Monday, January 31, 2011

পিরোজপুরে খাদ্যমন্ত্রী স্বীকার করছি এই মুহূর্তে চালের মূল্য বেশি


খাদ্য ও দুর্যোগব্যবস্থাপনা মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘স্বীকার করছি এই মুহূর্তে চালের মূল্য বেশি। এ কারণে মানুষের একটু কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু দেশে এখন কোনো দুর্ভিক্ষ নাই, খাদ্যসংকট আছে বলেও আমি মনে করি না।’ পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার পাড়েরহাট বন্দর এলাকায় স্পেনপ্রবাসীদের সহায়তায় নির্মিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্বোধনের সময় আজ রোববার তিনি এ কথা বলেন।
স্পেনপ্রবাসীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিদেশে ছিলাম, প্রবাসজীবন কত কষ্টের তা আমি জানি। আপনাদের কষ্টের টাকা দিয়ে সিডরবিধ্বস্ত এই জনপদে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই দোতলা আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। দুর্যোগের সময় এলাকাবাসী এখানে আশ্রয় নেবে। বছরের অন্য সময় এটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে কাজে লাগানো হবে।
জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত আরতুরো মানুয়েল পেরেজ, পিরোজপুর-১ আসনের সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল ও স্পেনপ্রবাসী আবদুস ছোবান।
স্পেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, নতুন নতুন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দেওয়া অব্যাহত রাখবে স্পেন।

স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ কমিটি থেকে ছয়জনের পদত্যাগ


সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতাস্তম্ভে নির্মাণে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন ছয় সদস্য। তাঁরা হলেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, স্থপতি সামসুল ওয়ারেস, শিল্পী হাশেম খান, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, স্থপতি রবিউল হুসাইন ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
স্বাধীনতাস্তম্ভ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তাঁরা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। আজ রোববার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামকে দেওয়া এক চিঠিতে তাঁরা এই পদত্যাগের কথা জানান।
এই ছয়জন জানিয়েছেন, ২৩ জানুয়ারি একটি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিশেষজ্ঞ কমিটির কারণেই স্বাধীনতাস্তম্ভের প্রকল্প ঝুলে যায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সার্বিক তদারকি আর মন্ত্রীর দৌড়ঝাঁপে এখন কাজে গতি আসবে।’ তিনি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ কমিটিতে যারা ঠাঁই পান, তাঁরা কোনো বিষয়ে একমত হতে পারেন না। তাঁদের কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হয়। তাঁদের কারণে সব উদ্যোগই ব্যাহত হয়। তাঁরা এতটাই মর্যাদা সচেতন যে কার আগে কার নাম থাকল, তা নিয়ে গাল ফুলিয়ে গোস্বা করেন। এতে দুর্নাম হয় সরকারের, মন্ত্রী হন সমালোচিত। মানুষকে তো আর ডেকে দেখানো যায় না বিশেষজ্ঞদের আচরণ। এটা দুঃখজনক।’
প্রতিমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে ওই পদত্যাগপত্রে গতকাল ছয় বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর কোনো অভিযোগই সত্য নয়। অন্যায়ভাবে সব দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ কমিটির ওপর চাপানো হয়েছে।’ এই ছয়জন বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ কমিটির ১২ জন সদস্যের মধ্যে পাঁচজন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব বিশেষজ্ঞ কমিটির কো-চেয়ারম্যান। কিন্তু এ পর্যন্ত নয়টি সভার মাত্র তিনটিতে তিনি উপস্থিত ছিলেন।’
ছয় বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘প্রকল্পের স্থবির অবস্থা দেখে বারবার আমরা তাগাদা দিয়েছি। এর প্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী আমাদের দ্রুত কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ বাস্তবায়ন হয়নি।’
ছয় বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদের এই প্রকল্পটি একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং ১৯৯৬ সাল থেকে আমরা এর সঙ্গে জড়িত। আমরা গত চার দশক নিজ নিজ ক্ষেত্রে এবং জাতীয় ক্ষেত্রে কাজ করেছি। কিন্তু কেউ কখনো এ ভাষায় আমাদের অসত্য অপবাদ দেয়নি। এর প্রতিবাদে আমরা বিশেষজ্ঞ কমিটির পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’ মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘আশা করি, এর ফলে আপনাকে কোনো শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকতে হবে না এবং আগামী ৭ মার্চ আপনার কথামতো আপনি স্বাধীনতাস্তম্ভ দেশবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেবেন।’
প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

Sunday, January 30, 2011

অস্থির মিশর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ, বিক্ষোভ চলছে


কায়রো, জানুয়ারি ২৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/রয়টার্স)- পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করে চলেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক। নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী এবং তার শাসনামলে প্রথমবারের মতো ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দিয়েছেন।

মিশরের গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ও তার রাজনৈতিক সহকর্মী ওমর সুলাইমানকে শনিবার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেন মোবারক। এর পরপরই তিনি বিমান বাহিনীর সাবেক কমান্ডার ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী আহমেদ শফিককে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন।

মোবারকের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভকারীরা কারফিউ উপক্ষো করে রাজপথে বিক্ষোভ করছে।

রাজধানী কায়রো ও বন্দরনগরী আলেকজান্দ্রিয়ার সড়কগুলো জনসমূদ্রে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

ওমর সুলাইমান (৭৪) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিমধ্যে শপথ নিয়েছেন। ৩০ বছর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে হোসনি মোবারক ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি এই প্রথম একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করলেন।

এর আগে সেনাবাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলো, স্থানীয় সময় বিকাল ৪ টায় কারফিউ বলবৎ হওয়ার পর কেউ তা অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এই হুঁশিয়ারিকে আমল না দিয়ে রাজপথে বিক্ষোভ করে চলেছে।

বিক্ষুব্ধ জনতা ঘোষণা দিয়েছে যে, মোবারক পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বে না। আলেকজান্দ্রিয়ায় বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

এশিয়ান কাপের রেকর্ড শিরোপা জাপানের

ফাইনাল ম্যাচ নয়, এ যেন গোল মিসের মহড়া। আর সেই মহড়ায় জয় হয়েছে জাপানের। আজ শনিবার রাতে অস্ট্রেলিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ড চতুর্থবার এশিয়ান কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে নীল সামুরাইরা।
ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই চিত্র—গোল মিস! গোটা সময় ধরে উত্তেজনায় কেটেছে দর্শকদের। দুই দল যে পরিমাণ গোল মিস করেছে, তা মিস না হলে গোলের পাহাড়ের স্বাক্ষী হয়ে থাকতো আজকের ফাইনাল ম্যাচটি।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল হয়নি। অতিরিক্ত সময়েও যথারীতি গোল মিস অব্যাহত। গোল হয়নি অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১৫ মিনিটেও। ১৯ মিনিটে ‘সোনার হরিণটির’ দেখা পেয়ে যায় জাপান। অস্ট্রেলিয়ার গোলবারের সামনে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে যান লি। এই ফুটবলার যে অসাধারণ নৈপুন্যে বল জালে পাঠালেন, তাতে অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষকের তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছু করার ছিল না।
এতোদিন ইরান ও সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ তিনবার শিরোপাজয়ী ছিল জাপান। তবে আজকের ম্যাচ দিয়ে নীল সামুরাইরা ছাড়িয়ে গেছে সবাইকেই। ওয়েবসাইট।

Saturday, January 29, 2011

Grameen Knit fire doused


Savar, Jan 28 (bdnews24.com) — Firefighters managed to douse the fire at Grameen Knitwear in Savar after several hours but the national cricket team's jerseys were unharmed.

Although stacks of yarn were still burning when the fire service reported that the blaze was under control, factory management said that Bangladesh World Cup team jerseys, being manufactured there, were intact.

Fire service director Sheikh Mohammad Shahjalal confirmed bdnews24.com after about eight hours that the fire was under control. But some material was still in flames emitting smoke, he said.

The fire ravaged the ground and first floor of the factory but couldn't reach the second floor where the jerseys had been stored, said the factory general manager.

"We are still not certain about the cause of the fire. But it might been a short circuit," he said.

Meanwhile, Bangladesh Export Processing Zone Authority chief Maj Gen ATM Shahidul Islam has ordered a three-strong committee to probe the fire at the jersey manufacturer.

However, Bangladesh Cricket Board's media chief Jalal Yunus said the factory authorities have assured them that the jerseys are safe.

Fire service chief Abu Nayeem Mohammad Shahidullah also visited the site as the fire still raged.

"The factory was filled with synthetic material which emits a large amount of smoke in a fire. We have tried to enter the facility by drilling into the other side of the building. But visibility was low due to the heavy smoke," he had told reporters.
Parvez Akhter, a fireman on duty at the site, said the fire had broken out from the ground floor store.

The factory's dyeing and knitting sections were open when the fire broke out but the garment section was closed.

Factory officials said that around a fifth of their 3,000-men workforce was in the factory but all of them were evacuated safely.

Dhaka district assistant superintendent of police Monowar Hossain said, "No one was killed. However, a worker named Asaduzzaman was injured. He has been sent to a hospital for first aid."

The factory's managing director Ashraful Hasan said that they had stored yarn worth around Tk 110 million on Thursday. He apprehended that the whole lot has gone up in flames.

The fire broke out at the four-storey factory within the new zone of the EPZ area around 9am on Friday.

রাজধানীতে জবাই করে সাংবাদিক ও তাঁর স্ত্রী খুন

রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি বাসায় এক দম্পতি খুন হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন ফরহাদ খাঁ (৬০) ও তাঁর স্ত্রী রহিমা খাতুন (৫০)। আজ শুক্রবার বিকেলে পুলিশ তাঁদের লাশ উদ্ধার করে। ফরহাদ খাঁ দৈনিক জনতার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক। তাঁর গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে।
দৈনিক জনতার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মো. আহসানউল্লাহ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কাজ শেষে ফরহাদ অফিস থেকে বের হন।
নয়াপল্টন থানার উপপরিদর্শক নাসির জানান, অফিসের কাজের প্রয়োজনে ফরহাদকে আজ বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরছিলেন না। এমনকি আত্মীয়স্বজনেরা তাঁর খোঁজ দিতে পারছিলেন না। এতে অফিসের লোকজন ও আত্মীয়স্বজনদের সন্দেহ হলে তারা থানায় এসে বিষয়টি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭৭ নয়াপল্টনে তাঁদের ভাড়াবাসা দোতলার ফ্ল্যাটে যায় পুলিশ। সেখানে বাইরে থেকে দরজায় দুটো তালা দেওয়া ছিল। পরে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখা যায় ঘরের ভেতরের সব আসবাবপত্র লন্ডভন্ড আর নিহত দুজনের মধ্যে রহিমা বিছানার ওপর এবং ফরহাদ বিছানার পাশে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন।
এই দম্পতির একটি কন্যাসন্তান রয়েছে বলে জানা যায়। তিনি ইতালিতে থাকেন।

গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন

গাজীপুর সদরের ছয়দানা মালেকের বাড়ী এলাকায় এমেক্স অ্যাপারেলস নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে।
আজ শুক্রবার রাত আটটার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অগ্নিনির্বাপণকর্মী সূত্রে জানা গেছে, আজ রাত আটটার দিকে ময়মনসিংহ সড়কের পাশে ছয়দানা এলাকার এমেক্স অ্যাপারেলসের দশম তলায় আগুন লাগে। দশম তলাটি এমেক্স অ্যাপারেলসের গুদাম হিসেবে ব্যবহূত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন দশম তলা থেকে নবম তলায়ও ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে গাজীপুর, কালিয়াকৈর ও টঙ্গী থেকে দমকল বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুল হক সরকার দাবি করেন, অগ্নিকাণ্ডে কারখানার গুদামে রাখা ফেব্রিক্স, কার্টন, টুকরা কাপড় ও মেশিনপত্রসহ অন্তত এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গাজীপুর দমকলের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, আগুন আয়ত্তে আনা সম্ভব হয়েছে। তদন্ত করে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হবে।

Friday, January 28, 2011

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আ.লীগ ও হবিগঞ্জে বিএনপির জয় একটি আসন হারাল আওয়ামী লীগ


দুটি আসনের উপনির্বাচনে একটি হারাল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে হবিগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুশফিক হোসেন চৌধুরীকে এক হাজার ২৮৫ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে বিএনপির প্রার্থী শেখ সুজাত মিয়া বিজয়ী হয়েছেন।
আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ৩৯ হাজার ৮২০ ভোটে হারিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুবকে।
এদিকে ভোট কারচুপির অভিযোগে রাত সাড়ে ১০টায় বিএনপি ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রোববার সেখানে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে।
সরকারের মধ্যবর্তী সময়ে এ নির্বাচনে কোনো ধরনের সহিংসতা ও গোলযোগ হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলে।
ভোট গণনা শেষে গতকাল রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন। তাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে মোট ১২৬টি কেন্দ্রের ফলাফলে আওয়ামী লীগের উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী পেয়েছেন এক লাখ ২৪ হাজার ৩৫০ ভোট। আর বিএনপির খালেদ হোসেন পান ৮৪ হাজার ৫৩০ ভোট।
১৯৭৩ সালের পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে। সাংসদ লুৎফুল হাই সাচ্চুর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। লুৎফুল হাই প্রায় ৭৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন।
অপরদিকে হবিগঞ্জের-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের বেসরকারি ফলাফলে বিএনপির প্রার্থী শেখ সুজাত মিয়া পেয়েছেন ৮১ হাজার ৩৩০ ভোট। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুশফিক হোসেন চৌধুরী পেয়েছেন ৮০ হাজার ৪৫ ভোট। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল মুনিম চৌধুরী পেয়েছেন ২২ হাজার ২২০ ভোট।
অবশ্য রাত নয়টার দিকে আওয়ামী লীগের নবীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মুজিবুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের মিলনায়তনে এসে বলেন, ঘোষিত ফলাফলে ভুল আছে। তিনি ফলাফল আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বন্ধ করার দাবি জানান।
একই সময় বিএনপির প্রার্থীর লোকজনও সেখানে এসে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মাইকে ঘোষিত ফলাফলের লিখিত কাগজ দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। এ নিয়ে সেখানে কিছু সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
রাত ১০টার দিকে স্থানীয় ডাকবাংলোয় রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. এমরান সংবাদ সম্মেলন করে একই ফলাফল ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর একই স্থানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুশফিক হোসেন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে ছয়টি কেন্দ্রের পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, চা-বাগানের কেন্দ্রগুলোতে তাঁর পক্ষের ভোটারদের হুমকি ও আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
হবিগঞ্জের এ আসনে ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত টানা তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়ান ফরিদ গাজী জয়লাভ করেন। এর আগে ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুতে এ আসনে উপনির্বাচন হলো।
নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘এ নির্বাচন দেশে ও আশপাশের দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অতীতে রাজনৈতিক সরকারের সময়ে এমন শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের নজির জানা নেই।’
ভোট গ্রহণ শেষে বিকেলে ঢাকায় বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাঁচটি কেন্দ্র স্থগিত করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
সকালে গ্রামে, দুপুরে শহরে লাইন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে শরিফুল হাসান ও ওয়ালিদ সিকদার জানান, সকাল থেকেই গ্রামের দিকের কেন্দ্রগুলোতে ছিল লম্বা লাইন। সে তুলনায় শহরের কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। কিন্তু বেলা যতই বেড়েছে ততই ব্যস্ত হয়েছে শহরের কেন্দ্রগুলো। অনেকে ভোট দিতে এসেছিলেন দুপুরের পরে।
স্থানীয় বিএনপি বলছে, কয়েকটি কেন্দ্র বাদ দিলে সার্বিকভাবে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল। একই কথা বলেছে আওয়ামী লীগও।
নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই আসনের চারদলীয় জোটের প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব অভিযোগ করে বলেন, আটটি কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টকে বের করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থীর পক্ষে সরকারি প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে।
বিএনপির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও শহর বিএনপির সভাপতি শফিকুল ইসলাম প্রথম অলোকে বলেন, সার্বিকভাবে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল। কিন্তু সাত থেকে আটটি কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বিকেলের দিকে কিছু কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জানিয়েছেন কি না—জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা মৌখিকভাবে অভিযোগ সার্বক্ষণিকভাবে জানিয়েছি।’
এই আসনের মহাজোটের প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনকে বারবার বলেছি, আমি একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। জনগণ যদি আমাকে ভোট দেয়, তবেই আমি জিততে চাই। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে আমার কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। আমি সবাইকে ধৈর্য ধরে থাকতে বলেছি। এ কারণেই একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে।’
কুমিল্লা অঞ্চলের উপনির্বাচন কমিশনার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। একটি কেন্দ্রও স্থগিত করতে হয়নি। প্রার্থীরা মৌখিকভাবে কিছু অভিযোগের কথা বলেছেন। মূলত এগুলো ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষা-সম্পর্কিত। তাঁদের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ ছিল খুবই ভালো।’ এ জন্য সব প্রার্থী, ভোটারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধনবাদ জানান তিনি।
সদর ও বিজয়নগর উপজেলার একাংশ নিয়ে এই আসন। এখানকার মোট ভোটার তিন লাখ ১০ হাজার ২৩৮ জন। ভোটারদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, তাঁদের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ: বিএনপির প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব সকাল নয়টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার নাটাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, স্বাভাবিক পরিবেশে ভোট চলছে।
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শরিফুল হক বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। শান্তিপূর্ণভাবেই এখানে নির্বাচন চলছিল। কিন্তু বিএনপির প্রার্থী এসে হঠাৎ করে বলেন, তাঁর এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি এখানে তাঁদের এজেন্টই দেননি। আমি সকালেই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি।’
দুপুর একটার দিকে খালেদ হোসেন মাহবুব অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার বাসুদেব উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে সিল মারছে। কয়েকজন সাংবাদিক আবার ছুটে গেছেন সেখানে। গিয়ে দেখা যায়, ভোট গ্রহণ বন্ধ। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ র‌্যাব-পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মির্জা গালিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট নেওয়া হচ্ছিল। দুপুরের দিকে দুটি বুথের বিএনপির এজেন্ট নাশতা খাওয়ার কথা বলে বাইরে যান। এরপর বিএনপির প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব ওই দুই এজেন্টসহ কয়েকজন সাংবাদিক নিয়ে এসে আমাকে বলেন, “এখানে ভোট বন্ধ করে দেন।” আমি তাঁকে বলি, নির্বাচন তো শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। ভোট গ্রহণ কেন বন্ধ করব? এ সময় কেন্দ্রের বাইরে বিএনপির লোকজন ভোট বন্ধের দাবিতে স্লোগান দেয়। আমি সঙ্গে সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘটনাটি জানাই। পরে র‌্যাব-পুলিশ এলে আবার নির্বাচন শুরু হয়।’
বিএনপির প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব অভিযোগ করেছেন, খ্রিষ্টিয়ান মিশনারি স্কুল, সুহিলপুর মীরহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুহিলপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুহিলপুর মধ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিরাশার প্রাথমিক বিদ্যালয়, দতাইসার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রসহ আরও কয়েকটি কেন্দ্র থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় পুলিশ, র‌্যাব ও সন্ত্রাসীরা বিএনপির প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়েছে। ফলে ভোটাররা আতঙ্কে ছিলেন।
তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ১২৬টি কেন্দ্রের সবগুলোতেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থী অভিযোগ দেওয়ার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। কিন্তু বেশির ভাগ স্থানেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
বিকেল সাড়ে তিনটায় খ্রিষ্টিয়ান মিশনারি স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ এফ এম নওরোজকে লাঞ্ছিত করে বিএনপির কর্মীরা। তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিএনপির প্রার্থী নিজেই তাঁকে ধমক ও গালাগাল করে হুমকি দেন।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ এফ এম নওরোজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাল ভোট পড়ছে, এমন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বিএনপির প্রার্থী আমাকে গালিগালাজ করেন। আমি তাঁকে বলি, “আপনার কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিত দেন।” কিন্তু তিনি লিখিত দেননি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নরসিংসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে গিয়ে বায়েজিদ (১৫) ও আমির হোসেন (২২) নামে দুজন বিএনপির কর্মী আটক হয়েছেন। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুর নুর প্রথম আলোকে জানান, যে পরিচয়পত্র নিয়ে তাঁরা ভোট দিতে এসেছিলেন এর সঙ্গে তাঁদের ছবির কোনো মিল না থাকায় তাঁদের আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
আমাদের আখাউড়া প্রতিনিধি দুলাল ঘোষ জানান, বিজয়নগর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৩৫টি ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় মেরাশানী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের লাইনে থাকা ভোটার আক্তার হোসেন (৫৬) বলেন, ‘হুনছিলাম, মিলিটারি আইব। আবার হুনি আইব না। এর লাইগ্গা ভয়ে আছিলাম। কেন্দ্রে আইয়া দেহি, কোনো গুলমালই নাই। হগলেই শান্তিতে ভোট দিতাছে।’
বিএনপির অভিযোগ ছিল, আবার ছিলও না: হবিগঞ্জ থেকে ওয়াসেক বিল্লাহ্ ও হাফিজুর নিয়ন জানান, দুই উপজেলার মোট ১৭৫টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়। কোনো সহিংসতা ঘটেনি। আওয়ামী লীগের সাংসদ দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুতে আসনটি খালি হয়। নির্বাচনে ভোটারসংখ্যা তিন লাখ এক হাজার ৪৪৭।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. এমরান ভোট গ্রহণ শেষে প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০০ ভাগ সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। আমরা সবাই খুশি।’
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অন্তত ২৫টি ভোটকেন্দ্র ঘুরে কোথাও ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা যায়নি। দু-একটি কেন্দ্রে ভোটারদের ভোট দিতে লাইন ধরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। বেশির ভাগ কেন্দ্রেই ভোটাররা এসে অপেক্ষা না করেই ভোট দিতে পেরেছেন।
বিএনপির প্রার্থী শেখ সুজাত মিয়া সকাল নয়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে। আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।’ বিএনপির সাংসদ নজরুল ইসলামও সকাল ১০টার সময় এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভোট মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে।’ এর মাত্র এক ঘণ্টা পর তিনি একটি ইংরেজি দৈনিককে ২০টি কেন্দ্রে কারচুপি ও সরকারি দলের সন্ত্রাস করার অভিযোগ করেন।
নজরুল ইসলাম যেসব কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করেন, তার প্রতিটিই নবীগঞ্জ সদর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। এমন একটি কেন্দ্র বড় বাকৈরের রামপুর সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়। অভিযোগ ছিল, ওই কেন্দ্রের বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রটিতে গিয়ে এই অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। একটি বুথে বিএনপির এজেন্ট আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘ভোট ভালো অইছে। ভয় দেহাইছে না কেউ।’ আরেক বুথে বিএনপির এজেন্ট আবদুল খালেক বলেন, ‘খুব ভালো ভোট হইছে। কোনো সমস্যা নেই।’
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘শাম্মী আখতার (সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপির সাংসদ) ফোন করেছিলেন। তিনি জানালেন, এই কেন্দ্রে নাকি প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে। আমি তাঁকে বললাম, কই, কিছু হচ্ছে না তো। তখন তিনি বললেন, “ধন্যবাদ, তাহলে ঠিক আছে।’”
বেলা সোয়া দুইটার দিকে বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘খুব ভালো নির্বাচন হচ্ছে। কোনো সমস্যা নেই।’
কিন্তু বিকেল চারটায় বাহুবলের মিরপুর দাখিল মাদ্রাসায় সুজাত মিয়া বলেন, ‘২০-২৫টা সেন্টারে আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। তাদের ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমাদের এজেন্টদেরও বের করে দেওয়া হয়েছে।’ কোথায় এগুলো হয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা কোথায় ছিলেন? নবীগঞ্জের বহু জায়গায় এগুলো হয়েছে।’ তবে তিনি সুনির্দিষ্ট করে কোনো কেন্দ্রের নাম বলতে পারেননি।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুশফিক হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে ভোট গ্রহণ শেষে বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে।’
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল মুনিম চৌধুরীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তবে ভোটারসংখ্যা কম ছিল।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. এমরান বলেন, ‘শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। বিএনপি দু-তিনটি কেন্দ্রে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছিল। তবে তদন্ত করে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। একইভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির বিরুদ্ধে ভোটারদের গাড়িতে করে আনা-নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছিল। এরও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ভোটার উপস্থিতি কম: বাহুবলের পুঁটিজুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিকেল তিনটা ৪০ মিনিট পর্যন্ত শতকরা ৫৯ ভাগ ভোট পড়েছিল। কেন্দ্রটির পোলিং কর্মকর্তা অমৃতলাল গোপ বলেন, ‘এখন বোরো ধান রোপণের মৌসুম চলছে, তাই হয়তো উপস্থিতি কম।’
আরেক পোলিং কর্মকর্তা জাফরান আহমেদ বলেন, ‘কোনো সময় ভোটারদের একটা লাইনও হয়নি। চার-পাঁচজন করে ভোট দিয়ে চলে গেছে।’
কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল মজিদ বলেন, ‘এখন বোরো রোপণের মৌসুম। গরির মানুষের আয়-রোজগারের দিকও তো আছে। অনেকে আবার এলাকার বাইরে কাজ করে। আবার এই এলাকায় নারীদের বিষয়ে রক্ষণশীলতা আছে। এসব কারণে হয়তো ভোট কম পড়েছে।’
বাহুবল প্রতিনিধি পংকজ কান্তি গোপ জানান, উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে বাহুবল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা একটায় গিয়ে দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য খোশগল্প করছেন। আনসার বাহিনীর মহিলা সদস্যরাও নিজেদের মাঝে পান-সুপারি ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন। ৫-১০ মিনিট পর পর দু-একজন ভোটার আসছেন। ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। কোনো লাইন নেই। নেই ভোটকেন্দ্রের চিরচেনা চিত্র।
বেলা আড়াইটায় উপজেলা সদর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে পশ্চিম ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ভোটারদের ছোট্ট একটি সারি। পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতি খুবই কম। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিমল চৌধুরী জানান, শতকরা ৪০ ভাগ ভোট পড়েছে।
কেন্দ্রে এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আকবর আলী (৭০) বলেন, ‘জীবনে এত কম ভোটার দেখিনি।’ তাঁর মতে, গ্রামাঞ্চলে প্রার্থীদের প্রচারণা কম ও উপনির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ তৈরি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুক মিয়া জানান, রাজনৈতিক দলের কর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের পেছনে বেশি ছোটাছুটি করেছেন, বাড়ি বাড়ি ভোটারদের কাছে যাননি। ফলে ভোটাররা কম এসেছেন।
উপজেলার বিএম ব্রিকস ফিল্ডে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ শ্রমিক নিজের কাজে ব্যস্ত। শ্রমিক তইয়ব আলী ও আবদুল আজিজ বলেন, ‘ভোট দিয়া কিতা অইত। চাউলের দামত আর কমতনায়। আমি রোজি না করলে পরিবার পালমো ক্যামনে?’ ভোটার উপস্থিতির এ চিত্র শুধু বাহুবল সদর, পশ্চিম ভাদেশ্বর ও যশমঙ্গল কেন্দ্রের নয়; উপজেলার ৬১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে বেশির ভাগেরই চিত্র ছিল একই রকম।
বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামান বলেন, বাহুবলে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এ নির্বাচন জাতীয় প্রেক্ষাপটের কোনো পরিবর্তন আনবে না বলে ধারণা থাকায় হয়তো ভোটকেন্দ্রে যেতে আগ্রহ বোধ করেননি অনেকে।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ব্যাংকগুলোতে কিছু তদবির হয়, নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা রয়েছে


রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে কিছু তদবির হয় বলে স্বীকার করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, এই তদবির যে দেশ থেকে খুব উঠে যাবে, এমনটা ভাবা ঠিক নয়। তবে তদবির যাতে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে, সেই চেষ্টা থাকতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, ডেপুটি গভর্নর নজরুল হুদা, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী বাহারুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবির, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হক, এমডি সৈয়দ আবদুল হামিদ এবং দুই ব্যাংকের পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই দুই ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকের কারণ তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে ব্যাংকের পরিচালকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। অনেক দিন থেকেই তাগিদ অনুভব করছিলাম যে তাদের সঙ্গে বসা দরকার এবং তাদের বক্তব্য শোনা দরকার। কারণ, তাদের জনসেবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যাংকের বিশেষত্বই হলো এর শাখা ছড়ানো গ্রামে গ্রামে। একদিকে তারা জাতীয় সঞ্চয় বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে ভূমিকা রাখছে বিনিয়োগে। কিন্তু খারাপ বিষয় হলো ‘খেলাপি সংস্কৃতি’ শুরু হয়েছে। ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিলে তো এরা পথে বসে যাবে। তবে এ বছর ব্যাংকগুলো খেলাপির মাত্রা কমাতে সক্ষম হয়েছে।
ব্যাংকের পর্ষদে পরিচালকদের নিয়োগ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২৭ বছর আগে একবার বাণিজ্য বোঝেন, এমন লোকদের নিয়োগ দিয়েছিলাম। যেমন একবার দিয়েছিলাম সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীকে। ভালো কাজ হয়েছিল।’ অন্যদিকে অন্য রকম কাজও হয়েছে বলে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের টাকা-পয়সার লেনদেনের কারণে অনেক সময় লোভটা বেড়ে যায়। এবার তাই রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পরিচালক নিয়োগ দিই। তারা ভালোই কাজ করছে। যে রকম চেয়েছি, ঠিক সে রকমই। তবে কষ্টও আছে। আর তা হলো খেলাপি সংস্কৃতি।’
প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কাগজ তো খুব ওস্তাদ। আজই (গতকাল) তারা খবর ছাপিয়েছে। এতে কিছু পরিচালকের নাম বাদ দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য আমাকে চিঠি লিখেছে বহু আগেই। এতে কারও নাম বা ব্যক্তির কথা বলা নেই।’ অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রকাশিত প্রতিবেদনটি একটি নেতিবাচক প্রতিবেদন বলে আমি মনে করি। তবে অনেকে বলেছেন ভালোই হয়েছে।’
সূত্র জানায়, রাজনৈতিক পরিচালকেরা বৈঠকে সংবাদপত্রে তাঁদের নাম ছাপা হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেক সময় ধরেই আলোচনা হয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদন নিয়ে। এক পর্যায়ে পরিচালকেরা বলেন, তাঁরা রাতে মানসিক শান্তি নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। কিন্তু সকালে উঠে দেখেন পত্রিকাতে তাঁদের চরিত্র হনন করা হয়েছে। এতে তাঁদের মনে হচ্ছে তাঁরা যেন আসামি। তাঁদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে।
পরিচালকেরা বলেন, কিন্তু তাঁরা তো ব্যাংকের জন্য ভালো কাজ করেছেন। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে তাঁরা ভালোভাবে ব্যাংক চালাচ্ছেন, উন্নতি করেছেন।
সংবাদপত্রে চিঠি কীভাবে গেল, ছাপা হলো এ বিষয়ে তাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর কিছুটা ক্ষোভ দেখান। বলেন, গভর্নর কেনই বা অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিতে গেলেন। তিনি তো তাঁদের ডেকে বলতে পারতেন। তাঁরা বলেন, তারা তো ব্যাংকের দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপ করেননি। বরং ঋণ আদায়ের প্রচেষ্টা নিয়েছেন এবং তাতে আদায় বেড়েছে।
কেউ কেউ বলেন, তাঁরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এটা ঠিক আছে এবং এটাও ঠিক যে তাঁরা রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কোনোভাবেই ব্যাংকগুলোতে রাজনৈতিক কারণে হস্তক্ষেপ করেননি। কেউ কেউ বলেন, তাঁরা খুবই কম ক্ষেত্রে হয়তো কিছুটা তদবির করেছেন, কিন্তু হস্তক্ষেপ করেননি।
সূত্র জানায়, গভর্নর বৈঠকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো তথ্য বা চিঠি সংবাদপত্রে যায়নি। ইচ্ছা করলে পরিচালকেরা পত্রিকাতে জিজ্ঞাসা করেও তা দেখতে পারেন। উপরন্তু, গভর্নর বলেন, তিনি অর্থমন্ত্রীকে যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে কারোর নামও ছিল না।
সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, পরিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাঁরা যখন জেলা শহরে যান তখন সেখানে গিয়ে ব্যাংকের কাছ থেকে গাড়ি নিয়ে ব্যবহার করেন, এটা করবেন না। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেই তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জনস্বার্থে কাজ করার জন্য। মন্ত্রী বলেন, পরিচালকেরা ব্যক্তিগতভাবে ব্যাংকের কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না। তাঁরা পর্ষদে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবেন। ব্যবস্থাপনাতে কোনো ত্রুটি থাকলে তাঁরা তা পর্ষদে বসে দিকনির্দেশনা দেবেন।
সূত্র জানায়, তদবিরের জন্য কেউ ব্যাংকে যেন বড় ও দামি গাড়ি নিয়ে না আসেন, সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।
ব্যাংকের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ না করলে বাংলাদেশ ব্যাংক আপনাকে চিঠি লিখত না—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ কথা আপনারাই (সাংবাদিকেরা) বলেন, ব্যাংকের এমডিরা তো বলেন না।’

আইসিসির সিদ্ধান্ত বিশ্বকাপের ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ ইডেনে হচ্ছে না

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত কলকাতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছেনা। নির্ধারিত সময়ে ইডেন গার্ডেন প্রস্তুত না হওয়ার কারণে আইসিসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি এই ম্যাচটি ইডেনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আইসিসি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে এই ম্যাচের জন্য বিকল্প ভেন্যু ঘোষণারও আহবান জানিয়েছে। খবর, রয়টার্সের।
আইসিসি ২৭ ফেব্রুয়ারি ম্যাচের ভেন্যু হিসেবে কলকাতার অধিকার কেড়ে নেওয়ার পর ভারতের বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির প্রধান রত্নাকর শেঠি বলেছেন, ‘এখন আমাদের নতুন ভেন্যু খুঁজতে হবে। তবে, এই ম্যাচের টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর টিকিট বিক্রির দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের সমস্যা দেখা দেবে।’
এদিকে, নির্ধারিত সময়ে প্রস্তুত না হওয়ার তালিকায় যৌথ আয়োজক শ্রীলঙ্কার তিনটি ভ্যেনু ও মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামকে সবুজ সংকেত দিয়েছে আইসিসি। আইসিসি পরিদর্শক দল শ্রীলঙ্কার কলম্বো, হামবানতোতা ও পাল্লেকেলে ও মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে সেখানকার প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট হয়েই সেগুলোকে অনুমোদন দিয়েছে।
সেই প্রতিবেদনে কলকাতার ইডেন গার্ডেনের প্রস্তুতি নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলা হয় আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারত-ইংল্যান্ডের ম্যাচটির আগে এটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রোববার হরতাল

ভোট কারচুপির অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আগামী রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হরতাল কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর কাছে ৩৯ হাজার ৮২০ ভোটে হেরেছেন বিএনপির প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব।

আ.লীগ-সমর্থিত ৭টি, বিএনপি-সমর্থিত ৩টি ও স্বতন্ত্র ১টিতে জয়ী


পৌর নির্বাচনের ফলাফল
আ.লীগ-সমর্থিত ৭টি, বিএনপি-সমর্থিত ৩টি ও স্বতন্ত্র ১টিতে জয়ী
দেশের নয় জেলার ১২টি পৌরসভায় আজ বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। বেসরকারি ফল অনুযায়ী, সাতটি পৌরসভায় মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীরা। এর মধ্যে রয়েছেন একজন বিদ্রোহী প্রার্থী। বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন তিনটি পৌরসভায়। দুটি পৌরসভার মধ্যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের এক প্রার্থী এবং নির্দলীয় এক প্রার্থী মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
এ নিয়ে সারা দেশে পাঁচ দফায় হওয়া ২৪৮টি পৌরসভায় ১১৬টিতে জিতেছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ও বিদ্রোহী মেয়র পদপ্রার্থীরা। ১০৬টিতে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
নির্বাচন উপলক্ষে আজ সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
বিজয়ী মেয়র পদপ্রার্থীরা: দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর পৌরসভায় মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এ জেড এম মেনহাজুল হক। তিনি পেয়েছেন ছয় হাজার ৫৭৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আবদুল ওয়াহাব পেয়েছেন ছয় হাজার ৫৬৪ ভোট।
মাগুরায় আওয়ামী লীগের মো. আলতাফ হোসেন ২৩ হাজার ১৪৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মো. হাসান সিরাজ পেয়েছেন ১২ হাজার ৩৪৭ ভোট।
ভোলার চরফ্যাশনে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আবদুস সালাম হাওলাদার। তাঁর ভোট ছয় হাজার ৩১৬টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আমিরুল ইসলাম পেয়েছেন দুই হাজার ৯৩৪ ভোট।
নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভায় বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী মো. ইলিয়াস বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১০ হাজার ২১০ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি-সমর্থিত বিলকিস সরকার পুতুল পেয়েছেন তিন হাজার ১৯৭ ভোট।
মাদারীপুর পৌরসভায় বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী খালিদ হোসেন ইয়াদ। তাঁর ভোট ১৩ হাজার ৮৩৪টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির জাহান্দার আলী জাহান পেয়েছেন আট হাজার ১০৮ ভোট।
শরীয়তপুরের জাজিরায় জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের ফকির। তিনি পেয়েছেন তিন হাজার ৭৯৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের মো. ইউনুস ব্যাপারী পেয়েছেন দুই হাজার ৫৯৮ ভোট।
নেত্রকোনার মদন পৌরসভায় নির্দলীয় প্রার্থী দেওয়ান মোদাচ্ছের হোসেন তিন হাজার ৫৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান মেয়র বিএনপির শফিকুল আলম পেয়েছেন দুই হাজার ২০৯ ভোট।
ফেনীর দাগনভূঞা পৌরসভায় বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক খান। তিনি পেয়েছেন তিন হাজার ৩৬৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আকবর হোসেন পেয়েছেন তিন হাজার ২৯৭ ভোট।
কক্সবাজার পৌরসভায় জামায়াতে ইসলামীর সরওয়ার কামাল ২১ হাজার ১৬৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুজিবুর রহমান ১৬ হাজার ৩০৩ পেয়েছেন ভোট।
চকরিয়ায় বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির নুরুল ইসলাম হায়দার। তাঁর ভোট ১১ হাজার ২২৭টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের জাফর আলম পেয়েছেন নয় হাজার ৫০৯ ভোট।
মহেশখালীতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মকসুদ মিয়া সিকদার ছয় হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সরওয়ার আজম পেয়েছেন তিন হাজার ৩৯০ ভোট।
টেকনাফে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী মো. ইসলাম মিয়া। তাঁর ভোট ছয় হাজার ২১৬টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত মোহাম্মদ ইসমাইল পেয়েছেন দুই হাজার ৮৭৩ ভোট।
[সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।]

Thursday, January 27, 2011

মার্কিন বিজ্ঞানীর দাবি : মহাবিশ্বে আমরা একা
মানুষ যখন বৈজ্ঞানিক উত্কর্ষের চরম শিখরে আরোহণ করে মহাবিশ্বে উন্নত প্রাণীর খোঁজে ব্যস্ত, ঠিক তখনই উত্সাহের আঁচে পানি ঢালার মতো করে প্রখ্যাত এক মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ঘোষণা করলেন, ‘মহাবিশ্বে আমরা মানুষেরা একদম একা।’
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. হাওয়ার্ড স্মিথের মতে, অসংখ্য গ্যালাক্সিতে পৃথিবীর মতো অসংখ্য গ্রহ থাকলেও সেগুলো প্রাণবিকাশের অনুপযোগী। তাই আমরা যে ইটি বা এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল (মহাজাগতিক) প্রাণীর কথা কল্পনা করে থাকি এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছি, তার কোনো মানে নেই। এমনকি আমাদের সৌরজগতের বাইরে লক্ষকোটি আলোকবর্ষ দূরে তাদের অস্তিত্বের ক্ষীণতম সম্ভাবনাও থাকে, তবু তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো সুদূরতম সম্ভাবনাও নেই।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আমাদের সৌরজগতের বাইরে দূরতম সৌরজগতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। মহাজাগতিক ওসব গ্রহে তারা প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে দৃঢ় আশা প্রকাশ করছেন, তবু সেসব কথায় কান না দিয়ে ড. হাওয়ার্ড স্মিথ বলেছেন, ‘এর কোনো সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না’।
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত গ্রহগুলোর অবস্থান তাদের নিজ নিজ সূর্য থেকে এত বেশি কাছে কিংবা এত বেশি দূরে যে, যেখানে উষ্ণতা কিংবা শীতলতার চরম তাপমাত্রায় প্রাণের বিকাশের কোনো সূত্রই কাজ করতে পারবে না।’
আবার কিছু কিছু গ্রহের কক্ষপথের অস্বাভাবিকতার কথাও বলেছেন ড. স্মিথ। এই অস্বাভাবিক অবস্থায়ও সেসব গ্রহে জীবনধারণের প্রধান শর্ত পানির তরলতা সম্পূর্ণই অসম্ভব। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, সেসব গ্রহ-নক্ষত্র এবং তাদের সৌরব্যবস্থা বা পদ্ধতি আমাদের সৌরপদ্ধতির চেয়ে এত বেশি অন্যরকম যে, ওখানে আমাদের মতো বুদ্ধিমান বা কমবুদ্ধিমান কিংবা নির্বোধ প্রাণীর জৈবিক অস্তিত্ব বিকশিত হওয়ার কোনোই অবকাশ নেই।’
সুতরাং নতুন এই তথ্যের আলোকে নির্ভর করে ড. স্মিথ বলেছেন, ‘এই মহাবিশ্বে আমরা একদমই নিঃসঙ্গ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মতো খুব কমই সৌরজগত এবং গ্রহ আছে। তার অর্থ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার মতো অন্য গ্রহে বুদ্ধিমান প্রাণী থাকার সম্ভাবনা একেবারেই কম।’
মাত্র গত মাসেই বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, আরও লক্ষ কোটি গ্যালাক্সি থাকার কারণে এটা অনুমান অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত যে, মহাবিশ্বের অন্য কোথায় প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের গবেষকরাও বলেন, প্রায় ৪০ হাজার গ্রহে এলিয়েনের অস্তিত্ব রয়েছে। কিন্তু ড. স্মিথ সে সব কথাকে নিরেট সত্য নয়, স্রেফ আশাবাদ হিসেবেই নাকচ করে দেন।
ড. স্মিথের এ দাবির ফলে মহাবিশ্বের অন্য কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব সম্পর্কিত এলিয়েন (ভিনগ্রহের প্রাণী) তত্ত্বে ফাটল ধরল। সূত্র : দ্য মেইল

কেস স্টাডি শেয়ারবাজার :
অনিশ্চয়তায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা : আমরা দেশের শত্রু বা চোর নই : টাকার উত্সও অনন্ত নয়
জাহেদ চৌধুরী/কাওসার আলম
শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক ধস কেলেঙ্কারিতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আর্থিক ক্ষতি তারা কিভাবে পুষিয়ে নেবেন, শেয়ারবাজার থেকে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকা কিভাবে লুটে নিয়েছে—এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। শেয়ারবাজারে ধস ও আস্থাহীনতা সৃষ্টির জন্য সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসএইসি) ভুল সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে ‘লাভ হলে মিষ্টি খাওয়ান না, লস হলে রাস্তায় নেমে আসেন’ বলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উপহাস করে মন্তব্য করেছেন। লাভের আশায় ব্যবসায় নামলে লসের মানসিকতাও থাকতে হবে বলে নসিহত করেছেন। তার এ ধরনের বক্তব্য নিয়ে চলছে বিতর্ক। সমালোচনা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের দুই মন্তব্য নিয়েও। গত শুক্র ও শনিবার খুলনা এবং ঢাকায় দু’টি অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজার ধসে দেশের অর্থনীতির কোনো ক্ষতি হবে না। বিনিয়োগ করে লস হলে রাস্তায় নেমে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা দেশের শত্রু। অর্থের অনন্ত উত্স বা চুরির টাকা হলেও অতিমূল্যায়িত শেয়ারবাজারে কেউ বিনিয়োগ করে না বলে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন তা কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না।
এ প্রেক্ষাপটে আমরা গতকাল সরেজমিনে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে গিয়ে বেশ কিছু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলেছি। জানার চেষ্টা করেছি তাদের বিনিয়োগের উত্স, শেয়ারবাজারে আসার প্রেক্ষাপট, সামাজিক অবস্থা, শেয়ারবাজার নিয়ে মূল্যায়ন। এছাড়া ১৫টি ব্যাংকের শেয়ারবাজার থেকে আয় শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড হিসেবে না দেয়ার সর্বশেষ সরকারি সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের অভিমত জানার চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বোপরি শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য সম্পর্কে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়াও পাওয়া গেছে সরেজমিন অনুসন্ধানে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে তাদের বিনিয়োগের কাহিনী তুলে ধরে বলেছেন, আমরা দেশের শত্রু বা চোর নই। আমাদের টাকার উত্সও অনন্ত নয়। আমাদের জন্য যদি সরকারের কোনো উপদেষ্টার মন না কাঁদে, শেয়ারবাজারের ধসে দেশের অর্থনীতির যদি কোনো ক্ষতি না হয়, তবে এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আমাদের অর্থের উত্সকে চুরির টাকা বলা, আমাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা, উপরন্তু পুলিশ দিয়ে লাঠিপেটা করে মাথা ফাটিয়ে দিয়ে গ্রেফতার নির্যাতন করার পরও সরকারের উপদেষ্টার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতিহত করার হুমকি একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে বড়ই বেমানান। তারা বলেছেন, সর্বশেষ ১৫টি ব্যাংকের শেয়ারবাজার থেকে আয় করা লাভের টাকা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ না করার সিদ্ধান্ত ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের অর্থ সরকারি উদ্যোগে কেড়ে নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ব্যাংকের হাতে তুলে দেয়ার শামিল। দীর্ঘমেয়াদে শেয়ার ধরে রেখে রসের টাকা কিছুটা পুষিয়ে নেয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এটার পক্ষে বড় অন্তরায়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খুব ভালো মৌল উত্স, পিই রেশিও দেখে সচেতনভাবে বিনিয়োগ করার পরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গত দেড় মাসে প্রায় আড়াইহাজার পয়েন্ট সূচক পতন ও শেয়ারবাজার (ডিএসই) থেকে সাড়ে ৮৪ হাজার কোটি টাকা মূলধন লস এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) মূলধন ৮০ হাজার কোটি টাকা কমে যাওয়ার পর সর্বনিম্ন ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। শতকরা ৩৫ ভাগের নিচে ক্ষতি হয়েছে এমন কোনো ক্ষুদে বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়নি। তবে যারা গত দু’মাসে শেয়ারবাজারে ব্যবসায় নেমেছেন তাদের এই টাকা গেছে মূল থেকে। অক্টোবরের আগে যারা নেমেছেন তাদের অধিকাংশের গেছে লাভের টাকা থেকে। গত ৫ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের সর্বোচ্চ সূচকের দিনের সঙ্গে তুলনা করে গত ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দফায় দফায় দরপতনের তুলনা করে এ হিসাবে করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও কৃষি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, শেয়ারবাজার থেকে সিন্ডিকেট প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এর পরিমাণ আরও অনেক বেশি। গতকাল ইব্রাহিম খালেদকেই সরকার শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
শেয়ারবাজারে টাকা সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে অনেকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করছেন সরকারের একজন উপদেষ্টার দিকে। অন্যদিকে অপর এক মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) ও ওশান কোম্পানি লিমিটেডের (ওসিএল) বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের মাধ্যমে প্রাইমারি শেয়ারের অতিমূল্যায়ন করে প্রায় ১৬শ’ কোটি টাকা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তুলে নেয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে কেপিসিএল-এর ১০ টাকার শেয়ার প্রিমিয়ামসহ ১৯৪ টাকা ধরে প্রাইমারি শেয়ার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের দেয়া হয়েছে। যেখানে কেপিসিএল-এর শেয়ার বর্তমানে বাজারে মাত্র ৯৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোম্পানিগুলো যাতে বাইব্যাক পদ্ধতিতে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শেয়ারগুলো বিক্রিত মূল্যে কিনে নেয় সে দাবিও উঠেছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। এছাড়া মবিল যমুনা ও এমআই সিমেন্ট এ দুটি কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। সাময়িকভাবে এই দুই কোম্পানির শেয়ার মার্কেটে আসা বন্ধ রয়েছে। এটা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের বিপুল অংকের টাকা দ্রুত তারা যাতে তুলে নিতে পারে এবং প্রাইমারি শেয়ারের লটারি হয় সে দাবিও উঠেছে।
সরকার এ মধ্যে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের কতটুকু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পক্ষে গেছে এবং কতটুকু বড় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে গেছে, তা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক চলছেই।
কেসস্টাডি : আশফাক হোসেন। বয়স ৪৫। বেসরকারি চাকরি করেন। স্ত্রীও চাকরি করেন। দু’ছেলে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে। রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় থাকেন। হঠাত্ করেই বাসা ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। স্কুলে সন্তানদের ফিও বেড়েছে। অফিসের বেতনও আটকা পড়েছে। বিকল্প আয়ের সন্ধানে নিজেকে যুক্ত করেন শেয়ার ব্যবসায়। ১১ নভেম্বর বিও একাউন্ট খোলেন। প্রথমে স্ত্রীর চাকরির জমানো এক লাখ টাকা। তারপর আস্তে আস্তে ৩ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ, প্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে লাভ দেয়ার কথা বলে ধার। এই মিলে ৮ লাখ টাকা। গত ৫ ডিসেম্বরে এক মাসেরও কম সময়ে লাভের খাতায় উঠেছিল ৩৫ হাজারের কিছু বেশি। অবস্থা কাটিয়ে উঠতে ৮ ডিসেম্বর প্রথম বড় ধরনের পতনের পর বন্ধুর কাছ থেকে ২০ শতাংশ বার্ষিক সুদে আরও ৩ লাখ টাকা ডিড করে নেন তিনি। নিজে থেকে যোগ করেন ২৫ হাজার। এই মিলে সোয়া ১২ লাখ টাকার বিনিয়োগ। ২০ জানুয়ারিতে তার পোর্ট ফোলিওতে ৩৫ হাজার টাকার লাভ নিঃশেষ হয়ে তার সঙ্গে লস যোগ হয়েছে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৬০ টাকা ১৭ পয়সা। পূবালী ব্যাংকের একটি ব্রোকারেজ হাউসে তার বিও একাউন্টের মাধ্যমে ট্রেড করেন। তার মন্তব্য, অর্থ উপদেষ্টা আমাদের চোর বলেছেন, টাকার উত্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দেশপ্রেম নিয়ে কথা বলেছেন, কষ্ট পেয়েছি। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বললেন, অর্থ উপদেষ্টা আমাদের বোকা বা পাগল বললে হয়তো এতো কষ্ট পেতাম না। কারণ, বোকা না হলে তাদের মদতপুষ্ট সিন্ডিকেটের ফাঁদে পা দিয়ে হয়তো এভাবে বিনিয়োগে আসতাম না। এখনও আমরা বুক বেঁধে আছি একদিন হয়তো মূলটুকু ওঠে আসবে সে আশায়। কিন্তু ১৫ ব্যাংকের শেয়ারবাজারের লাভ আমরা পাব না। মঙ্গলবারের পত্রিকায় এ খবর দেখার পর হতাশা একধাপ বেড়েছে। কবে আমরা ক্ষতি পুষিয়ে মূলটুকু নিয়ে বের হয়ে আসতে পারব? ব্যাংকের ঋণ, বন্ধুর ঋণ কীভাবে শোধ করব। ভাইয়ের টাকা কীভাবে ফেরত দেব। চাকরির যদি কিছু হয়, তবে ছেলেদের পড়ার কি হবে? এসব ভেবে কতদিন এভাবে মাথা ঠিক রাখতে পারব। সুস্থ থাকতে পারাই এখন জরুরি। আর অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে হয়তো অর্থমন্ত্রী বা অর্থ উপদেষ্টা আমাদের পাগল বললে তা নিয়ে আপত্তি করার মতো পরিস্থিতি থাকবে না।
আয়েশা সিদ্দিকা : পূবালী ব্যাংকের ব্রোকারেজ হাউসে বসে গতকাল কথা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব গৃহিণী আয়েশা সিদ্দিকার সঙ্গে। তার সঙ্গে ছিল মতিঝিল আইডিয়ালে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া ছেলে। স্বামী নোয়াব আলী তাঁত বোর্ডে চাকরি করতেন। মারা গেছেন ২০০৮ সালের অক্টোবরে। সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ কিভাবে চালাবেন এ নিয়ে যখন দিশেহারা তখন ভাইয়ের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নিয়ে শুরু করেন শেয়ার ব্যবসা। ২০০৯ সালের মে মাসে শেয়ারবাজারে আসেন। নিজের গহনা বিক্রি করে ১ লাখ টাকা যোগ করেন। পর্যায়ক্রমে স্বামীর সঞ্চয় ও পেনশনের টাকা সবকিছুই নিয়ে এসেছেন শেয়ারবাজারে। এক পর্যায়ে তার বিনিয়োগ এসে পৌঁছায় ১৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকায়। ব্যাংকের ব্রোকারেজ হাউজ থেকে মার্জিন ঋণ পর্যায়ক্রমে গিয়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ ২৮ হাজার টাকায়। লাভসহ একপর্যায়ে মূলধন দাঁড়ায় ৩৬ লাখ টাকায়। লাভ থেকে ৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা তুলে আনেন এক দফায়। শেয়ারবাজারের টাকা দিয়ে সংসার ও ছেলেদের পড়ালেখার খরচ মোটামুটি চালিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পর থেকেই হঠাত্ করেই মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়তে থাকে। ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে ২০ জানুয়ারি গিয়ে পৌঁছায় ১২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। পোর্টফোলিও দেখিয়ে বললেন, এখন লাভ তো গেছেই, ব্যাংকের ঋণ শোধ করে মূল নিয়েই টানাটানি পড়বে। তাই খোঁজখবর নিতে এসেছেন। এক ছেলে বগুড়ায় ডাক্তারি পড়ে অন্য ছেলে আহসানউল্লাহ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। কথা বলতে গিয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে বললেন, এতিম ছেলেদের রিজিক ভেবে এতোদিন বেশ ভালোই কাটছিল। সামনের দিন নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। অর্থমন্ত্রী ও অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের কষ্ট বুঝতে না চাইলে আমরা কার কাছে যাব।
রবীন্দ্র চন্দ্র রায় : বয়স ৫৯। ২ বছর আগে অবসরে গেছেন। গত জুলাইয়ে শেয়ারবাজারে ঢুকেছেন। পর্যায়ক্রমে ৭ লাখ টাকা মূলধন দাঁড়িয়েছিল। লাভ মিলে সেটা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকায় পৌঁছেছিল। সম্প্রতি লস হয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। মূলের ওপর হাত পড়েছে। চিন্তায় আছেন কবে মূলধনও যায়। বললেন, ভালো মৌলভিত্তি দেখে মূলত ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারের আয় ডিভিডেন্ড হিসেবে দেয়া যাবে না বলার পর কিভাবে ক্ষতি পোষাবো তা ভেবে পাচ্ছি না। সরকারের এই সিদ্ধান্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। লাভ হবে ব্যাংকের মতো প্রাতিষ্ঠানিক বড় বিনিয়োগকারীদের। মন্ত্রী উপদেষ্টার কথায় কিছু যায় আসে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ৫৭ বছর চাকরি করে পেনশনের টাকা দিয়ে কোনভাবে সময় পার করছিলাম। সরকারের লোকদের উপহাস দেখলে কষ্ট পাই। কিন্তু কষ্টের কথা কার কাছে বলব। শোনার তো কেউ নেই।
মজিবুর চৌধুরী : একসময় পরিবহন সেক্টরে কাজ করতেন। কিন্তু ২ বছর আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর শেয়ার ব্যবসায়ী হয়েছেন। লেনদেন করেন মিডওয়ে সিকিউরিটিজ হাউসে। তিনি ধাপে ধাপে শেয়ার ব্যবসায় ৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এর মধ্যে ডিপিএস ভাঙিয়ে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, বোনের কাছ থেকে ধার করে ৫০ হাজার টাকা এবং নিজস্ব সঞ্চয় থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এ টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে তিনি লাখ খানেক টাকার মতো লাভও করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে তার মুনাফার অংশ তো বটেই পুঁজির একটি বড় অংশই তিনি হারিয়েছেন। বিপর্যয়ের কারণে তার মূলধন নেমে এসেছে অর্ধেকে। তিনি বলেন, এখন অবস্থা খুবই খারাপ। পুঁজির একটি বড় অংশই আমি হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমার পুঁজি অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিনিয়োগের ৩ লাখ টাকার মধ্যে দেড় লাখ টাকা নেই।
রফিকুল ইসলাম : এনকর সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করেন। পেশায় এখনও ছাত্র। বাড়ি থেকে মাসে মাসে খরচের টাকা না এনে বাবার কাছ থেকে বলে-কয়ে ২ লাখ টাকা নিয়ে শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। শেয়ারবাজার থেকে যে মুনাফা হবে তা দিয়ে নিজের খরচ মেটানোর লক্ষ্যে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তবে শুধু বাবার কাছ থেকেই নয়, বোনের কাছ থেকে ১ লাখ এবং বন্ধুবান্ধব থেকে আরও ১ লাখ টাকা ধার করে ধাপে ধাপে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। গত ১০ মাসে শেয়ার ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকার মতো তার লাভ হয়েছিল। কিন্তু এখন তার পুঁজি ৪ লাখ টাকা থেকে কমে এসে দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখ টাকায়। অর্থাত্ পুঁজির দেড় লাখ টাকাই তিনি হারিয়েছেন। তিনি আরও জানান, তার বাবা পেশায় একজন কৃষক। তিনি জায়গা বন্ধক রেখে এবং অন্যান্য উত্স থেকে তাকে ২ লাখ টাকা জোগান পেয়েছিল। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাদের কষ্টের টাকা শেয়ারবজারে বিনিয়োগ করেছেন। শেয়ারবজারে বিনিয়োগের জন্য আমাদের আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখন বিনিয়োগ করে আমরা আমাদের পুঁজি হারাচ্ছি।
তিনি বলেন, যারা বড় বিনিয়োগকারী, তারা কোথা থেকে টাকা এনেছেন, তাদের টাকার উত্স কী—তা বলতে পারব না। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাদের কষ্টে উপার্জিত টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। অর্থ উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, এখন তারই উচিত কারা চুরির টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে—তা খুঁজে বের করা। এতে যদি সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে এ সরকারের ব্যর্থতা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
শাহ আলম সোহাগ : মডার্ন সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করা শাহ আলম সোহাগ জানান, এক বছর আগে তিনি শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এর আগে তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি যে টাকা নিয়ে এসেছেন তার প্রায় পুরো টাকাই তিনি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তার মধ্যে ১ লাখ টাকা তিনি ধার করেছেন। তবে শেয়ারবাজারে বিপর্যয়ের কারণে তার লাভের পুরোটাই তিনি হারিয়েছেন। এখন তার মূলধনের এক-তৃতীয়াংশ তিনি হারিয়েছেন। অর্থ উপদেষ্টা জানেন না সাধারণ মানুষ কত কষ্ট করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য টাকা নিয়ে আসছেন। বিভিন্ন উত্স থেকে তারা টাকা নিয়ে আসছেন; কিন্তু কেউ চুরির টাকা নিয়ে আসেননি। এ ধরনের দায়িত্বহীন কথাবার্তার জন্য অন্য দেশ হলে অর্থ উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হতো। কিন্তু তা হচ্ছে না। এ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।
মিজানুর রহমান সবুজ : মিডওয়ে সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করেন মিজানুর রহমান সবুজ। ডিগ্রি পাস করে কোনো চাকরি না পেয়ে শেয়ার ব্যবসা করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন বলে জানান তিনি। শেয়ারবাজারে তিনি ৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পরিবার থেকেই তাকে এ টাকা জোগান দেয়া হয়েছে। সাড়ে তিন বছর শেয়ার ব্যবসা থেকে যে পরিমাণ মুনাফা করেছেন, তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণ পুঁজি হারিয়েছেন। তিনি জানান, দেশে কর্মসংস্থান নেই, চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বেকার যুবকরা শেয়ার ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন। কিন্তু শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পথে বসানোর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে তার মূলধনের প্রায় অর্ধেক অংশই হাওয়া হয়ে গেছে। অর্থ উপদেষ্টাকে প্রমাণ করতে হবে কোথা থেকে টাকা চুরি করে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি কীভাবে জানলেন বিনিয়োগকারীরা টাকা চুরি করে এনেছেন। এটি প্রমাণ করতে না পারলে তার বিচার চাই। যারা বাজার ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করা হোক। আমরা তাদের বিচার চাই।
আহসান কবির : আহসান কবির নামের অপর এক বিনিয়োগকারী জানান, একসময় তিনি চাকরি করতেন। কিন্তু সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। সংসারের ব্যয় নির্বাহে শেয়ার ব্যবসাই তার আয়ের অন্যতম উত্স ছিল। চাকরি এবং নিজের সঞ্চয় থেকে যে টাকা পেয়েছেন, তার প্রায় সবটুকুই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি শেয়ারবাজারে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে জানান। তিনি দেড় বছর আগে শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। কিন্তু শেয়ারবাজারের বিপর্যয়ের সঙ্গে তার ভাগ্য বিপর্যয়ও হয়েছে। তার পুঁজি নেমে এসেছে ৫ লাখ টাকায়।
জাহিদ হোসেন : পেশায় একজন এলএমএফ ডাক্তার। তিনি ওষুধের ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকা, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ৮৫ হাজার টাকা এবং জমি বিক্রি করে আরও ২ লাখ টাকা শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। লেনদেন করেন জামাল সিকিউরিটিজ হাউসে। দু’বছর থেকে শেয়ার ব্যবসা করছেন। ব্যবসা থেকে ভালোই লাভ হয়েছে তার। বাজারে ধস নামার আগে তার লাভ ছিল ২ লাখ টাকা। লাভের পর এখন তিনি বড় ধরনের লসের মুখে পড়েছেন। শেয়ারবাজারে একের পর এক বিপর্যয়ের কারণে তিনি তার পুঁজির প্রায় অর্ধেকই হারিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, আমি কোম্পানির মৌল ভিত্তি দেখে শেয়ার কিনেছিলাম। কিন্তু তাতেও আমি আমার পুঁজি রক্ষা করতে পারিনি। শেয়ারবাজারে ধসের কারণে তার পুঁজি ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানান, ‘আমরা নিজেদের সঞ্চয়ের টাকা, কষ্টে কামানো টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছি। আমরা কোনো চুরি করি না বা চুরির টাকাও বিনিয়োগ করিনি।’
আমির হোসেন মিজান : মিজান জানান, তিনি গত আড়াই বছরে ধাপে ধাপে শেয়ারবাজারে সাড়ে ৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। শেয়ার ব্যবসাই ছিল তার আয়ের প্রধান উত্স। একসময় চাকরি করলেও এখন সামান্য পুঁজি নিয়ে একটি ব্যবসা করছেন; পাশাপাশি শেয়ার ব্যবসাও করছেন। আগের চাকরি থেকে তিনি ৪ লাখ টাকা এবং বাকি সাড়ে ৫ লাখ টাকা ধার করে শেয়ারব্যবসায় লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, আগে চাকরি করতাম কিন্তু তাতে যে টাকা পেতাম—তা দিয়ে সংসার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। পরে চাকরি চেড়ে দিয়ে নিজে একটি ব্যবসা পরিচালনা করছি এবং পাশাপাশি শেয়ার ব্যবসা করছিলাম। আড়াই বছর ধরে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ থেকে ৪ লাখ টাকা লাভ তুলে নিয়েছি। আমির হোসেন মিজান সাম্প্রতিক বিপর্যয়ে তার পুঁজি হারিয়েছেন বলে জানান। বর্তমানে তার পুঁজির ২ লাখ টাকা চলে গেছে। তিনি বলেন, আমাদের মতো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের যে পুঁজি, তা দিয়ে অন্য ব্যবসা পরিচালনা করা খুবই কঠিন। এজন্য স্বল্প পুঁজি নিয়ে অনেকেই শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, অর্থ উপদেষ্টা কীভাবে এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়েছেন—তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এ ধরনের লোক কীভাবে উপদেষ্টা হতে পারেন এবং এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার পরও দায়িত্বে রয়েছেন, তা বুঝতে পারছি না। তাদের দায়িত্বহীন বক্তব্যের কারণে বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
জোবায়েল খান : কিশোরগঞ্জের জোবায়েল খান জানান, তিনি তার বোনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা এবং নিজের জমানো ৬০ হাজার টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু তা এখন তার পোর্ট ফলিওতে যে শেয়ার রয়েছে, তার মূল্য নেমে এসেছে মাত্র ৫০ হাজার টাকায়। বোনের ঋণের টাকা কীভাবে শোধ করবেন—এ নিয়ে তিনি উত্কণ্ঠিত। তাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
মোশাররফ হোসেন : কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মোশাররফ হোসেন মাত্র দু’মাস আগে শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামাদি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এ যুবক জমি বিক্রি করে এবং ব্যবসা থেকে ৯ লাখ টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করেছিলেন। এতে তিনি কোনো মুনাফা তো পানইনি বরং শেয়ারবাজার বিপর্যয়ে তিনি পুঁজি হারিয়েছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকারও বেশি।
সাইফুল আলম : সালাম অ্যান্ড কোম্পানিজ সিকিউরিটিজ হাউজে লেনদেন করেন সাইফুল আলম। এক্সেসরিজ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হলেও গত বছর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ শুরু করেন। এ পর্যন্ত ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এ অর্থের একটি বড় অংশ এসেছে ব্যবসা ও বাবার কাছ থেকে। একটি অংশ এসেছে প্রাইমারি মার্কেটে শেয়ার বিক্রি থেকে। এক সময় লাভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৯ লাখ টাকা। এখন লাভ তো গেছেই বরং মূলধনও কমে গেছে প্রায় ২ লাখ টাকা।
সাইফুল আলম বলেন, সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় শেয়ারবাজার নিয়ে দায়িত্বহীন বক্তব্য রাখছেন। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। বাজার যখন বেড়েছিল, তখন তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এখন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, উপদেষ্টা দায়িত্বহীন কথা বলছেন। তাদের দায়িত্বহীন বক্তব্যের জন্য বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে।
জাহিদ হোসেন : আরেকজন জাহিদ হোসেন লেনদেন করছেন সাহিক সিকিউরিটিজ হাউসে। পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি গত ৫ বছর ধরে শেয়ার ব্যবসা করে আসছেন। তিনি এ পর্যন্ত ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এর মধ্যে ব্যবসার উত্স থেকে ১০ লাখ টাকা, বাকি ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন আত্মীয়স্বজন থেকে ধার করে। ব্যবসা থেকে মুনাফা হলেও এখন মুনাফার কোনো অংশই বাকি নেই। উরপন্তু বিনিয়োগ থেকে আরও ২ লাখ টাকা কমে গেছে।
শফিকুর রহমান : শেয়ারবাজারে ২০০৭ সালে যুক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পুস্তক ব্যবসার পাশাপাশি তিনি শেয়ার ব্যবসা করছিলেন। বিনিয়োগের একটি বড় অংশই ভাইবোনদের কাছ থেকে ধার করে এনেছেন, যার পরিমাণ ৮ লাখ টাকা। বাকি ৬ লাখ টাকা জোগান দিয়েছেন নিজস্ব ব্যবসা এবং অন্যান্য উত্স থেকে। দীর্ঘদিন এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা এ বিনিয়োগকারী জানান, তিনি আড়াই লাখ টাকা শেয়ার ব্যবসা থেকে লাভ করেছেন। কিন্তু এখন তার পুঁজি কমে এসেছে সাড়ে ৮ লাখ টাকায়। সরকারের মন্ত্রীরা অজ্ঞের মতো কথা বলছেন। বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়েছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ সময় তাদের সান্ত্বনা না দিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। একসময় অর্থমন্ত্রীও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য উত্সাহ দিয়েছিলেন। এখন বিনিয়োগকারীদের সমাজের শত্রু বলা হচ্ছে।

সিরিজে টিকে রইল ইংল্যান্ড
অনলাইন ডেস্ক | তারিখ: ২৬-০১-২০১১

চলার পথ খুঁজে পেল ইংল্যান্ড। প্রথম তিন ম্যাচের তিনটিতেই হার। অ্যাডিলেড ওভালে আজ অনুষ্ঠিত চতুর্থ ওয়ানডেতে হারলেই সাত ম্যাচের সিরিজে হার মানতে হতো অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসদের। তবে এ ম্যাচে ভাগ্যদেবতা মুখ তুলে তাকিয়েছেন সফরকারীদের দিকে। অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়ে সিরিজে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে ইংল্যান্ড।
দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর আভাসটা দিয়েছিলেন জোনাথন ট্রট। সঙ্গে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ম্যাট প্রিয়রের ৬৭ আর মাইকেল ইয়ার্ডির অপরাজিত ৩৯ রান মিলিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৯৯।
অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যটা সহজ নয় মোটেই। তবে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শেন ওয়াটসন ৬৪ রানের ইনিংস খেলে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন অসিদের। শেষ পর্যন্ত সেই স্বপ্ন আর বাস্তব রূপ পায়নি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় মাইকেল ক্লার্কের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ২৯৯/৮ (৫০ ওভার)
ট্রট ১০২, প্রিয়র ৬৭, ইয়ার্ডি ৩৯*
অস্ট্রেলিয়া: ২৭৮/৭ (৫০ ওভার)
ওয়াটসন ৬৪, স্মিথ ৪৬*, হোয়াইট ৪৪

দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক | তারিখ: ২৬-০১-২০১১

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছেন, দেশে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে না। সন্ত্রাসীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আঘাত করলেই কেবল তারা আত্মরক্ষার্থে গুলিবর্ষণ করতে বাধ্য হয়।
আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাহারা খাতুন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে যখন সন্ত্রাসীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করে, তখন মানবাধিকার সংস্থাগুলো নীরবতা পালন করে কেন? তিনি প্রশ্ন করে বলেন, তখন কি মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হয় না?
সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান শিকদার, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) মোখলেসুর রহমান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ডিজি মেজর জেনারেল রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার তদন্ত নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার টেন্ডারবাজি বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে টেন্ডার-সন্ত্রাস রোধে অনলাইন (ই-টেন্ডার) টেন্ডার পদ্ধতি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমে চারটি সরকারি দপ্তরে ই-টেন্ডার চালু করা হবে। টেন্ডার-সন্ত্রাস রোধে তিনি পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সাহারা খাতুন বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিদের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা হত্যা রোধে আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় সীমান্তে ফেনসিডিল তৈরির কারখানা বন্ধ করতে কাজ করছি। কয়েকটি কারখানা এরই মধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভারতের আরও সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে। মাদক চোরাচালান বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিগত পৌরসভা নির্বাচনের সময় সরকার কোনো প্রভাব বিস্তার করেনি। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। পৌর নির্বাচনে পুলিশের কোন গাফলতি ছিল না। বাসস।
সাংসদকে অভ্যর্থনা জানাতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায়
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আজ বুধবার ক্লাস বাদ দিয়ে এক সাংসদকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে। এলাকার একটি সড়কের সংস্কারকাজের উদ্বোধন করতে ওই সাংসদ সেখানে গেলে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানায় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত বছরের এক পরিপত্র অনুযায়ী, কাউকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য ক্লাস বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের নেওয়া যাবে না।
জানা গেছে, সান্তাহার-তিলকপুর সড়কের আক্কেলপুর উপজেলা অংশের তিন কিলোমিটার সংস্কারকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর-কালাই-ক্ষেতলাল) আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ শাহিন মনোয়ারা হক। এ উপলক্ষে বেলা ১১টার দিকে তিলকপুর ভটভটি স্ট্যান্ডে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংসদকে স্বাগত জানাতে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো হয় তিলকপুর উচ্চবিদ্যালয় ও নুরনগর ইউনাইটেড কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের ক্লাস চলছিল। এ সময় প্রধান শিক্ষক ক্লাসে গিয়ে তাদের জানায়, সাংসদ আসছেন সেখানে যেতে হবে। এরপর শিক্ষকেরাই তাদের অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে তিলকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছিল। ওই সময় তিলকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বিদ্যালয়ে গিয়ে আমাকে বলেন, সাংসদ আসছেন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠানে যেতে হবে। মূলত তাঁর কথামতোই আমি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম।’
তিলকপুর নুরনগর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন বলেন, ‘সড়ক সংস্কার অনুষ্ঠানে আসতে বলা হয়েছে। এ কারণে শিক্ষার্থী ও আমরা অনুষ্ঠানে যাই।’
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘নারী সাংসদ এলাকার জন্য ব্যাপক উন্নয়নমূলককাজ করছেন। সভায় লোকজনের উপস্থিতি ঘটাতে শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানে আসতে বলেছি।’
সাংসদ শাহিন মনোয়ারা হক বলেন, ‘আমি বিদ্যালয় ছেড়ে শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানে আসতে বলিনি। স্থানীয় নেতা নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের ডেকে এনেছেন।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোকছেদ আলী মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাজমুল হুদা, আক্কেলপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান, তিলকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলাইমান আলী প্রমুখ।

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে রাজধানীতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব

    আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনের দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। বিশ্বকাপ উপলক্ষে গঠিত নিরাপত্তা কমিটি এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গঠিত জাতীয় কমিটিতে পাঠাচ্ছে। একই সঙ্গে শুক্রবার ছাড়া খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্য কর্মদিবসগুলোয় সংশ্লিষ্ট শহরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রস্তাবও পাঠানো হবে।
    আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
    বৈঠক শেষে সাহারা খাতুন এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা চলাকালে রাজধানীর প্রধান সড়ক ও ফুটপাতে ভিক্ষুক ও হকার যাতে না থাকে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই সময় ভিক্ষুকদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
    এদিকে বিদেশি খেলোয়াড়েরা যেসব সড়কে যাতায়াত করবেন, ওই সড়কগুলোয় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলেও জানান সাহারা খাতুন। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    Wednesday, January 26, 2011

    

    বক্সিং স্টাইলে ক্রিকেট খেলেন ইউসুফ !

    এই মুহূর্তে শচীন-শেবাগ-গম্ভীরকে ছাপিয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় তারকা ইউসুফ পাঠান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তাঁর মার-কাট ব্যাটিং দেখে অনেক বোদ্ধাই আসন্ন বিশ্বকাপে ভারতের বড় তারকা ও ম্যাচ উইনার হিসেবে দেখছেন তাঁকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দুটো ম্যাচে তাঁর ওপর ভর করেই ভারত জয় পেয়েছে। সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচেও বাকিদের ভয়াবহ ব্যাটিং পারফরম্যান্সের মধ্যেও অনবদ্য এক শতক হাঁকিয়ে ভারতকে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিলেন। যেখানে বাকি সব ব্যাটসম্যান ব্যর্থ, সেখানে তাঁর ব্যাটিং দলে আলাদা এক ভরসার জায়গাই তৈরী করেছে। এর পেছনের রহস্য সম্পর্কে ইউসুফ পাঠান নিজেই বলেছেন, ক্রিকেটটাকে একদমই বক্সিংয়ের মতো খেলেন তিনি।
    আজ বুধবার ভারতের অন্যতম শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে ইউসুফ জানিয়েছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা জিতিয়ে ফিরতে পারলে ভালোই লাগতো। কিন্তু সেটা হলনা। তবে তিনি মনে করেন, বিদেশের মাটিতে খেলার ক্ষেত্রে ভারত গত চারবছরে দারুণ উন্নতি করেছে। তিনি মনে করেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁদের মাটিতে লড়াই আসন্ন বিশ্বকাপে ভারতকে দারুণভাবে সহায়তা করবে।
    এতদিন দলে আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন। ছোটভাই ইরফান পাঠানতো সেই কবেই দল থেকে বেরিয়ে গেছেন। তবে তাঁর এই উত্থানের জন্য তিনি সিংহভাগ কৃতিত্ব দিয়েছেন তাঁর ছোটভাই ইরফান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। ইউসুফ বলেছেন, ইরফান সবসময়ই বলে আমার ব্যাটিং স্টাইলটা নাকি বিদেশের মাটিতে দারুণ কাজে লাগবে। সে তাঁর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাকে পরামর্শ দিয়েছে। আমি সেই মোতাবেক খেলে সাফল্য পেয়েছি।’ ছোট ভাইয়ের প্রতি ঝড়ে পড়ল তাঁর কৃতজ্ঞতা।
    বিশ্বকাপের দিকে অসম্ভব আগ্রহ নিয়েই তাঁকিয়ে আছেন তিনি। তাঁর মতে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ হলেও এটি তাঁর মধ্যে আলাদা কোনো চাপ তৈরী করছে না। ইউসুফ বলেন, ‘আমি কখনোই এসব চাপ-টাপ মাথায় রাখিনা। ব্যাপারটি অনেকটা বক্সারদের মতো। রিংয়ে নেমে নিজের মুখ সামলাতে একজন বক্সার দুটো হাতের ওপরই নির্ভর করে। আমিও ক্রিকেটটা খেলি সেভাবেই। মাঠে নেমে চাপ নিয়ে চিন্তা না করে ব্যাট চালিয়ে যাই। ভাগ্য কখনো সহায় হয়, কখনো হয়না। আমি এভাবেই খেলে যেতে চাই। এটাই আমার খেলার ধরন।’

    গোপন বিচার

    জাসদ সভাপতি ইনুসহ দুইজনের দণ্ড নিয়ে রুল জারি

    বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালে ১৯৭৬ সালের ১৪ জুন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন ও ওই ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও দলের সহসভাপতি রবিউল আলমকে দণ্ড দেওয়া কেন বেআইনি ও অসংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন।
    আজ বুধবার বেলা ১২টায় বিচারপতি এ এইচ এম শাসসুদ্দিন চৌধুরী ও শেখ মো. জাকির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁদের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
    একই আদালতে ওই সময় কর্নেল তাহেরের গোপন বিচার নিয়ে তাহের পরিবারের করা রিটের শুনানির জন্য রয়েছে।
    রিট আবেদনকরীর পক্ষের আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ জানান, একই সঙ্গে রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি হবে।
    সূত্র জানায়, আবেদনে গোপন বিচার ও তাঁদের দণ্ড প্রদানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এ ছাড়া আবেদনে ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে সামরিক আদালতে অনুষ্ঠিত বিচার অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণার পাশাপাশি তাঁদের হারিয়ে যাওয়া সামজিক মর্যাদা ফিরে পাওয়ার আরজি জানানো হয়েছে। ওই আদালতে কর্নেল তাহেরের গোপন বিচার ও দণ্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি হচ্ছে।
    জানা যায়, ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই সামরিক আদালতের রায়ে লে. কর্নেল তাহেরের ফাঁসি ছাড়াও অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। ওই সময় দেওয়া রায়ে হাসানুল হক ইনুর ১০ বছর জেল, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ১৯৮০ সালের ১৩ জুন ইনু মুক্তি পান। এ ছাড়া রবিউল আলমের পাঁচ বছর জেল, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের সাজা দেওয়া হয়।

    

    ঢাকা মেডিকেল

    বার্ন ইউনিটে চাকরি স্থায়ীর দাবিতে কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি

    ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চতুর্থ শ্রেণীর কিছু অনিয়মিত কর্মচারী ইউনিটের দায়িত্বরত প্রকল্প পরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে ইউনিটটির সামনে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে সেখানে চিকিত্সা কাজ ব্যাহত হচ্ছে এবং রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক মো. শহীদুল বারী জানান, চাকরি নিয়মিত হওয়ার আশায় ৩৭ জন কর্মী অনেক দিন ধরেই কাজ করে আসছেন। আজ সকালে তিনি সবাইকে হাজিরা খাতায় সই করতে বলেন। এতে অনিয়মিত কর্মীরা দ্বিমত পোষণ করে চাকরি নিয়মিত করার দাবি জানান। একপর্যায়ে তাঁরা দুপুর ১২টার দিকে কর্মবিরতি দিয়ে ইউনিটের সামনে অবস্থান নেন। এমনকি তাঁরা জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের চিকিত্সা কাজেও বাধা দিচ্ছেন।
    শহীদুল বারী আরও জানান, তাঁদের নিয়মিত করার জন্য তিনি মন্ত্রণালয়ের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
    অনিয়মিত কর্মীরা বলেন, এই বার্ন ইউনিটে তাঁরা বিভিন্ন চিকিত্সক ও সেবিকাদের পরিচিত হিসেবে ছয়-সাত বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রথম দুই বছর তাঁরা বেতন পেতেন, এখন তাও পান না। তাই তাঁরা ওয়ার্ডের প্রধান শহীদুল বারীর পদত্যাগ চাচ্ছেন।

    Tuesday, January 25, 2011


    বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে রাজধানীতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব
    আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনের দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। বিশ্বকাপ উপলক্ষে গঠিত নিরাপত্তা কমিটি এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গঠিত জাতীয় কমিটিতে পাঠাচ্ছে। একই সঙ্গে শুক্রবার ছাড়া খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার অন্য কর্মদিবসগুলোয় সংশ্লিষ্ট শহরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রস্তাবও পাঠানো হবে।
    আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
    বৈঠক শেষে সাহারা খাতুন এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা চলাকালে রাজধানীর প্রধান সড়ক ও ফুটপাতে ভিক্ষুক ও হকার যাতে না থাকে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই সময় ভিক্ষুকদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।
    এদিকে বিদেশি খেলোয়াড়েরা যেসব সড়কে যাতায়াত করবেন, ওই সড়কগুলোয় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলেও জানান সাহারা খাতুন। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    ‘ভারতরত্ন’ শচীন টেন্ডুলকার!

    প্রাপ্তির খাতায় কী নেই তাঁর! একজন ব্যাটসম্যান গোটা ক্রিকেট ক্যারিয়ারে যা পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তা তো পেয়েছেনই, যা স্বপ্নেরও বাইরে—তাও পেয়ে গেছেন শচীন টেন্ডুলকার। ভারতের এই ‘লিটল মাস্টারের’ বর্ণাঢ্য ও গৌরবোজ্জ্বল ক্যারিয়ারে প্রাপ্তির খাতায় নতুন এক অধ্যায় সূচিত হতে যাচ্ছে এবার। ভারতীয় মিডিয়ার খবর সত্যি হলে, ভারতরত্ন খেতাবে ভূষিত হতে যাচ্ছেন শচীন। এখন পর্যন্ত ভারতের এই সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাবে ভূষিত হননি ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে কেউই।
    টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, শচীনকে ভারতরত্ন খেতাবে সম্মানিত করতে ভারতের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ সুপারিশ করেছেন। এটি শচীনের ঐতিহাসিক খেতাব পাওয়ার সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করেছে।
    কয়েক দিন আগে ভারতের লোকসভার সদস্য সঞ্জয় নিরুপম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতরত্ন খেতাব দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা জোরালোভাবে শচীনের নাম সুপারিশ করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই হয়তো এর ফল জানতে পারব আমরা।’ ওয়েবসাইট।

    ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ

    খুলনা মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ


    ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে খুলনা মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আজ মঙ্গলবার রাত আটটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস (হল) ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
    এর আগে আজ সকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত সাতজন নেতা-কর্মী আহত হন। তাত্ক্ষণিকভাবে এর প্রতিবাদে একপক্ষ অধ্যক্ষের কক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রতিপক্ষের কয়েকজনকে বহিষ্কারের দাবি জানান। অন্যপক্ষের নেতা-কর্মীরাও অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করে। এ সময় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
    কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিমাদ্রি শেখর প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও কলেজ শাখার যুগ্ম সম্পাদক সাব্বির মাহমুদ, আরাফাত মাহমুদ ও নাঈম-উল আলমের নেতৃত্বে একটি পক্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সমাবেশে যোগ দিতে বাধ্য করছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে ভাঙচুর, মাদকসেবন ও ছাত্রীদের উত্ত্যক্তকরণে তাঁরা জড়িত উল্লেখ করে এঁদের বহিষ্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যান। কিন্তু প্রতিপক্ষরা এতে বাধা দিলে সেখানে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে।
    এদিকে ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাব্বির মাহমুদ বলেন, চাঁদাবাজি ও অছাত্রসুলভ আচরণের দায়ে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের সভাপতি চয়ন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক আসিব ইকবাল গতকাল আবারও ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
    দুই পক্ষই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে পৃথক স্মারকলিপি দেয়। জরুরি পরিস্থিতিতে ডাকা একামেডিক কাউন্সিলের সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী হামিদ আসগার অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের ঘোষণা দেন।
    পরে কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দুই পক্ষই ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে।
    উল্লেখ্য, ১১ জানুয়ারি কলেজ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পঞ্চম বর্ষের ছাত্র চয়ন বিশ্বাস ও আসিফ ইকবালকে কলেজ ও ছাত্রাবাস থেকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।

    নৌকায় ভোট দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিন: এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেছেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তাই আপনারা নৌকায় ভোট দিন।’
    ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের মহাজোটের প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সমর্থনে আয়োজিত এক জনসভায় এরশাদ এ কথা বলেন। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার বিকেলে শহরের আবদুল কুদ্দুস মাখন মুক্তমঞ্চে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।
    সভায় বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জাসদের নেতা শিরিন আক্তার, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মঈনউদ্দিন, মহাজোটের প্রার্থী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রমুখ।
    এরশাদ বলেন, ‘আমি আজ এখানে এসেছি নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার জন্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়া একসময় মহকুমা ছিল। আমি জেলা করেছি। মহাজোটের প্রার্থী মোকতাদির চৌধুরী এই এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন। কাজেই নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাদের সম্মান রাখুন।’
    এরশাদ বলেন, ‘দুর্নীতি ও দুঃশাসনে দেশ জর্জরিত ছিল। আমরা এ (দুর্নীতি) থেকে দেশকে মুক্ত করেছি। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করছি। কৃষককে বাঁচাতে সারে ভর্তুকি দিচ্ছি। কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন করতে আমরা বদ্ধপরিকর। দেশে আজ অনাহার-মঙ্গা নেই। আমরা আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি।’
    এরশাদ আরও বলেন, ‘সংবিধানে ইসলামও থাকবে, বিসমিল্লাহও থাকবে। বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। আমরা এগিয়ে চলছি উন্নয়নের দিকে। আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের সব সমস্যার সমাধান হবে। আপনার এখানে নৌকাকে বিজয়ী করুন। কথা দিচ্ছি, সব সমস্যার সমাধান করব।’
    তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিএনপির সাংসদেরা সংসদে যায় না। তাদের প্রার্থী নির্বাচিত হলে তিনিও সংসদে যাবে না। কাজেই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন। আর এই এলাকার আওয়ামী লীগের প্রার্থী রবিউল মোকতাদির মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি এলাকার উন্নয়নের জন্য সদা চেষ্টা করেন। কাজেই তিনি সাংসদ নির্বাচিত হলে এলাকার মানুষেরই বিজয় হবে।’
    এই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছিলেন রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলেও সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

    ইমপ্যাক্ট ইনডেক্সের বিচারে
    সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার ভিভ রিচার্ডস
    ৭০-এর দশকের শুরুতে ওয়ানডে ক্রিকেটের পথচলা শুরু হওয়ার পর থেকে অনেকেই ক্রিকেট বিশ্বকে মাতিয়েছেন নতুন উন্মাদনায়। অসাধারণ সব পারফরমেন্স দিয়ে জয় করে নিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের মন। তাঁদের মধ্য থেকে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার বেছে নিতে বললে হয়তো অনেকেই কিছুটা বিপদে পড়ে যেতে পারেন। কিন্তু যদি পারফরমেন্স বিচারের একটা মানদণ্ড ঠিক করে কাজটা করা হয়? তাহলে অনেকটাই সহজ হয়ে যায় সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার নির্বাচনের কাজটা। এ ধরনের একটা মানদণ্ড তৈরির কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে ভারতের জয়দীপ বর্মা ও যতীন থাকারের নেতৃত্বাধীন একটি দল। পারফরমেন্স বিচারের জন্য ওই দলের সদস্যরা বানিয়েছেন ‘ইমপ্যাক্ট ইনডেক্স’ নামের নতুন একটি মানদণ্ড। আর এই মানদণ্ডের বিচারে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের স্থানটি জয় করে নিয়েছেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ভিভিয়ান রিচার্ডস।
    সাধারণত, গড় একটা পারফরমেন্স হিসাব করেই র্যাঙ্কিং বা সেরা নির্বাচনের কাজটি করা হয়। কিন্তু নতুন এই মানদণ্ডের মূল বিবেচ্য বিষয় হলো, কোনো ম্যাচের একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কে কী রকম পারফরমেন্স দেখিয়েছেন। যেমন কঠিন একটি পরিস্থিতিতে তাঁর অবদান। ব্যাট হাতে বা বল হাতে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁর কোনো পারফরম্যান্স ম্যাচে কি ধরনের প্রভাব সৃষ্টি করেছে। তিনি কতবার স্বীয় পারফরমেন্স দিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন ইত্যাদি। দলের ভালো অবস্থার মধ্যে একটা সেঞ্চুরি করার চেয়ে দলের ভয়াবহ সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভালো একটা ইনিংস খেললে অনেক বেশি পয়েন্ট যোগ হবে ওই ক্রিকেটারের খাতায়। এভাবেই তৈরি করা হয়েছে সর্বকালের সেরা ২০ ক্রিকেটারের তালিকা।
    তালিকায় ভিভ রিচার্ডসের পর প্রথম চারটি স্থানে আছেন ইমরান খান, রিচার্ড হ্যাডলি, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ইয়ান বোথাম। এখনো অবসরে যাননি এমন খেলোয়াড়ের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন জ্যাক ক্যালিস। দক্ষিণ আফ্রিকান এই অলরাউন্ডার আছেন অষ্টম স্থানে। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রায় সব কটি ব্যাটিং রেকর্ডের মালিক শচীন টেন্ডুলকারের অবস্থান শুনলে কেউ কেউ হয়তো চমকে যেতে পারেন। ভারতের এই ব্যাটিং আইকনের জায়গা হয়েছে ১৮ নম্বরে। ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি আছেন ১৩ নম্বরে। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব আছেন জ্যাক ক্যালিসের পরেই, ৯ নম্বর অবস্থানে।
    নতুন এই তালিকাটি আগামীকালই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে ‘ইমপ্যাক্ট ইনডেক্স’।— টাইমস অব ইন্ডিয়া

    ইমপ্যাক্ট ইনডেক্সের বিচারে
    সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার ভিভ রিচার্ডস
    ৭০-এর দশকের শুরুতে ওয়ানডে ক্রিকেটের পথচলা শুরু হওয়ার পর থেকে অনেকেই ক্রিকেট বিশ্বকে মাতিয়েছেন নতুন উন্মাদনায়। অসাধারণ সব পারফরমেন্স দিয়ে জয় করে নিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের মন। তাঁদের মধ্য থেকে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার বেছে নিতে বললে হয়তো অনেকেই কিছুটা বিপদে পড়ে যেতে পারেন। কিন্তু যদি পারফরমেন্স বিচারের একটা মানদণ্ড ঠিক করে কাজটা করা হয়? তাহলে অনেকটাই সহজ হয়ে যায় সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার নির্বাচনের কাজটা। এ ধরনের একটা মানদণ্ড তৈরির কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে ভারতের জয়দীপ বর্মা ও যতীন থাকারের নেতৃত্বাধীন একটি দল। পারফরমেন্স বিচারের জন্য ওই দলের সদস্যরা বানিয়েছেন ‘ইমপ্যাক্ট ইনডেক্স’ নামের নতুন একটি মানদণ্ড। আর এই মানদণ্ডের বিচারে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের স্থানটি জয় করে নিয়েছেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ভিভিয়ান রিচার্ডস।
    সাধারণত, গড় একটা পারফরমেন্স হিসাব করেই র্যাঙ্কিং বা সেরা নির্বাচনের কাজটি করা হয়। কিন্তু নতুন এই মানদণ্ডের মূল বিবেচ্য বিষয় হলো, কোনো ম্যাচের একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কে কী রকম পারফরমেন্স দেখিয়েছেন। যেমন কঠিন একটি পরিস্থিতিতে তাঁর অবদান। ব্যাট হাতে বা বল হাতে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁর কোনো পারফরম্যান্স ম্যাচে কি ধরনের প্রভাব সৃষ্টি করেছে। তিনি কতবার স্বীয় পারফরমেন্স দিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন ইত্যাদি। দলের ভালো অবস্থার মধ্যে একটা সেঞ্চুরি করার চেয়ে দলের ভয়াবহ সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভালো একটা ইনিংস খেললে অনেক বেশি পয়েন্ট যোগ হবে ওই ক্রিকেটারের খাতায়। এভাবেই তৈরি করা হয়েছে সর্বকালের সেরা ২০ ক্রিকেটারের তালিকা।
    তালিকায় ভিভ রিচার্ডসের পর প্রথম চারটি স্থানে আছেন ইমরান খান, রিচার্ড হ্যাডলি, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও ইয়ান বোথাম। এখনো অবসরে যাননি এমন খেলোয়াড়ের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন জ্যাক ক্যালিস। দক্ষিণ আফ্রিকান এই অলরাউন্ডার আছেন অষ্টম স্থানে। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রায় সব কটি ব্যাটিং রেকর্ডের মালিক শচীন টেন্ডুলকারের অবস্থান শুনলে কেউ কেউ হয়তো চমকে যেতে পারেন। ভারতের এই ব্যাটিং আইকনের জায়গা হয়েছে ১৮ নম্বরে। ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি আছেন ১৩ নম্বরে। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব আছেন জ্যাক ক্যালিসের পরেই, ৯ নম্বর অবস্থানে।
    নতুন এই তালিকাটি আগামীকালই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে ‘ইমপ্যাক্ট ইনডেক্স’।— টাইমস অব ইন্ডিয়া
    রিয়াদে ভবন ধসে সাতজন নিহত, বাংলাদেশি নেই
    সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে প্রিন্সেস নুরা বিনতে আবদুল রহমান ইউনিভার্সিটির নির্মাণাধীন ভবন ধসে সাতজন শ্রমিক নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকালে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের ৪০০ জনেরও বেশি শ্রমিক কাজ করছিলেন। তবে হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশি কোনো শ্রমিক নেই বলে জানা গেছে। খবর ইউএনবি ও আরব নিউজ ডট কমের।
    রিয়াদে বাংলাদেশের লেবার কাউন্সেলর হারুন-অর-রশিদ সন্ধ্যায় বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে টেলিফোনে জানান, ভবন ধসের ঘটনায় কোনো বাংলাদেশি নিহত হননি। হতাহত ব্যক্তিরা ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিক।
    সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে তিনজনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। সৌদি বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মুহাম্মদ আল হুবেইলের বরাত দিয়ে আরব নিউজ ডট কম জানায়, ভবন নির্মাণকাজে শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য নির্মিত রেলিং ধসে তিনজন নিহত ও ১১ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের ন্যাশনাল গার্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান, উদ্ধার অভিযানে বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের বেশ কয়েকটি ইউনিট ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। আহত ব্যক্তিদের হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

    Current News

    অষ্টম অধিবেশনে যোগ না দিলে সদস্যপদ হারাবেন খালেদা
    জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন কাল মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় শুরু হচ্ছে। নবম জাতীয় সংসদের অষ্টম এই অধিবেশনও শুরু হচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অনুপস্থিতিতে। তবে ৪৪ কার্যদিবসের এ অধিবেশনে যোগ না দিলে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াসহ চারদলীয় জোটের অধিকাংশ সাংসদ সদস্যপদ হারাবেন।
    আজ সোমবার বিকেলে সংসদের কার্যোপদেষ্টা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ৪৪ কার্যদিবসের এই অধিবেশন চলবে আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত। কার্যোপদেষ্টা কমিটির সভাপতি স্পিকার আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, চিফ হুইপ আবদুস শহীদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তোফায়েল আহমেদ, ফজলে রাব্বী মিয়া ও রহমত আলী অংশ নেন। তবে কমিটির সদস্য বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার সভায় যোগ দেননি। এর মধ্য দিয়ে ১৫ বছর ধরে বিরোধীদলীয় নেতার এ কমিটির সভায় যোগ না দেওয়ার ধারা বজায় রইল।
    সূত্র জানায়, বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া টানা ৫০ দিন সংসদে অনুপস্থিত রয়েছেন। এই অধিবেশন ৪০ কার্যদিবস পার হলে এবং তিনি এর মধ্যে অধিবেশনে যোগ না দিলে তাঁর সদস্যপদ শূন্য হবে। গত বছরের ৪ এপ্রিল তিনি সর্বশেষ সংসদে যোগ দিয়েছিলেন। প্রায় একই রকম টানা অনুপস্থিতি রয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অধিকাংশ সাংসদের। তবে টানা অনুপস্থিতির দিক থেকে (৫৭ দিন) প্রথমে রয়েছেন বিএনপির বরকতউল্লা ভুলু। সংবিধানের ৬৭(খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে স্পিকারের অনুমতি ছাড়া কোনো সদস্য টানা ৯০ দিন সংসদে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সদস্যপদ শূন্য হবে।
    বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক আজ বলেন, বিরোধী দল অধিবেশনে যোগ দিচ্ছে না। সংসদে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
    সংসদের চিফ হুইপ আবদুস শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, সংসদের এই অধিবেশন ৪৪ কার্যদিবস চলবে। বিরোধী দলের সদস্যদের টানা গড় অনুপস্থিতি ৪৮ দিন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সদস্যপদ রক্ষার জন্য তাঁরা এ অধিবেশনে যোগ দেবেন।
    সংসদের রেওয়াজ অনুসারে বছরের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সংসদে ভাষণ দেবেন। এরপর চিফ হুইপ ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আনবেন। এ প্রস্তাবের ওপর ৪৪ ঘণ্টা সাধারণ আলোচনা শেষে ধন্যবাদ প্রস্তাব সংসদে গৃহীত হবে।
    কার্যোপদেষ্টা কমিটির সভায় জানানো হয়, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর পর এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা হবে। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি অধিবেশন আবার শুরু হবে। প্রতিদিন অধিবেশন শুরু হবে বিকেল সাড়ে চারটায়, চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত।
    জানা গেছে, সভায় আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বিষয়টি স্পিকারকে নজরে রাখার পরামর্শ দেন। সভায় উপস্থিত একজন সদস্য বিশ্বকাপ খেলার টিকিটের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন।

    Monday, January 24, 2011

    Cricket

    দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ অধরাই থাকল ধোনিদের
    দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ জয় অধরাই থাকল ধোনিদের। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডে জিতলেও সিরিজ জয় করা হয়নি। তাই সেঞ্চুরিয়ানে আজ জিতলে সিরিজের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসও ধরা দিত ধোনিদের হাতে। কারণ এর আগে স্মিথ-ক্যালিসদের দেশে ভারত কোনো ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারেনি। কিন্তু ধোনিরা পারলেন না। অপেক্ষা পরবর্তী কোনো সিরিজ পর্যন্ত।
    আজ মেঘলা আকাশ দেখে টস জিতে ফিল্ডিংই নিয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। দলীয় ১৬ রানেই প্রোটিয়া অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথকে ফিরিয়ে দিয়ে ভারতীয় বোলাররা অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সম্মানই জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাশিম আমলার অনবদ্য সেঞ্চুরি শেষ পর্যন্ত ভারতের সব স্বস্তি-আনন্দকে ছাপিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পৌঁছে দেয় চ্যলেঞ্জিং এক সংগ্রহে। ৪২তম ওভারে বৃষ্টি নামলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস থেকে চার ওভার কমিয়ে দেন ম্যাচ রেফারি। কিন্তু ততক্ষণে আমলা ও ফনউইকের কল্যাণে দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাড় করায়। বৃষ্টি শেষে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে বেশ কয়েকটি উইকেট হারালেও ইনিংস শেষে স্পিংবকদের সংগ্রহ দাড়ায় ২৫০/৯। স্কোরটা সমীহজাগানিয়াই। অন্তত, সাম্প্রতিককালে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ফর্মহীনতা ৪৬ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার ২৫০ রানকে একটু কঠিনই করে তুলেছে।
    আমলা দৃপ্ত হাতে এক দিক ধরে রেখে করেছেন ১১৬ রান। ফনউইক ৫৬ রান করে তাঁকে দিয়েছেন সঙ্গ। এর পাশাপাশি জেপি ডুমিনির ৩৫ দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহে রেখেছে বড় ব্যবধান।
    ভারতের পক্ষে মুনাফ প্যাটেল, জহির খান ও যুবরাজ সিং নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেছেন সাত উইকেট।
    ২৫১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। প্রথম ১২ ওভারেই সাজঘরে ফেরেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, মহেদ্র সিং ধোনি, পার্থিব প্যাটেল, যুবরাজ সিং। দলের রান তখন মাত্র ৬০। এর পর ৬০ থেকে ১১৯ রানে যেতে ভারত হারায় আরও দুই উইকেট। এর পর জহির খানকে নিয়ে হাল ধরেন ইউসুফ পাঠান। ৮টি চার ও ৮টি ছয়ে ৭০ বলে ১০৫ রানে ইউসুফকে সাজঘরে পাঠান মরনে মরকেল। ভারতের রান নয় ইউকেটে ২১৯। এই জুটিতে জহিরের অবদান ২৪। এরপর ২১৯ থেকে ২৩৪ রানে যেতেই সব ইউকেট হারায় ভারত। মরনে মরকেল নেন ৪টি ইউকেট। ভারতকে হারিয়ে ৩-২ এ সিরিজ জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা।
    সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরা হন হাশিম আমলা। সিরিজ সেরা হন মরনে মরকেল। রয়টার্স ও ওয়েবসাইট।

    Sports

    অস্ট্রেলিয়ার জয় ৪ উইকেটে
    দিনটা যে অস্ট্রেলিয়ার, তা সকালেই জানান দিয়েছিলেন ব্রেট লি। ২৭ রানে তিনজন ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে ম্যাচটি এনে দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার হাতের মুঠোয়। কোনোমতে, জোনাথন ট্রটের ইনিংসের ওপর ভর করে ইংল্যান্ড দল নিজেদের সংগ্রহকে নিয়ে যান ২০০ রানের ওপর। তবে সেই রানই ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার জন্য কঠিন মনে হচ্ছিল। দলের সংগ্রহ ১০০ না পেরোতেই পাঁচজন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খুব সম্ভবত ম্যাচটির আশা ছেড়েই দিয়েছিল তারা। তবে, অসিদের চিরন্তন ‘নেভার সে ডাই’ মনোভাবটি মাঝের কয়েক দিন মুখ লুকিয়ে থাকার পর, আবার যে ফিরে আসছে, তারই একটা বাস্তব নমুনা দেখালেন ডেভিড হাসি। স্মিথ ও হেস্টিংসকে সঙ্গী করে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ পর্যন্ত তিনি নিয়ে গিয়েছেন জয়ের বন্দরে। অ্যাশেজ সিরিজে হতাশার পর ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের পথে অনেক দূরই এগিয়ে গিয়েছে তারা। সিডনিতে আজকের ম্যাচে ৪ উইকেটের ব্যবধানে জয়ের মাধ্যমে তারা সিরিজে এগিয়ে রয়েছে ৩-০ ব্যবধানে। এই মুহূর্তে সিরিজ জয়কে খুব কাছে থেকেই দেখতে পাচ্ছে তারা।
    সিডনিতে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংই বেছে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু শুরুটা ছিল খুবই বাজে। দলীয় এক রানেই ব্রেট লির বলে প্রিয়র এলবির ফাঁদে পড়েন। এরপর অধিনায়ক এন্ড্রু স্ট্রাউস জোনাথন ট্রটকে সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এক ভুল বোঝাবুঝিতে দুঃখজনকভাবে ২৩ রানে শেষ হয় স্ট্রাউসের সম্ভাবনাময় ইনিংস। এরপর ইয়ান বেলও সঙ্গী হন প্রিয়র ও স্ট্রাউসের। দলের রান তখন ৬১। এরপর মরগান ও ট্রটের মধ্যে গড়ে ওঠে ৫৭ রানের জুটি। ট্রট শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৮৪ রানে। মরগানের সংগ্রহ ছিল ৩০। অস্ট্রেলীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ইংলিশদের রান তোলা কঠিন হয়ে পড়ার মুখে শেষদিকে হাল ধরেন রাইট ও ওয়াকস। রাইটের ৩২ ও ওয়াকসের ১২ রানে কোনোমতে ২০০ রানের কোটা পার হয় ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ব্রেট লি আজ সিডনিতে দীর্ঘদিন পড়ে জ্বলে উঠে দলে নিজের অন্তর্ভুক্তির যথার্থতা প্রমাণ করেন ভালোভাবেই। লি’কে যোগ্য সঙ্গ দেন ডোহার্টি। ৩৭ রানের বিনিময়ে তাঁর সংগ্রহ ছিল ২ উইকেট। এ ছাড়া হেস্টিংস, ওয়াটসন ও ডেভিড হাসি প্রত্যেকেই নেন ১টি করে উইকেট।
    জবাবে অস্ট্রেলিয়া ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ওয়াটসন, মার্শ ও মাইকেল ক্লার্ককে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায়। দলীয় ৯২ রানে ক্যামেরন হোয়াইট আউট হলে ইংল্যান্ডের জয়ের আশা দেখা দেয়। ১০০ রানে ব্র্যাড হাডিন কলিংউডের বলে আউট হলে ২১৪ রানও অস্ট্রেলিয়ার জন্য দূরের কল্পনা মনে হচ্ছিল। তবে ব্যাট হাতে শেষ চমকটি দেখান ডেভিড হাসি। তাঁর লড়াকু ৬৮ রান ধীরে ধীরে অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে আসে জয়ের খুব কাছে। ট্রেমলেট ও কলিংউডের জোড়া উইকেট আশা জাগালেও নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয় ইংল্যান্ডকে ম্যাচটিতে ৪ উইকেটে হেরে। রয়টার্স।
    সংক্ষিপ্ত স্কোর
    ইংল্যান্ড ২১৪ (৪৮ ওভার)
    ট্রট ৮৪*
    ব্রেট লি ৩/২৭
    অস্ট্রেলিয়া ২১৫/৬ (৪৬ ওভার)
    ডেভিড হাসি ৬৮
    (অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে জয়ী)
    মঙ্গলবার দুই স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শুরু হবে: অর্থমন্ত্রী
    অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী মঙ্গলবার থেকে আবারও দুই স্টক এক্সচেঞ্জে যথারীতি লেনদেন শুরু হবে। সূচকের সার্কিট ব্রেকার থাকছে না বলে জানান তিনি। পুঁজিবাজার থেকে খুব বেশি টাকা যায়নি বলেও মন্তব্য করেন মুহিত।
    আজ রোববার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব কথা বলেন।
    এর আগে আজ সকাল থেকে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাজারে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
    অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে বাজার বন্ধ রাখা হবে না। বাজারে স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বাজারকে নিজস্ব গতিতে চলতে দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) পরামর্শ কমিটি এখন থেকে ঘন ঘন বৈঠকে বসবে। এ ছাড়া বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। বুকবিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত রাখার কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
    সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, এসইসির চেয়ারম্যান জিয়াউল হক খন্দকার এবং ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।

    News

    হলে ছাত্র ওঠা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১
    ছাত্র একজন। কিন্তু ছাত্রলীগের দুই পক্ষই তাঁকে হলে উঠিয়ে বাহাদুরি নিতে চায়। পরিণামে বাধল সংঘর্ষ। এভাবেই হলকেন্দ্রিক অসুস্থ ছাত্ররাজনীতির চেহারাটি খুব কাছ থেকে দেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নবাগত শিক্ষার্থী।
    ঘটনাটি ঘটেছে আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলে। এতে আহতও হয়েছেন একজন।
    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বিভাগের এক নবীন ছাত্র ভর্তি-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে জিয়া হলে গেলে তাঁকে হলে ওঠাতে চান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত হোসেনের পক্ষের কর্মী হাসান (মার্কেটিং বিভাগ তৃতীয় সেমিস্টার)। অন্যদিকে বিভাগের ছোট ভাই—এ দাবিতে ছাত্রটিকে তাঁর দিকে টানতে চেষ্টা করেন সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমানের পক্ষের কর্মী রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র বুরহান।
    এ নিয়ে বিরোধের ফলে বুরহান ও তাঁর বন্ধুরা মিলে কলাভবনের সামনে হাসানকে মারধর করেন। আহত হাসানকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়। পরে রিফাতের কর্মীরা রড, হকিস্টিক ও ক্রিকেট স্টাম্প নিয়ে সাইফুরের পক্ষের কর্মীদের ধাওয়া দেয়।
    এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
    সহকারী প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, ‘টিএসসিতে লাইনে দাঁড়ানো এবং হলে ছাত্র ওঠানো—এই দুই কারণে ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’