‘এখানে এসেছি বিশ্বকাপের আনন্দমুখর পরিবেশের স্বাদ নিতে। দুই দিন লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও উদ্বোধনী ম্যাচটার টিকিট পাইনি। তাই আমার জন্য বিশ্বকাপ উপভোগের এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়।’ কথাগুলো বলছিলেন একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বিপুল সরকার। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে শুভকামনা জানাতে আরও অনেকের মতো তিনিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন সকালেই চলে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। টিকিট পাওয়া নিয়ে আক্ষেপ না করে হাজারও মানুষ এভাবেই খুঁজে নিয়েছে আনন্দের উপলক্ষ। মেতে উঠেছে ক্রিকেটের আনন্দে।
শুধু আজ সকালেই না। ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপের দশম আসরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনটা হয়ে যাওয়ার পরপরই নেচে উঠেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপাগল মানুষ। বিশ্বকাপ উপলক্ষে পুরো ঢাকাই সেজেছে উত্সবের সাজে। বর্ণিল আলোকসজ্জায় ঝলমল করছে চারদিক। গতকাল শুক্রবার রাতেও ঢাকার কিছুটা ফাঁকা রাস্তায় মাঝেমধ্যে দেখা গেছে বাংলাদেশের পতাকা বা বিশ্বকাপ ‘ট্রফি’ হাতে উল্লসিত তরুণদের। অনেকেই বলেছে, ক্রিকেট বিশ্বকাপটা এবার বাংলাদেশের জন্য একেবারেই নতুন ধরনের অভিজ্ঞতা। গার্মেন্টস মার্চেন্ডাইজার শফিউল ইসলামের ভাষায়, ‘আমি ২২ বছর ধরে ঢাকায় আছি। কিন্তু কখনোই এই শহরের এত বর্ণিল, প্রাণবন্ত চেহারা দেখিনি।’
আজ বেলা আড়াইটায় বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যে সৌভাগ্যবানেরা সরাসরি মাঠে বসে এই মহারণটা দেখার সুযোগ পাবে, তাদের আনন্দ তো বোধহয় ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আর যারা টিকিট পায়নি, তারাও কোনো না কোনোভাবে অংশ হতে চাইছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এই মাহেন্দ্রক্ষণের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নীলিমা রায় বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই বিরল একটা মুহূর্ত। আমি এটা কোনোভাবেই হারাতে চাইনি। সে জন্য আমি সকালেই চলে এসেছি স্টেডিয়ামে।’ খেলা চলার সময় মাঠে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পেয়েছেন আবদুল আজিজ। এ দায়িত্বটা পেয়ে নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘ সত্যিই আজ আমাদের জন্য বিশেষ একটা দিন। আমি জানি না, আমার জীবদ্দশায় এ রকম অভিজ্ঞতা আর কখনো হবে কি না।’ রয়টার্স।