__2Fdownload_2FZ_5FT8qSE-_2FProva_5Fscandal_5Fpart_5F3.3gp_3Ftsid_3D20110220-140806-a2f161be/preview.flv
শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদই ঘটল অপূর্ব-প্রভার। প্রায় পাঁচ মাস আলাদা থাকার পর আনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে গেল তাদের ডিভোর্স। এ জন্য অপূর্বকে শরিয়ত মোতাবেক দেনমোহরের টাকাও গুনতে হয়েছে। ডিভোর্সের পর অপূর্ব মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তবে প্রভার মধ্যে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। প্রসঙ্গত, বহুল আলোচিত একটি ভিডিও ক্লিপই এ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকেই।

টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার নেপথ্যে

টস হারাটা যেন মহেন্দ সিং ধোনির শাপেবর হলো। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে যেন নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলেন। ভারতকে ব্যাটিং করতে দেওয়ার মজাটা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন। বিরেন্দর শেবাগের ক্যারিয়ার সেরা ১৭৫ রান এবং বিরোট কোহলির দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৩৭০ রানের পাহাড়ে পেঁৗছে ভারত। মূলত তখনই ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায় বাংলাদেশের। তবে মিরপুরের এই চেনা উইকেটে ফিল্ডিং নেওয়ার পেছনে সাকিবের যুক্তিও রয়েছে। 'ভারতকে প্রথমে ব্যাটিং করে চাপে ফেলতে চাই' টস জয়ের পর এভাবেই নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ভারত এবারের আসরের হট ফেভারিট। তাই তাদের বিরুদ্ধে জিততে হলে কিছুটা তো ভাগ্যের সহায়তাও চাই। এ কথা আগেই বলেছিলেন টাইগার দলপতি। তবে ভাগ্যদেবী কাল সাকিবদের দিকে মুখ ফিরে তাকায়নি। তাই ভারত চাপে রাখার বদলে উল্টো বাংলাদেশের ঘাড়েই চাপের মস্ত এক বোঝা চেপে যায়। শেষ পর্যন্ত সেই চাপ থেকে আর বাড়াতে পাড়েনি টাইগাররা।

বাংলাদেশের প্রধান শক্তি স্পিন, তাই দিনের আলোতে উইকেটে টার্ন থাকতে পারে। তাছাড়া পোর্ট অব স্পেনে তো প্রথমে ফিল্ডিং করে ভারতকে ১৯১ রানেই অল আউট করেছিল টাইগাররা, হয়তো সেই স্মৃতিও উঁকি মারছিল সাকিবের মনে। তাই ভারতের মারকুটে ব্যাটিং লাইন আপের সামনে ফিল্ডিং সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করেননি সাকিব।

বাংলাদেশ ভালো লড়লেও জয় ভারতের

 ভারত : ৩৭০/৪ (৫০ ওভার), বাংলাদেশ : ২৮৩/৯ (৫০ ওভার), ফলাফল : ভারত ৮৭ রানে জয়ী

বাংলাদেশ ভালো লড়লেও জয় হলো ভারতের। উৎসবের আমেজে যাত্রা শুরু হলো বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০১১ এর। শুরুর দিনই টাইগারদের ম্যাচ থাকায় সারাদেশেই ছিল বাড়তি উত্তেজনা। মিরপুর যেন উন্মাদনার সাগরে পরিণত হয়েছিল। গতকাল স্টেডিয়াম এলাকা ছিল সারাবিশ্বের ক্রিকেটামোদীদের পদচারণায় মুখরিত। স্টেডিয়ামের বাইরেও ছিল জনসে াত। লাখ লাখ দর্শক বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিৎকারে স্টেডিয়াম এলাকা প্রকম্পিত করেছিল। সরাসরি খেলা দেখা যাবে না তাতে কি! স্টেডিয়ামের বাইরে থেকেই যেন তারা অভিনন্দন বার্তা জানিয়ে দিচ্ছিল সাকিবদের। স্টেডিয়ামের ভেতরের চিত্র অন্য রকম। লাল-সবুজ চাদরে মোড়ানো পুরো মাঠ, গ্যালারিও। সমর্থকদের গায়ে প্রিয় দলের জার্সি, হাতে লাল-সবুজের গর্বের পতাকা। পুরো স্টেডিয়ামেই ছিল উৎসবের আমেজ। তবে টস জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানালে চিত্র পাল্টে যায়। শেবাগ-কোহলির মারকুটে ব্যাটিংয়ে দর্শকদের আনন্দ যেন বেদনায় রূপান্তরিত হয়। সবার মুখেই তখন হতাশার ছাপ। স্বপ্নের বিশ্বকাপে পরাজয় দিয়ে যাত্রা শুরু করল সারথিরা। টাইগারদের প্রিয় মাঠ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামই মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছিল গতকাল। বড় একটা ধাক্কা খেল স্বপ্নকাতর দেশবাসী। দিবা-রাত্রির ম্যাচে টস সব সময়ই বড় ফ্যাক্টর। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, দিবা-রাত্রির ম্যাচে টস জিতলেই ৫০ ভাগ ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে গতকাল সাকিব কি তাহলে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলেন? সেটা যাদের ভাবার তারাই ভাববেন। তবে প্রথমে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আজ আমাদের খারাপ দিন ছিল। পেসাররা ভালো করতে পারেননি। তবে পরের ম্যাচেই ফিরব।' প্রথমে ফিল্ডিং নেওয়ার পেছনে পোর্ট অব স্পেনের সেই স্মৃতিও সাকিবকে প্রভাবিত করতে পারে। কেননা গত বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথমে ভারতকে ব্যাটিং করতে দিয়ে ১৯১ রানেই অলআউট করেছিল। তারপর ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম, সাকিব, মুশফিকের দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরিতে মহাকাব্যিক সে জয়, যা এখনো বাংলাদেশের কাছে মধুর স্মৃতি হয়ে আছে। তবে কাল সাকিবদের বাস্তবে নামালেন ধোনিরা। ভারত ৮৭ রানে জিতে বুঝিয়ে দিল পুরনো স্মৃতি যতই মধুর হোক তা এখন শুধুই অতীত। গতকাল এক শেবাগের কাছেই হেরে গেল বাংলাদেশ। বিরাট কোহলির অভিষেক সেঞ্চুরিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। শেবাগ-কোহলি মিলে তৃতীয় উইকেটজুটি ২০৩ রান করে ভারতকে পেঁৗছে দেয় দুর্গম পাহাড়ের চূড়ায়। ৩৭০ রান বিশ্বকাপে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ (বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৪১৩ বারমুডার বিরুদ্ধে ২০০৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজে)। শেবাগ তার ক্যারিয়ারসেরা ১৭৫ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেছেন। ১৪০ বলে ১৪টি চার ও ৫টি ছয়ে সাজানো ইনিংসটি ওয়ানডের ইতিহাসে দশম সর্বোচ্চ রানের তালিকায় স্থান পেয়েছে। শেবাগের দিনে সুবিধা করতে পারেননি লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকার। তিনি দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২৮ রান করেই রানআউট হয়ে যান। দুর্ভাগ্যের ছোঁয়ায় ব্যাটিং জিনিয়াস তার ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ শুরু করলেও ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলে পাকিস্তানি তারকা জাভেদ মিয়াঁদাদকে ছুঁয়ে ফেলেন কালই। সাকিব বাহিনীও ৬৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন ঘটিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। উইকেটে এসে নামের প্রতি সুবিচার করে খেলতে পারেননি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান গৌতম গম্ভীরও। তবে শেবাগ-কোহলিরা যখন তাণ্ডব চালাচ্ছিলেন তখন গ্যালারি ছিল সুনসান। যেন খেলা হচ্ছে মরুভূমিতে, আর হাজারও মানুষের মূর্তি তা ঠায় দাঁড়িয়ে তা দেখছে। তাদের অনুভূতি নেই। নেই আবেগও। মাঝে মাঝে স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে আসছিল ভুভুজেলার আওয়াজ। সাকিবদের সংকটের দিনে সে শব্দও খুবই বিদঘুটে শোনাচ্ছিল। পুরো গ্যালারি তখন শোকে বিহ্বল। টাইগাররা ব্যাটিংয়ে নামার সঙ্গে প্রাণ ফিরে আসে গ্যালারিতে। প্রথম ৫ ওভারে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫১ রান করেন টাইগাররা। উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে পুরো স্টেডিয়াম। কিন্তু ৫৬ রানের মাথায় ইমরুল ২৯ বলে ৩৪ রান করে আউট হয়ে গেলে বাংলাদেশের ইনিংসও কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে। তারপর জুনায়েদ সিদ্দিকের সঙ্গে তামিম ৭৩ রানের জুটি গড়ে পাহাড় টপকে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান। সেই স্বপ্নে বাড়তি রঙ ঢেলে দেয় অধিনায়ক সাকিবের সঙ্গে তামিমের গড়া ৫৯ রানের পার্টনারশিপটি। তবে ১৮৮ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৭০ রান করে তামিম আউট হয়ে গেলে দেশবাসীর স্বপ্নও অনেকটা ফেকাসে হয়ে যায়। স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো গ্যালারি। মুনাফ প্যাটেলের বলে দুর্দান্ত একটি ক্যাচ ধরে যুবরাজ সিং তামিমকে ফিরিয়ে দেন। স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন জুনায়েদ। তবে এ আউটটি ঘিরে বাতাসে বিতর্কের গন্ধ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। কেননা ক্রিকেটে সব সময় ফিফটি ফিফটি সুযোগ তৈরি হলে তা ব্যাটসম্যানের পক্ষেই যায়। কিন্তু কাল হলো তার উল্টো। টাইগাররা শেষ পর্যন্ত লড়াই করে দেখিয়ে দিলেন, দুর্গম গিরি হলেও বুকে সাহস থাকলে তা টপকানো অসম্ভব নয়। সাকিব যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন ততক্ষণ তো বাংলাদেশের আশা ছিলই। ৫৫ রানে সাকিব আউট হয়ে যাওয়ার পড়েই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। তবে ৮৭ রানের এই হারেই টাইগারদের সব সম্ভাবনা কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি। বাকি ম্যাচগুলোতে সাকিবরা কেমন করেন তা দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী। 

শ্রীশান্তের দুঃস্বপ্ন!


ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়নি। গত বিশ্বকাপের মতো এবার আর ভারতকে বধ করা যায়নি। কিন্তু তাতে কী! টাইগাররা ভারতকে জবাবটা মন্দ দেয়নি। অন্তত তুলোধুনো তো করেছে ভারতের আগ্রাসী বোলার শ্রীশান্তকে। আর বেচারা ধোনি তো তাতে ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন। আর কী চাই!
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরমেন্সে হতাশ হয়েছেন, এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিংনির্ভর দলের বিপক্ষে শুরুতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তটা না নিলে ফলাফলটা হয়তো অন্য রকমও হতে পারত। আমাদের ব্যাটসম্যানরা এমন আশা বেশ ভালোভাবেই জাগিয়ে তুলেছিলেন। আর গতকালকের নখ-দন্তহীন বোলিং আক্রমণ মাশরাফির অনুপস্থিতিটা বারবারই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।
তবে ৮৭ রানের হার দিয়ে শুরু হলেও প্রাপ্তিটা কিন্তু একেবারেই কম না টাইগারদের। ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপের যে উত্তেজনা তাতে অন্তত পানি ঢেলে দেননি ইমরুল-তামিম-সাকিবরা। বরং বাংলাদেশের আপামর ক্রিকেটপাগল মানুষকে অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হলেও আনন্দে মাতিয়েছিলেন তারা। বিশেষত ইমরুল কায়েস।
উপলক্ষটা করে দিয়েছিলেন শ্রীশান্ত। মাঠের উগ্র আচরণের কারণে হয়তো শুরু থেকেই ভারতীয় এই ফাস্ট বোলারের ওপর আলাদাভাবেই কিছুটা ক্ষুব্ধ ছিল বাংলাদেশ সমর্থকেরা। যেন টাইগাররা শুধু শ্রীশান্তকে উড়িয়ে দিতে পেরেছে বলেই আলাদাভাবে খুশি বাংলাদেশের মানুষ। মাত্র পাঁচ ওভার বল করে বেচারা শ্রীশান্ত দিয়েছেন ৫৭ রান।
ইনিংসের প্রথম ওভারে বল করতে আসলেন শ্রীশান্ত। একটা চারসহ সেই ওভারে তামিম নিলেন আট রান। শ্রীশান্ত দ্বিতীয় ওভারে মুখোমুখি হলেন ইমরুল কায়েসের। এই ওভার থেকেও এল আট রান। তবে এবার দুটাই চার। কিন্তু শ্রীশান্তের তৃতীয় ওভারটা রীতিমতো দুঃস্বপ্নে পরিণত করলেন ইমরুল। শুরুতেই একটা সিঙ্গেল নিয়ে ইমরুলকে স্ট্রাইকে পাঠালেন তামিম। দ্বিতীয় বলেই চার। তৃতীয় বলে স্কোয়ার লেগ দিয়ে আবারও বল চলে গেল সীমানার বাইরে। আম্পায়ার নো বলের ইশারা করতেই দর্শকদের উল্লাস আরও বেড়ে গেল। ফ্রি-হিট। এবার আরও হাত খুলে ব্যাট চালালেন ইমরুল। সেই স্কোয়ার লেগ দিয়ে আবারও চার। দর্শকেরা যেন প্রায় ফেটে পড়ল উল্লাসে। ওভারের পঞ্চম বলটা ইমরুল খেললেন রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে। কোনো রান হলো না। এবার টিভি স্ক্রিনে শ্রীশান্তকে একপলক দেখা যেতেই মাশরাফির বাক্য ধার করে এক দর্শককে বলতে শোনা গেল, ‘দাঁড়া, ধরে দেবানি!’ এই কথার মান রাখতেই বোধহয় পরের বলটা আবারও সীমানার বাইরে পাঠালেন ইমরুল। চার! শ্রীশান্ত যে রীতিমতো নাজেহাল হয়ে পড়েছেন, তার প্রমাণ পাওয়া গেল পরের বলটায়। বলটা ডেলিভারি দিলেন উইকেটের প্রায় বাইরে দিয়ে। এত বড় ওয়াইড, যে উইকেটরক্ষক ধোনি অনেক চেষ্টা করেও বলটা আটকাতে পারলেন না। ওয়াইড বলে আবারও চার। ওভারের শেষ বলটাও যদি সীমানার বাইরে যেত, তাহলে বোধহয় ষোলকলা পূর্ণ হতো। কিন্তু এবার শুধু এক রান। ওই ওভার থেকে এসেছিল মোট ২৪ রান। ধোনি পরবর্তী ওভারে আর শ্রীশান্তের হাতে বল তুলে দেওয়ার সাহস দেখালেন না। তিন ওভারে ৪০ রান দিয়ে প্রথম স্পেল শেষ করলেন ভারতীয় এই ফাস্ট বোলার।
ইমরুল আউট হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় স্পেলে আরও দুই ওভার বল করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবারও তাঁকে খুব বেশি স্বস্তিতে থাকতে দিলেন না তামিম আর সাকিব। একটা চারসহ ওই দুই ওভার থেকে বাংলাদেশের অধিনায়ক আর সহ-অধিনায়ক নিলেন ১৭ রান। পরে আর শ্রীশান্তের হাতে বল তুলে দেননি ধোনি। ভারতের বিশ্বকাপ মিশন জয় দিয়ে শুরু হলেও শ্রীশান্তের স্বপ্নে বোধহয় বেশ কিছুদিন হানা দিতে পারে ইমরুল, সাকিব, তামিমদের ব্যাট। দুঃস্বপ্ন হয়ে!

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে


শেবাগের ১৭৫
 শেবাগের সর্বোচ্চ রান, আগের সর্বোচ্চ ১৪৬ (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, রাজকোট, ২০০৯)।
 বাংলাদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ ইনিংস। আগের সর্বোচ্চ ১৪১, টেন্ডুলকার, ভারত-অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯৮।
 মিরপুরে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। আগের সর্বোচ্চ অপরাজিত ১২৯, সালমান বাট, পাকিস্তান-ভারত, ২০০৮।
 বাংলাদেশের বিপক্ষে ২য় সর্বোচ্চ, সর্বোচ্চ ১৯৪*, চার্লস কভেন্ট্রি, জিম্বাবুয়ে, ২০০৯।
 শেবাগের ১৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।
 বিশ্বকাপে শেবাগের ২য় সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম।

ভারতের ৩৭০
 বাংলাদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ রান
 বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের সর্বোচ্চ
 বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের সর্বোচ্চ রান
 ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩য় সর্বোচ্চ
 বাংলাদেশের মাটিতে তিন শ পেরোনো ১৫তম স্কোর।

কোহলির ১০০*
 ওয়ানডেতে ভারতীয় ব্যাটসম্যানের পঞ্চম সেঞ্চুরি।
 বাংলাদেশের বিপক্ষে কোহলির দ্বিতীয় সেঞ্চুরি (আগেরটিও ছিল মিরপুরে)।

২০৩ রানের জুটি
 শেবাগ-কোহলির ২০৩ রানের জুটি তৃতীয় উইকেটে মিরপুরে সর্বোচ্চ (আগের রেকর্ড ১৩০*, আশরাফুল-নাফিসের, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০০৮)।
 বিশ্বকাপে যেকোনো উইকেটে অষ্টম সেরা।
 বিশ্বকাপে তৃতীয় উইকেট জুটিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সেরা টেন্ডুলকার-দ্রাবিড়ের অপরাজিত ২৩৭ (কেনিয়ার বিপক্ষে, ১৯৯৯)।
 বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো জুটিতে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান।
 বাংলাদেশের মাটিতে ৫ম ও মিরপুরের ৪র্থ সর্বোচ্চ জুটি।

Saturday, February 19, 2011

উত্সবের সাজে উত্তাল বাংলাদেশ


‘এখানে এসেছি বিশ্বকাপের আনন্দমুখর পরিবেশের স্বাদ নিতে। দুই দিন লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও উদ্বোধনী ম্যাচটার টিকিট পাইনি। তাই আমার জন্য বিশ্বকাপ উপভোগের এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়।’ কথাগুলো বলছিলেন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বিপুল সরকার। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে শুভকামনা জানাতে আরও অনেকের মতো তিনিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন সকালেই চলে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। টিকিট পাওয়া নিয়ে আক্ষেপ না করে হাজারও মানুষ এভাবেই খুঁজে নিয়েছে আনন্দের উপলক্ষ। মেতে উঠেছে ক্রিকেটের আনন্দে।
শুধু আজ সকালেই না। ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের দশম আসরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনটা হয়ে যাওয়ার পরপরই নেচে উঠেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপাগল মানুষ। বিশ্বকাপ উপলক্ষে পুরো ঢাকাই সেজেছে উত্সবের সাজে। বর্ণিল আলোকসজ্জায় ঝলমল করছে চারদিক। গতকাল শুক্রবার রাতেও ঢাকার কিছুটা ফাঁকা রাস্তায় মাঝেমধ্যে দেখা গেছে বাংলাদেশের পতাকা বা বিশ্বকাপ ‘ট্রফি’ হাতে উল্লসিত তরুণদের। অনেকেই বলেছে, ক্রিকেট বিশ্বকাপটা এবার বাংলাদেশের জন্য একেবারেই নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা। গার্মেন্টস মার্চেন্ডাইজার শফিউল ইসলামের ভাষায়, ‘আমি ২২ বছর ধরে ঢাকায় আছি। কিন্তু কখনোই এই শহরের এত বর্ণিল, প্রাণবন্ত চেহারা দেখিনি।’
আজ বেলা আড়াইটায় বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যে সৌভাগ্যবানেরা সরাসরি মাঠে বসে এই মহারণটা দেখার সুযোগ পাবে, তাদের আনন্দ তো বোধহয় ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আর যারা টিকিট পায়নি, তারাও কোনো না কোনোভাবে অংশ হতে চাইছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এই মাহেন্দ্রক্ষণের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নীলিমা রায় বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই বিরল একটা মুহূর্ত। আমি এটা কোনোভাবেই হারাতে চাইনি। সে জন্য আমি সকালেই চলে এসেছি স্টেডিয়ামে।’ খেলা চলার সময় মাঠে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পেয়েছেন আবদুল আজিজ। এ দায়িত্বটা পেয়ে নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘ সত্যিই আজ আমাদের জন্য বিশেষ একটা দিন। আমি জানি না, আমার জীবদ্দশায় এ রকম অভিজ্ঞতা আর কখনো হবে কি না।’ রয়টার্স।

Thursday, February 17, 2011


বিশ্বকাপের আসর মাতালেন যাঁরা


দেশের সেরা শিল্পীদের পাশাপাশি কানাডা, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনায় বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হলো। সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে ছায়ানটের শিল্পীদের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এর পরই জুলফিকার রাসেলের কথায় বিশ্বকাপের স্বাগত ‘ও পৃথিবী এবার এসো...বাংলাদেশ নাও চিনে, ও পৃথিবী...তোমায় স্বাগত জানাই এই দিনে...গানটি গেয়ে শোনান ইবরার টিপু, বালাম, অর্ণব, মিলা, কণা ও এলিটা। গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা দুটোই করেছেন ইবরার টিপু। ইবরার টিপুর গানের পরই ১৪টি দেশের অধিনায়ককে সামনে রেখে ভারতের জনপ্রিয় শিল্পী সনু নিগম পরিবেশন করেন ‘লেটস গো ফর গ্লোরি’ গানটি।
স্বাগত সংগীতের পরই বেশ কিছুক্ষণ চলে বক্তৃতা পর্ব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণার পরপরই শুরু হয় তিন দেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যগত বিষয়গুলোর ওপর প্রামাণ্যচিত্র। তিন দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো প্রাধান্য পায় এসব প্রামাণ্যচিত্রে।
ভারত ও শ্রীলঙ্কার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির নানা পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি গেয়ে শোনান ‘উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম’, ‘ও আমার রসিয়া বন্ধু রে’ এবং ‘একটি বাংলাদেশ’। সাবিনার গান শেষ হতে না হতেই মঞ্চে আসেন ফোক সম্রাজ্ঞি খ্যাত শিল্পী মমতাজ বেগম। তিনি ‘মরার কোকিলে’ ‘খায়রুন লো’, এবং ‘নান্টু ঘটক’—এই তিনটি গান গেয়ে শোনান। আর সবশেষে মঞ্চে আসেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা। তাঁর পরিবেশনায় ছিল ‘শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাব’ এবং ‘দমাদম মাস্ত কালান্দার’ গানগুলো। এঁদের পরিবেশনা স্টেডিয়ামভর্তি দর্শক প্রাণভরে উপভোগ করেন। সাবিনা-রুনা-মমতাজের গানের পরই বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ওপর একটি চমত্কার প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসী বাংলাদেশের রূপবৈচিত্র ও লড়াই-সংগ্রামের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে। এতে প্রাধান্য পায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, নববর্ষসহ বিভিন্ন উত্সব এবং চাকমা, রাখাইন, মারমা, সাঁওতাল, গারোদের সংস্কৃতিসহ আরও অনেক কিছু।
প্রামাণ্যচিত্রের পর মঞ্চে আসেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ কানাডার রকশিল্পী ব্রায়ান অ্যাডামস। তিনি পরিবেশন করেন ‘সামার ৬৯’সহ জনপ্রিয় আরও দুটি গান। সবশেষে বিশ্বকাপের থিম সং ‘আরও জোরে সবার আগে, চতুর্পার্শ্বে ক্রিকেট তাপে চার-ছক্কা মাঠ পেরিয়ে, খেলছে দ্যাখো দামাল ছেলে। পেরিয়ে বাধা, ঘূর্ণি ধাঁধা কিংবা গতির তুমুল কোনো ঝড়/বাতাস কেটে, তুমুল বেগে, হাজার উল্লাসে জয়ের নিশান গড়ো, মারো ঘুরিয়ে, জিতবে এবার জিতবে ক্রিকেট।’ গানটির পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান।
গানটি গেয়েছেন রাঘব চ্যাটার্জি। সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন শংকর-এহসান-লয়। গানটির গীতিকার বাংলাদেশের শেখ রানা।
পুরো কোরিওগ্রাফি পরিচালনা করেন ভারতের কোরিওগ্রাফার সন্তোষ শেঠজি।
বাংলাদেশ পর্ব পরিচালনা করেন নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ ও শামীম আরা নিপা।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিল উইজ ক্রাফট ও বাংলাদেশের এশিয়াটিক ইভেন্ট।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বর্ণিল উদ্বোধন


সুরের ঝংকার ও আতশবাজির ঝলকানির মধ্য দিয়ে পর্দা উঠল বিশ্বকাপের দশম আসরের। স্বাগতিক দেশগুলোর শিল্প-সংস্কৃতির অনন্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই প্রতিযোগিতা। সঙ্গে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে দর্শকদের মনোরঞ্জন করেছেন কানাডার রকশিল্পী ব্রায়ান অ্যাডামস। আর শঙ্কর-এহসান-লয়—সবাইকে নতুন উদ্দীপনায় জাগিয়েছেন বিশ্বকাপের থিম সং (মার ঘুরিয়ে) দিয়ে।
সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় শুরু হয় দশম বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। ছায়ানটের শিল্পীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার পরপরই মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংগীতের পর এবারের বিশ্বকাপের স্বাগত সংগীত পরিবেশন করেন ইবরার টিপুর নেতৃত্বে বালাম, অর্ণব, মিলা, এলিটা, কনাসহ আরও অনেকে। এরপর বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বাহন রিকশায় চড়ে মূল মঞ্চে আসেন বিশ্বকাপের ১৪ অধিনায়ক। এ সময় তাঁরা হাত নেড়ে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের অভিবাদন জানান। ভারতের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী সনু নিগমের ‘লেটস গো ফর গ্লোরি’ শিরোনামের পরিবেশনা ছিল পরবর্তী আকর্ষণ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও আইসিসির সভাপতি শারদ পাওয়ারের স্বাগত বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
স্বাগতিক দেশগুলোর শিল্পীদের পরিবেশনার শুরুতে মঞ্চে আসেন ভারতীয় কলাকুশলীরা। তাঁদের পরিবেশনা ‘ম্যাগনিফিসেন্ট ইন্ডিয়া’য় চমত্কারভাবে প্রতিফলিত হয়েছে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের সংস্কৃতি। তাঁদের এই অসাধারণ পরিবেশনার রেশ ফুরাতে না ফুরাতেই মঞ্চে আসেন শ্রীলঙ্কান শিল্পীরা। ‘অ্যামেজিং শ্রীলঙ্কা’ নামের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে তাঁরা দর্শকদের নিয়ে যান স্বপ্নের জগতে। এর পরই আসে বাংলাদেশের পালা। একে একে মঞ্চে আসেন সাবিনা ইয়াসমিন, মমতাজ ও রুনা লায়লা। দেশের সংগীতজগতের প্রধান এই তিন শিল্পী উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন সুরের মূর্ছনায়। এরপর দেশবরেণ্য নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আরা নিপার নেতৃত্বে নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। নাচের তালে তালে তাঁরা চমত্কারভাবে তুলে ধরেন বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে এরপর মঞ্চে আসেন কানাডার রকশিল্পী ব্রায়ান অ্যাডামস। একে একে গেয়ে শোনান ‘সামার ৬৯’সহ আরও তিনটি গান। সবশেষে বিশ্বকাপের থিম সং ‘দে ঘুমাকে/মার ঘুরিয়ে’ গানটির পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। পুরো সময়ই আতশবাজির ঝলকানি দর্শকদের মুগ্ধ করে রাখে।

Sunday, February 13, 2011

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি টাইগারদের কাছে ধরাশায়ী কানাডা


অঘটন না ঘটলে বিশ্বকাপে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। প্রস্তুতি ম্যাচেই তাই যেন আট বছর আগের হিসাবটা চুকিয়ে নিল টাইগাররা। চট্টগ্রামে আজ অনুষ্ঠিত দিবা-রাত্রির খেলায় কানাডাকে বাংলাদেশের কাছে হার মানতে হয়েছে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
কানাডার আত্মবিশ্বাস বলতে ছিল ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারানোর সুখস্মৃতি। কিন্তু সেই দিন যে এখন আর নেই, তা প্রমাণ করে দিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। বাংলাদেশের বোলারদের ঝড়ে কবলে পড়ে কানাডার ইনিংস শেষ হয় মাত্র ৩৭.৩ ওভারে, ১১২ রানে। জবাবে তামিম ইকবালের হাফ সেঞ্চুরিতে মাত্র একটি উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
লক্ষ্যটা সহজ, মাত্র ১১৩ রান। এ সহজ যাত্রায় বাংলাদেশকে বেগ পেতে হয়নি একটুও। তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ১০৬ রান। ব্যক্তিগত ৬৯ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম। কিন্তু কায়েসকে ফেরাতে পারেননি কানাডার বোলাররা। বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে নিয়ে এই ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ৩৯ রানে। সঙ্গে ১ রানে অপরাজিত থাকেন জুনায়েদ।
শুরু থেকেই ভাগ্য সহায় ছিল বাংলাদেশের। টসে জিতে সাকিব আল হাসান ফিল্ডিং নেন। প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নিয়ে অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেন শফিউল ইসলাম। এর পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে কানাডার। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করেন অধিনায়ক সাকিব। দুটি করে উইকেট নেন শফিউল, মাহমুদউল্লাহ ও রুবেল হোসেন।

Wednesday, February 9, 2011

দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারলে বড় কিছু নয় কেন: সাকিব


এবারের বিশ্বকাপ আসরের কনিষ্ঠতম অধিনায়ক তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আসা সাকিব আল হাসানের দিকে দেশ-বিদেশের সাংবাদিকদের উত্সুক চোখে তাকিয়ে থাকার কারণ তাঁর বয়স নয়। কারণ, প্রাক-বিশ্বকাপ সংবাদ সম্মেলনে আসা প্রথম অধিনায়ক সাকিব।
বয়সে একবারেই তরুণ, চব্বিশে পা দেবেন আগামী মাসে। তবে সাকিব নিজেকে উপস্থাপন করেছেন ‘পরিপূর্ণ’ একজন অধিনায়ক হিসেবেই। উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণকে সামলেছেন কৌশলে।
বিশ্বকাপে দলের লক্ষ্য কী? সামনে অধিনায়ককে পেলে সবার মাথায় এ প্রশ্নটিই ঘুরপাক খাওয়ার কথা। তবে সরাসরি নিজেদের লক্ষ্যটা প্রকাশ করেননি সাকিব। ‘বিশেষ টার্গেট নেই। প্রথম ম্যাচের অপেক্ষায় আছি আমরা। এক-দেড় বছর ধরে ভালো ক্রিকেট খেলছি। দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারলে বড় কিছু নয় কেন’—বলেছেন টাইগারদের অধিনায়ক।
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। সমর্থকের প্রত্যাশাটা ‘চাপ’ হয়ে দাঁড়াবে না তো? চাপ নয়, সাকিব বরং এটিকে ‘বোনাস’ হিসেবেই দেখছেন, ‘আমরা এটিকে বোনাস হিসেবেই দেখছি। কন্ডিশন জানা। অনুশীলন ক্যাম্প ভালো হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ না হয় বাদ দিলাম। কিন্তু অধিনায়কত্বের চাপটা কীভাবে সামলাবেন? এ প্রশ্নেও কৌশলী সাকিব, ‘অধিনায়কত্ব কখনো সমস্যা মনে হয় না। ড্রেসিং রুমে আগের মতোই আছি আমি।’

সপ্তাহে পাঁচটি করে সাবান খান তিনি


প্রতি দিন সাবান খান তিনি। সপ্তাহে গায়ে মাখার অন্তত গোটা পাঁচেক সাবান লাগে তাঁর। এ ছাড়া মুঠি মুঠি কাপড় ধোয়ার গুঁড়ো সাবান তো আছেই। চিকিৎসকেরা এরই মধ্যে তাঁকে সতর্ক করেছেন, সাবান খাওয়ার খেসারত হিসেবে প্রাণ যেতে পারে। এর পরও কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই তাঁর। সাবান খাওয়া চলছেই।
সাবান খাওয়ার বাতিকে ভোগা ১৯ বছরের এই তরুণীর নাম টেম্পেস্ট হেনডারসন। বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। গুঁড়ো সাবান চেখে দেখার মধ্য দিয়ে তাঁর সাবান খাওয়া শুরু। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রথম যেদিন গুঁড়ো সাবান খেলাম, ওই দিনটির কথা এখনো বেশ মনে পড়ে। প্রথমে আঙুলে একটুখানি গুঁড়ো সাবান নিয়ে স্বাদ নিলাম। দেখলাম, নোনতা নোনতা মজার স্বাদ, যা ভালো লেগে গেল। এর পর থেকে সাবান খেতে শুরু করলাম।’
সেবিকা হওয়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন টেম্পেস্ট হেনডারসন। তিনি জানান, সাবান খাওয়ার পরিণতি যে মারাত্মক হতে পারে, তা তিনি জানেন। তার পরও এই অভ্যাস ছাড়তে পারছেন না। রোজ সকাল থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত কয়েক দফায় চলে তাঁর এই সাবান ভক্ষণ।
টেম্পেস্ট বলেন, ‘স্নান করার সময় সাবানের ফেনা খাই। আরও খাই গুঁড়ো সাবান। এ ছাড়া এক টুকরো সাবান মুখে পুরে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চুষতে থাকি।’
চিকিৎসকদের মতে, টেম্পেস্ট ‘পাইকা’ নামে এক ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত। এই সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা অস্বাভাবিক খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, যা প্রচলিত নয় এবং এসব খাবারে পুষ্টি বলে কিছু নেই। আক্রান্ত ব্যক্তিরা ধাতব মুদ্রা, চক, ব্যাটারি ও টুথব্রাশের মতো অখাদ্যে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে খনিজ উপাদানের ঘাটতি থেকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনেক সন্তানসম্ভবা নারীকে গর্ভকালীন কয়লা খেতে দেখা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব নারী তখনই কয়লা খান, যখন তাঁদের শরীরে লৌহ উপাদানের ঘটতি দেখা দেয়।
টেম্পেস্টের বেলায় শারীরিক কোনো পুষ্টির ঘাটতি রয়েছে মনে করছেন না চিকিৎসকেরা। মানসিক অবসাদ থেকে তাঁর এই ক্ষতিকর অভ্যাসটি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা। টেম্পেস্ট অবশ্য মানসিক অবসাদে ভোগার কথা স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেন, ‘বন্ধু জেসনের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হওয়ার পর থেকে তিনি সত্যিই অবসাদে ভুগছেন।’ ডেইলি মেইল অনলাইন।

Tuesday, February 8, 2011

পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা এখন দিশেহারা


‘আপনারা আমার বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে একটি গুলি করেন। আমি মরতে চাই। আমি শেষ হয়ে গেছি। এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে মরাই ভালো।’ আজ সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল ভবনের সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে এমন আকুতি করেন একজন বিনিয়োগকারী।
শুধু ওই বিনিয়োগকারীই নন, তাঁর মতো পুঁজি হারিয়ে আরও অনেকে এখন দিশেহারা। অনেকে শুরু করেন অস্বাভাবিক আচরণ। এক বিনিয়োগকারী সড়ক দ্বীপে থাকা একটি সাইনবোর্ড ভেঙে নিয়ে সেখানে কর্তব্যরত ক্যামেরাম্যানদের দিকে তেড়ে আসেন। এ সময় সেখানে অবস্থান করা বেশ কয়েকজন লোক তাঁর কাছ থেকে সাইনবোর্ডটি কেড়ে নেন। অনেককে আবার পুঁজি হারিয়ে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। অনেকে জুতা মিছিল করেন। কেউ কেউ আবার সড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত ডিএসইর সামনের সড়কে আজ সারা দিনই ছিল এমন চিত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রধান বিরোধী দলের ডাকা হরতালের দিনে আজ কোরাম পূর্ণ হওয়ায় বেলা ১১টায় ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয়। গত দুই দিনের মতো আজও দরপতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় লেনদেন। পাঁচ মিনিটে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ২৩৭ পয়েন্ট নেমে যায়। এরপর সূচক ঘুরে দাঁড়ালেও ১১টা ৫০ মিনিটের পর থেকে আবার পতন শুরু হয়, যা সারা দিনই অব্যাহত থাকে। তবে দুপুর একটার দিকে সূচক প্রায় ২৮০ পয়েন্ট পড়ে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা রাজপথে নেমে আসেন। প্রথমে সংখ্যা কম থাকলেও কিছুক্ষণের মধ্যে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস থেকে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নামেন। তাঁরা ডিএসইর সামনের সড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েকদফা ইট নিক্ষেপ করেন। তাঁরা অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ এসইসির চেয়ারম্যান ও ডিএসইর প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। ওই সব ব্যক্তির পদত্যাগেরও দাবি করেন তাঁরা। বেশ কিছু বিনিয়োগকারী খালি গায়ে মিছিল করেন। একপর্যায়ে কিছু বিনিয়োগকারীকে সেখানে জুতা মিছিলও বের করতে দেখা যায়। দুপুর দুইটার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারী মতিঝিলের জীবনবিমা টাওয়ারের (এসইসির কার্যালয়) নিচতলায় কাচ ভাঙচুর করেন। এ সময় চার/পাঁচটি যানও ভাঙচুর করা হয়।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মতিঝিল শাপলা চত্বরের পাশে অবস্থিত আইএফআইসি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং ডিএসই ভবনের বিপরীত পাশের জনতা ব্যাংকের অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে কাচ ভাঙচুর করেন বিনিয়োগকারীরা। এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিলে বিনিয়োগকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করেন। এ ছাড়া কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসেও ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়।
প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বেলা পৌনে চারটার দিকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাজার পরিস্থিতি: আজ দিন শেষে ডিএসইতে সাধারণ মূল্যসূচক ৩২৪ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৩৯৪ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হওয়া ২৫৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১২টির, কমেছে ২৪১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। আজ স্টক এক্সচেঞ্জটিতে ৬০৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। গতকালও স্টক এক্সচেঞ্জটিতে ৪০৬ পয়েন্ট পতন হয়।
আজ ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইউসিবিএল, গ্রামীণফোন, এনবিএল, বেক্সিমকো, তিতাস গ্যাস, এবি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ও সাইথইস্ট ব্যাংক।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) আজ দরপতন হয়েছে। সিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক আজ ৭৮৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট কমে ১৮৪২৯ দশমিক ১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ছয়টির, কমেছে ১৮০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। আজ স্টক এক্সচেঞ্জটিতে ৮৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

সংবাদপত্রের সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী


সংবাদপত্রের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মন্ত্রীদের সমালোচনা হচ্ছে বা হবে, এটা ঠিক। তবে পত্রিকাগুলো অনেক সময়ই অসত্য, বানোয়াট তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে। এর প্রতিকার হওয়া উচিত।
আজ সোমবার রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রীর সমালোচনা করবেন, এটা সাংবিধানিক অধিকার, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পত্রিকাগুলো যখন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করে তখন এর প্রতিকার কী হবে। আপনিও যে আজকের অবস্থায় পড়বেন না, তারই বা নিশ্চয়তা কী? কাল যখন আপনি এ অবস্থায় পড়বেন তখন কী হবে, এটা ভেবে দেখা উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যোগাযোগসচিব আমার কাছে কোনো চিঠি পাঠাননি। আইন অনুসারে তিনি এটা পাঠাতে পারেন না। মন্ত্রী আমার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। আজ এটি আমি দেখেছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাইল যাওয়ার আগেই গণমাধ্যমে কীভাবে তা যায়, এর রহস্যও জানা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘একটি পত্রিকা সম্পাদকীয় লিখে ফেলল, আমি নাকি হলিডে কাটাতে গেছি, আয়েশ করতে গেছি। অথচ আমি যুক্তরাজ্য পৌঁছে কর্মব্যস্ত সময় কাটিয়েছি। সেখানে গিয়ে আমি দুই ঘণ্টাও বিশ্রাম পেলাম না। সেখানকার প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আমাকে কাজ করতে হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের এ পর্যায়ে মাগরিবের নামাজের বিরতি হয়। এরপর অধিবেশন শুরু হলে তোফায়েল আহমেদ পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর চান। কিন্তু স্পিকার তাঁকে ফ্লোর না দিয়ে বলেন, এ বিষয়ের ওপর আলোচনার আর কোনো সুযোগ নেই। তোফায়েল আহমেদ তখন কিছু না বলে বসে পড়েন।
এ সময় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সদস্যরা একযোগে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠি নিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে কৌশলে বক্তব্য দেন।
সরকারি দলের সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সংসদ নেতার বক্তব্যের পর আলোচনা শেষ হয়ে যায়, এটা ঠিক। স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সবার মুখ খুলে দেন। শত ফুল ফুটতে দিতে হবে।’
আওয়ামী লীগের আবদুল মতিন খসরু বলেন, উচ্চ আদালতের রায়েই পরিষ্কারভাবে সাংসদদের মর্যাদা ঠিক করা রয়েছে। সাংসদ হলেন দেশের মালিক জনগণের প্রতিনিধি। আর আমলারা হলেন জনগণের কর্মচারীদের প্রতিনিধি। জনগণকে অপমান বা অবমূল্যায়ন করার সুযোগ কারও নেই।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মাঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, সংসদ বোবা এবং বধিরদের জায়গা নয়। তিনি সাংসদদের কথা বলতে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সংসদে আজ ইশান কোণে মেঘ দেখছি। এটি ভালো লক্ষণ নয়।’ তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা কোথাও ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুসারে সাংসদদের ওপর নন। কিন্তু তা নিয়ে আজ প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল আসে না, আমাদের সংসদে কথা বলতে দেন। ওনারা আসুক বা না আসুক, আমাদের কথায় মানুষের কথার প্রতিধ্বনি থাকবে। নইলে এ সংসদে মানুষের কথার প্রতিধ্বনি হবে না।’
এ সময় সংসদে সভাপতিত্বকারী ডেপুটি স্পিকার বিষয়টি সংসদীয় দলের সভায় উত্থাপন করার পরামর্শ দেন।
স্বতন্ত্র সাংসদ ফজলুল আজিম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যের পক্ষে সংসদের সবাই ছিলেন। কিন্তু আজ সেই প্রবীণ সদস্যের ব্যাপারে একজন সচিব যে কাজ করেছেন, তা অমর্যাদাকর। অধিকার ক্ষুণ্নের কথা যদি সংসদে বলতে না পারি, তাহলে কী হবে। সংসদ থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিরোধী দলের মতো কি হরতাল করব?’ তিনি বলেন, ‘অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমরা শুদ্ধ হচ্ছি না, ক্রমশ ড্রেনের দিকে যাচ্ছি। বিরোধী দলকে আশ্বাস দিচ্ছেন সংসদে এলে সব কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু এখন সরকারি দলই সে সুযোগ পাচ্ছে না।’
এর আগে এ বিষয়ে রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের সময় সরকারি দলের সাংসদেরা টেবিল চাপড়ে তাঁকে সমর্থন জানান। আরও কয়েকজন সাংসদ তখন ফ্লোর চাইলে প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে বক্তৃৃতা দিতে শুরু করেন।

Wednesday, February 2, 2011

ফেসবুকের তথ্য নিরাপত্তায় ৫ টিপস


ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৫০০ মিলিয়ন

ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই আজকাল বেশ চিন্তিত। যেকোনো মুহূর্তে হ্যাকারা ঢুকে পড়তে পারে আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে, নিয়ে নিতে পারে ছবি কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য। তারপর কেবলই হয়রানি। এ রকম আরও কত দুঃশ্চিন্তা!
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এ ধরনের দুঃশ্চিন্তা দূর করতে তথ্যপ্রযুক্তিবিদেরা কাজ করে যাচ্ছেন। ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাঁচটি কৌশল আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। তো আর দেরি কেন; জেনে নিন নিরাপত্তার সেই কৌশলগুলো।

এক. ব্যক্তিগত গোপন (প্রাইভেসি) সেটিং সম্পর্কে জানা
আপনি দীর্ঘদিন ফেসবুক ব্যবহার করলেও নিজের গোপন সেটিং সম্পর্কে ধারণা না-ও থাকতে পারে। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কখনো এই অপশনটিতে প্রবেশ করেননি। কিন্তু ফেসবুকে নিজের তথ্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোপন সেটিং সম্পর্কে জানা জরুরি।
এ জন্য প্রথমেই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে হবে। এরপর ওপরে ডান দিকে অ্যাকাউন্ট মেন্যুতে ক্লিক করে প্রাইভেসি সেটিংয়ে আবার ক্লিক করতে হবে। প্রাইভেসি সেটিং পেজটি এলে সেটিং টেবিল থেকে কাস্টমাইজ সেটিংয়ে ক্লিক করতে হবে। এখন নির্ধারণ করুন, বন্ধু, বন্ধুর বন্ধু অথবা সবার সঙ্গে কী কী এবং কোন কোন তথ্য আপনি শেয়ার করতে চান অথবা চান না।
এখানেই শেষ নয়। এরপর ভিউ সেটিংয়ে ক্লিক করুন। এখন দেখতে পাবেন অন্যরা আপনার ফেসবুকের পেজটি কেমন দেখতে পাবেন। এভাবে নিজের কোন ধরনের তথ্য আপনি শেয়ার করতে চান, তা সহজেই নির্ধারণ করতে পারবেন।

দুই. কী তথ্য পোস্ট করছেন, তা ভালোভাবে দেখা
ফেসবুকে আপনি ইচ্ছামতো মনের কথা, কবিতা-গল্প-গানের লাইন, তথ্য পোস্ট করতে পারেন। পোস্টের লেখা দেখতে পাবে আপনার ফেসবুক বন্ধুরা। আপনি হতে পারেন যেকোনো মানুষের বন্ধু। যাঁকে হয়তো কখনো চোখে দেখেননি, এমন মানুষেরও। ডিজিটাল যুগে এ ধরনের অনেক কিছুই সম্ভব। তবে কিছু বিষয় থাকে একান্তই গোপনীয়। তাই আপনি কী তথ্য পোস্ট করছেন, সেটা ভালোভাবে দেখে তারপর পোস্ট করা উচিত। তাই নিজের তথ্যের নিরাপত্তার প্রথম বিষয় হচ্ছে কী তথ্য পোস্ট করছি, সেটা ভালোভাবে ভেবে-চিন্তে পোস্ট করা।

তিন. তৃতীয় পক্ষের অ্যাপলিকেশন নিয়ন্ত্রণে রাখা
বিশ্বব্যাপী ফেসবুকের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপলিকেশন প্রদানের সুযোগ রয়েছে। এ ধরনের ওয়েবসাইট থেকে অনেক সময় আপনার ফেসবুক পেজে অ্যাপলিকেশন ব্যবহারের অনুরোধ আসে। ফেসবুকের পাশাপাশি অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে এ ধরনের অনুরোধ এলে ভালোভাবে না জেনে তা গ্রহণ করা ঠিক নয়। ওই অ্যাপলিকেশনের কারণে আপনি যতবার বা যতক্ষণ অনলাইনে থাকেন, তার চেয়েও বেশি সময় দেখাতে পারে। এমনকি আপনার ফেসবুক পেজেও তাঁরা প্রবেশ করতে পারেন।
যদি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনার ফেসবুক প্রাইভেসি সেটিংয়ের এডিট সেটিংয়ে ক্লিক করুন। এরপর কোন কোন অ্যাপলিকেশন ও ওয়েবসাইটকে আপনি গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ধারণ করুন। এর ফলে ওই সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলোই আপনার পেজে দেখা যাবে।

চার. নিয়মিত তথ্য কাটছাঁট করা
অনেকেই আপনাকে বন্ধু হওয়ার অনুরোধ পাঠাতে পারে। আপনি সেগুলো গ্রহণও করতে পারেন। কিন্তু যদি কেউ আপনাকে বিভিন্নভাবে বার্তা বা তথ্য দিয়ে বিরক্ত করতে থাকে কিংবা অপ্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাতে থাকে; তখন ওই বন্ধুকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়াই ভালো। তা ছাড়া মাঝেমধ্যে বন্ধুদের তালিকা হালনাগাদ করাও ভালো। এভাবে কাউকে বাদ দিলে এ জন্য ফেসবুক থেকে কোনো ধরনের বার্তা বা সতর্কতা আপনাকে পাঠাবে না। তা ছাড়া অপ্রয়োজনীয় নিজের অনেক তথ্যও বাদ দেওয়া বা মুছে ফেলা যেতে পারে। মোট কথা নিয়মিত নিজের পেজের তথ্য কাটছাঁট করা ভালো। নিজের বার্তা, বন্ধুর অনুরোধসহ অন্যান্য তথ্য নিয়মিত কাটছাঁট করলে তথ্যের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছেই থাকে।

পাঁচ. অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করে
ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলার পর কোনো কারণে যদি আর ব্যবহারের ইচ্ছা না থাকে, তবে অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করাই ভালো। তাহলে নিজের তথ্য হারানো বা অন্যের কাছে পৌঁছানোর আর কোনো আশঙ্কা থাকবে না।
অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করতে অ্যাকাউন্ট সেটিংয়ে গিয়ে একেবারে নিচের দিকে ‘ডিঅ্যাকটিভেট’ লিংকটি পাওয়া যাবে। এটিতে ক্লিক করলে আপনার অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। তবে অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হওয়া মানেই আপনার অ্যাকাউন্ট একেবারে হারিয়ে যাওয়া (ডিলিট) নয়। আপনি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট একেবারে মুছে ফেলতে চাইলে তাও করতে পারবেন। স্থায়ীভাবে অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে অ্যাকাউন্টের মধ্যে হেল্প সেন্টারে ক্লিক করতে হবে। এরপর পারমানেন্টলি ডিলিট অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। এ ছাড়া http://on.fb.me/3qsIFP এই লিংকের মাধ্যমেও সরাসরি মুছে ফেলা অপশনে যাওয়া যাবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে জয়নাল আবদিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালেদার মামলা প্রত্যাহার না হলে গণ-আন্দোলন

আড়িয়ল বিলের ঘটনায় বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার না করলে সারা দেশে গণ-আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে বিএনপি।
আজ মঙ্গলবার সংসদের মিডিয়া সেন্টারে বিএনপির সংসদীয় দল আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন এসব কথা বলেন।
সরকারকে হুঁশিয়ার করে জয়নাল আবদিন বলেন, মামলা প্রত্যাহার না হলে সারা দেশে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলবে। আড়িয়ল বিলে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের প্রতিবাদে মুন্সিগঞ্জবাসী সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন আন্দোলন করছে। যে নাশকতা ঘটেছে, তার সঙ্গে সরকারদলীয় স্থানীয় সাংসদেরা জড়িত, বিএনপি নয়। জনগণের আন্দোলনের প্রতি বিএনপির নৈতিক সমর্থন রয়েছে। জনগণের আন্দোলন বানচাল করার জন্য সাংসদেরা নিজেদের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে নাশকতা চালিয়েছেন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে জয়নাল আবেদিন বলেন, বিএনপি যখনই সংসদে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে, তখনই সরকার বিরোধী দলের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন চালাতে শুরু করে। এতে বোঝা যায়, বিরোধী দল সংসদে আসুক, সরকারই তা চায় না।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে সাংসদ নজরুল ইসলাম, এ বি এম আশরাফ উদ্দীন নিজান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, জেড আই এম মোস্তাফা আলী, শাম্মী আক্তার ও নিলুফার চৌধুরী।