Thursday, January 27, 2011


কেস স্টাডি শেয়ারবাজার :
অনিশ্চয়তায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা : আমরা দেশের শত্রু বা চোর নই : টাকার উত্সও অনন্ত নয়
জাহেদ চৌধুরী/কাওসার আলম
শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক ধস কেলেঙ্কারিতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আর্থিক ক্ষতি তারা কিভাবে পুষিয়ে নেবেন, শেয়ারবাজার থেকে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকা কিভাবে লুটে নিয়েছে—এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। শেয়ারবাজারে ধস ও আস্থাহীনতা সৃষ্টির জন্য সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসএইসি) ভুল সিদ্ধান্তের কথা স্বীকার করেছেন। এর আগে ‘লাভ হলে মিষ্টি খাওয়ান না, লস হলে রাস্তায় নেমে আসেন’ বলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উপহাস করে মন্তব্য করেছেন। লাভের আশায় ব্যবসায় নামলে লসের মানসিকতাও থাকতে হবে বলে নসিহত করেছেন। তার এ ধরনের বক্তব্য নিয়ে চলছে বিতর্ক। সমালোচনা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের দুই মন্তব্য নিয়েও। গত শুক্র ও শনিবার খুলনা এবং ঢাকায় দু’টি অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজার ধসে দেশের অর্থনীতির কোনো ক্ষতি হবে না। বিনিয়োগ করে লস হলে রাস্তায় নেমে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা দেশের শত্রু। অর্থের অনন্ত উত্স বা চুরির টাকা হলেও অতিমূল্যায়িত শেয়ারবাজারে কেউ বিনিয়োগ করে না বলে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন তা কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না।
এ প্রেক্ষাপটে আমরা গতকাল সরেজমিনে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে গিয়ে বেশ কিছু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলেছি। জানার চেষ্টা করেছি তাদের বিনিয়োগের উত্স, শেয়ারবাজারে আসার প্রেক্ষাপট, সামাজিক অবস্থা, শেয়ারবাজার নিয়ে মূল্যায়ন। এছাড়া ১৫টি ব্যাংকের শেয়ারবাজার থেকে আয় শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড হিসেবে না দেয়ার সর্বশেষ সরকারি সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের অভিমত জানার চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বোপরি শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য সম্পর্কে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়াও পাওয়া গেছে সরেজমিন অনুসন্ধানে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে তাদের বিনিয়োগের কাহিনী তুলে ধরে বলেছেন, আমরা দেশের শত্রু বা চোর নই। আমাদের টাকার উত্সও অনন্ত নয়। আমাদের জন্য যদি সরকারের কোনো উপদেষ্টার মন না কাঁদে, শেয়ারবাজারের ধসে দেশের অর্থনীতির যদি কোনো ক্ষতি না হয়, তবে এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আমাদের অর্থের উত্সকে চুরির টাকা বলা, আমাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা, উপরন্তু পুলিশ দিয়ে লাঠিপেটা করে মাথা ফাটিয়ে দিয়ে গ্রেফতার নির্যাতন করার পরও সরকারের উপদেষ্টার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের প্রতিহত করার হুমকি একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে বড়ই বেমানান। তারা বলেছেন, সর্বশেষ ১৫টি ব্যাংকের শেয়ারবাজার থেকে আয় করা লাভের টাকা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ না করার সিদ্ধান্ত ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের অর্থ সরকারি উদ্যোগে কেড়ে নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ব্যাংকের হাতে তুলে দেয়ার শামিল। দীর্ঘমেয়াদে শেয়ার ধরে রেখে রসের টাকা কিছুটা পুষিয়ে নেয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এটার পক্ষে বড় অন্তরায়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খুব ভালো মৌল উত্স, পিই রেশিও দেখে সচেতনভাবে বিনিয়োগ করার পরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গত দেড় মাসে প্রায় আড়াইহাজার পয়েন্ট সূচক পতন ও শেয়ারবাজার (ডিএসই) থেকে সাড়ে ৮৪ হাজার কোটি টাকা মূলধন লস এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) মূলধন ৮০ হাজার কোটি টাকা কমে যাওয়ার পর সর্বনিম্ন ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। শতকরা ৩৫ ভাগের নিচে ক্ষতি হয়েছে এমন কোনো ক্ষুদে বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়নি। তবে যারা গত দু’মাসে শেয়ারবাজারে ব্যবসায় নেমেছেন তাদের এই টাকা গেছে মূল থেকে। অক্টোবরের আগে যারা নেমেছেন তাদের অধিকাংশের গেছে লাভের টাকা থেকে। গত ৫ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের সর্বোচ্চ সূচকের দিনের সঙ্গে তুলনা করে গত ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দফায় দফায় দরপতনের তুলনা করে এ হিসাবে করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও কৃষি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, শেয়ারবাজার থেকে সিন্ডিকেট প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এর পরিমাণ আরও অনেক বেশি। গতকাল ইব্রাহিম খালেদকেই সরকার শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
শেয়ারবাজারে টাকা সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে অনেকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করছেন সরকারের একজন উপদেষ্টার দিকে। অন্যদিকে অপর এক মন্ত্রীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) ও ওশান কোম্পানি লিমিটেডের (ওসিএল) বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের মাধ্যমে প্রাইমারি শেয়ারের অতিমূল্যায়ন করে প্রায় ১৬শ’ কোটি টাকা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তুলে নেয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে কেপিসিএল-এর ১০ টাকার শেয়ার প্রিমিয়ামসহ ১৯৪ টাকা ধরে প্রাইমারি শেয়ার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের দেয়া হয়েছে। যেখানে কেপিসিএল-এর শেয়ার বর্তমানে বাজারে মাত্র ৯৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোম্পানিগুলো যাতে বাইব্যাক পদ্ধতিতে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শেয়ারগুলো বিক্রিত মূল্যে কিনে নেয় সে দাবিও উঠেছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। এছাড়া মবিল যমুনা ও এমআই সিমেন্ট এ দুটি কোম্পানি আইপিওর মাধ্যমে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। সাময়িকভাবে এই দুই কোম্পানির শেয়ার মার্কেটে আসা বন্ধ রয়েছে। এটা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুদে বিনিয়োগকারীদের বিপুল অংকের টাকা দ্রুত তারা যাতে তুলে নিতে পারে এবং প্রাইমারি শেয়ারের লটারি হয় সে দাবিও উঠেছে।
সরকার এ মধ্যে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের কতটুকু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পক্ষে গেছে এবং কতটুকু বড় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে গেছে, তা নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক চলছেই।
কেসস্টাডি : আশফাক হোসেন। বয়স ৪৫। বেসরকারি চাকরি করেন। স্ত্রীও চাকরি করেন। দু’ছেলে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে। রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় থাকেন। হঠাত্ করেই বাসা ভাড়া বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। স্কুলে সন্তানদের ফিও বেড়েছে। অফিসের বেতনও আটকা পড়েছে। বিকল্প আয়ের সন্ধানে নিজেকে যুক্ত করেন শেয়ার ব্যবসায়। ১১ নভেম্বর বিও একাউন্ট খোলেন। প্রথমে স্ত্রীর চাকরির জমানো এক লাখ টাকা। তারপর আস্তে আস্তে ৩ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ, প্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে লাভ দেয়ার কথা বলে ধার। এই মিলে ৮ লাখ টাকা। গত ৫ ডিসেম্বরে এক মাসেরও কম সময়ে লাভের খাতায় উঠেছিল ৩৫ হাজারের কিছু বেশি। অবস্থা কাটিয়ে উঠতে ৮ ডিসেম্বর প্রথম বড় ধরনের পতনের পর বন্ধুর কাছ থেকে ২০ শতাংশ বার্ষিক সুদে আরও ৩ লাখ টাকা ডিড করে নেন তিনি। নিজে থেকে যোগ করেন ২৫ হাজার। এই মিলে সোয়া ১২ লাখ টাকার বিনিয়োগ। ২০ জানুয়ারিতে তার পোর্ট ফোলিওতে ৩৫ হাজার টাকার লাভ নিঃশেষ হয়ে তার সঙ্গে লস যোগ হয়েছে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৬০ টাকা ১৭ পয়সা। পূবালী ব্যাংকের একটি ব্রোকারেজ হাউসে তার বিও একাউন্টের মাধ্যমে ট্রেড করেন। তার মন্তব্য, অর্থ উপদেষ্টা আমাদের চোর বলেছেন, টাকার উত্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দেশপ্রেম নিয়ে কথা বলেছেন, কষ্ট পেয়েছি। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি তিনি। বললেন, অর্থ উপদেষ্টা আমাদের বোকা বা পাগল বললে হয়তো এতো কষ্ট পেতাম না। কারণ, বোকা না হলে তাদের মদতপুষ্ট সিন্ডিকেটের ফাঁদে পা দিয়ে হয়তো এভাবে বিনিয়োগে আসতাম না। এখনও আমরা বুক বেঁধে আছি একদিন হয়তো মূলটুকু ওঠে আসবে সে আশায়। কিন্তু ১৫ ব্যাংকের শেয়ারবাজারের লাভ আমরা পাব না। মঙ্গলবারের পত্রিকায় এ খবর দেখার পর হতাশা একধাপ বেড়েছে। কবে আমরা ক্ষতি পুষিয়ে মূলটুকু নিয়ে বের হয়ে আসতে পারব? ব্যাংকের ঋণ, বন্ধুর ঋণ কীভাবে শোধ করব। ভাইয়ের টাকা কীভাবে ফেরত দেব। চাকরির যদি কিছু হয়, তবে ছেলেদের পড়ার কি হবে? এসব ভেবে কতদিন এভাবে মাথা ঠিক রাখতে পারব। সুস্থ থাকতে পারাই এখন জরুরি। আর অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে হয়তো অর্থমন্ত্রী বা অর্থ উপদেষ্টা আমাদের পাগল বললে তা নিয়ে আপত্তি করার মতো পরিস্থিতি থাকবে না।
আয়েশা সিদ্দিকা : পূবালী ব্যাংকের ব্রোকারেজ হাউসে বসে গতকাল কথা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব গৃহিণী আয়েশা সিদ্দিকার সঙ্গে। তার সঙ্গে ছিল মতিঝিল আইডিয়ালে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া ছেলে। স্বামী নোয়াব আলী তাঁত বোর্ডে চাকরি করতেন। মারা গেছেন ২০০৮ সালের অক্টোবরে। সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ কিভাবে চালাবেন এ নিয়ে যখন দিশেহারা তখন ভাইয়ের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নিয়ে শুরু করেন শেয়ার ব্যবসা। ২০০৯ সালের মে মাসে শেয়ারবাজারে আসেন। নিজের গহনা বিক্রি করে ১ লাখ টাকা যোগ করেন। পর্যায়ক্রমে স্বামীর সঞ্চয় ও পেনশনের টাকা সবকিছুই নিয়ে এসেছেন শেয়ারবাজারে। এক পর্যায়ে তার বিনিয়োগ এসে পৌঁছায় ১৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকায়। ব্যাংকের ব্রোকারেজ হাউজ থেকে মার্জিন ঋণ পর্যায়ক্রমে গিয়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ ২৮ হাজার টাকায়। লাভসহ একপর্যায়ে মূলধন দাঁড়ায় ৩৬ লাখ টাকায়। লাভ থেকে ৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা তুলে আনেন এক দফায়। শেয়ারবাজারের টাকা দিয়ে সংসার ও ছেলেদের পড়ালেখার খরচ মোটামুটি চালিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পর থেকেই হঠাত্ করেই মাথার ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়তে থাকে। ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে ২০ জানুয়ারি গিয়ে পৌঁছায় ১২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। পোর্টফোলিও দেখিয়ে বললেন, এখন লাভ তো গেছেই, ব্যাংকের ঋণ শোধ করে মূল নিয়েই টানাটানি পড়বে। তাই খোঁজখবর নিতে এসেছেন। এক ছেলে বগুড়ায় ডাক্তারি পড়ে অন্য ছেলে আহসানউল্লাহ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। কথা বলতে গিয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে বললেন, এতিম ছেলেদের রিজিক ভেবে এতোদিন বেশ ভালোই কাটছিল। সামনের দিন নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি। অর্থমন্ত্রী ও অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের কষ্ট বুঝতে না চাইলে আমরা কার কাছে যাব।
রবীন্দ্র চন্দ্র রায় : বয়স ৫৯। ২ বছর আগে অবসরে গেছেন। গত জুলাইয়ে শেয়ারবাজারে ঢুকেছেন। পর্যায়ক্রমে ৭ লাখ টাকা মূলধন দাঁড়িয়েছিল। লাভ মিলে সেটা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকায় পৌঁছেছিল। সম্প্রতি লস হয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। মূলের ওপর হাত পড়েছে। চিন্তায় আছেন কবে মূলধনও যায়। বললেন, ভালো মৌলভিত্তি দেখে মূলত ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারের আয় ডিভিডেন্ড হিসেবে দেয়া যাবে না বলার পর কিভাবে ক্ষতি পোষাবো তা ভেবে পাচ্ছি না। সরকারের এই সিদ্ধান্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। লাভ হবে ব্যাংকের মতো প্রাতিষ্ঠানিক বড় বিনিয়োগকারীদের। মন্ত্রী উপদেষ্টার কথায় কিছু যায় আসে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ৫৭ বছর চাকরি করে পেনশনের টাকা দিয়ে কোনভাবে সময় পার করছিলাম। সরকারের লোকদের উপহাস দেখলে কষ্ট পাই। কিন্তু কষ্টের কথা কার কাছে বলব। শোনার তো কেউ নেই।
মজিবুর চৌধুরী : একসময় পরিবহন সেক্টরে কাজ করতেন। কিন্তু ২ বছর আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর শেয়ার ব্যবসায়ী হয়েছেন। লেনদেন করেন মিডওয়ে সিকিউরিটিজ হাউসে। তিনি ধাপে ধাপে শেয়ার ব্যবসায় ৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এর মধ্যে ডিপিএস ভাঙিয়ে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, বোনের কাছ থেকে ধার করে ৫০ হাজার টাকা এবং নিজস্ব সঞ্চয় থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এ টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে তিনি লাখ খানেক টাকার মতো লাভও করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে তার মুনাফার অংশ তো বটেই পুঁজির একটি বড় অংশই তিনি হারিয়েছেন। বিপর্যয়ের কারণে তার মূলধন নেমে এসেছে অর্ধেকে। তিনি বলেন, এখন অবস্থা খুবই খারাপ। পুঁজির একটি বড় অংশই আমি হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমার পুঁজি অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিনিয়োগের ৩ লাখ টাকার মধ্যে দেড় লাখ টাকা নেই।
রফিকুল ইসলাম : এনকর সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করেন। পেশায় এখনও ছাত্র। বাড়ি থেকে মাসে মাসে খরচের টাকা না এনে বাবার কাছ থেকে বলে-কয়ে ২ লাখ টাকা নিয়ে শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। শেয়ারবাজার থেকে যে মুনাফা হবে তা দিয়ে নিজের খরচ মেটানোর লক্ষ্যে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তবে শুধু বাবার কাছ থেকেই নয়, বোনের কাছ থেকে ১ লাখ এবং বন্ধুবান্ধব থেকে আরও ১ লাখ টাকা ধার করে ধাপে ধাপে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। গত ১০ মাসে শেয়ার ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকার মতো তার লাভ হয়েছিল। কিন্তু এখন তার পুঁজি ৪ লাখ টাকা থেকে কমে এসে দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখ টাকায়। অর্থাত্ পুঁজির দেড় লাখ টাকাই তিনি হারিয়েছেন। তিনি আরও জানান, তার বাবা পেশায় একজন কৃষক। তিনি জায়গা বন্ধক রেখে এবং অন্যান্য উত্স থেকে তাকে ২ লাখ টাকা জোগান পেয়েছিল। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাদের কষ্টের টাকা শেয়ারবজারে বিনিয়োগ করেছেন। শেয়ারবজারে বিনিয়োগের জন্য আমাদের আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখন বিনিয়োগ করে আমরা আমাদের পুঁজি হারাচ্ছি।
তিনি বলেন, যারা বড় বিনিয়োগকারী, তারা কোথা থেকে টাকা এনেছেন, তাদের টাকার উত্স কী—তা বলতে পারব না। কিন্তু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাদের কষ্টে উপার্জিত টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। অর্থ উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, এখন তারই উচিত কারা চুরির টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে—তা খুঁজে বের করা। এতে যদি সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে এ সরকারের ব্যর্থতা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
শাহ আলম সোহাগ : মডার্ন সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করা শাহ আলম সোহাগ জানান, এক বছর আগে তিনি শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এর আগে তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি যে টাকা নিয়ে এসেছেন তার প্রায় পুরো টাকাই তিনি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তার মধ্যে ১ লাখ টাকা তিনি ধার করেছেন। তবে শেয়ারবাজারে বিপর্যয়ের কারণে তার লাভের পুরোটাই তিনি হারিয়েছেন। এখন তার মূলধনের এক-তৃতীয়াংশ তিনি হারিয়েছেন। অর্থ উপদেষ্টা জানেন না সাধারণ মানুষ কত কষ্ট করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য টাকা নিয়ে আসছেন। বিভিন্ন উত্স থেকে তারা টাকা নিয়ে আসছেন; কিন্তু কেউ চুরির টাকা নিয়ে আসেননি। এ ধরনের দায়িত্বহীন কথাবার্তার জন্য অন্য দেশ হলে অর্থ উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হতো। কিন্তু তা হচ্ছে না। এ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।
মিজানুর রহমান সবুজ : মিডওয়ে সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করেন মিজানুর রহমান সবুজ। ডিগ্রি পাস করে কোনো চাকরি না পেয়ে শেয়ার ব্যবসা করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন বলে জানান তিনি। শেয়ারবাজারে তিনি ৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পরিবার থেকেই তাকে এ টাকা জোগান দেয়া হয়েছে। সাড়ে তিন বছর শেয়ার ব্যবসা থেকে যে পরিমাণ মুনাফা করেছেন, তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণ পুঁজি হারিয়েছেন। তিনি জানান, দেশে কর্মসংস্থান নেই, চাকরি পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বেকার যুবকরা শেয়ার ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন। কিন্তু শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পথে বসানোর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে তার মূলধনের প্রায় অর্ধেক অংশই হাওয়া হয়ে গেছে। অর্থ উপদেষ্টাকে প্রমাণ করতে হবে কোথা থেকে টাকা চুরি করে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি কীভাবে জানলেন বিনিয়োগকারীরা টাকা চুরি করে এনেছেন। এটি প্রমাণ করতে না পারলে তার বিচার চাই। যারা বাজার ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করা হোক। আমরা তাদের বিচার চাই।
আহসান কবির : আহসান কবির নামের অপর এক বিনিয়োগকারী জানান, একসময় তিনি চাকরি করতেন। কিন্তু সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। সংসারের ব্যয় নির্বাহে শেয়ার ব্যবসাই তার আয়ের অন্যতম উত্স ছিল। চাকরি এবং নিজের সঞ্চয় থেকে যে টাকা পেয়েছেন, তার প্রায় সবটুকুই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি শেয়ারবাজারে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে জানান। তিনি দেড় বছর আগে শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। কিন্তু শেয়ারবাজারের বিপর্যয়ের সঙ্গে তার ভাগ্য বিপর্যয়ও হয়েছে। তার পুঁজি নেমে এসেছে ৫ লাখ টাকায়।
জাহিদ হোসেন : পেশায় একজন এলএমএফ ডাক্তার। তিনি ওষুধের ব্যবসা থেকে ১ লাখ টাকা, স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ৮৫ হাজার টাকা এবং জমি বিক্রি করে আরও ২ লাখ টাকা শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। লেনদেন করেন জামাল সিকিউরিটিজ হাউসে। দু’বছর থেকে শেয়ার ব্যবসা করছেন। ব্যবসা থেকে ভালোই লাভ হয়েছে তার। বাজারে ধস নামার আগে তার লাভ ছিল ২ লাখ টাকা। লাভের পর এখন তিনি বড় ধরনের লসের মুখে পড়েছেন। শেয়ারবাজারে একের পর এক বিপর্যয়ের কারণে তিনি তার পুঁজির প্রায় অর্ধেকই হারিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, আমি কোম্পানির মৌল ভিত্তি দেখে শেয়ার কিনেছিলাম। কিন্তু তাতেও আমি আমার পুঁজি রক্ষা করতে পারিনি। শেয়ারবাজারে ধসের কারণে তার পুঁজি ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানান, ‘আমরা নিজেদের সঞ্চয়ের টাকা, কষ্টে কামানো টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছি। আমরা কোনো চুরি করি না বা চুরির টাকাও বিনিয়োগ করিনি।’
আমির হোসেন মিজান : মিজান জানান, তিনি গত আড়াই বছরে ধাপে ধাপে শেয়ারবাজারে সাড়ে ৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। শেয়ার ব্যবসাই ছিল তার আয়ের প্রধান উত্স। একসময় চাকরি করলেও এখন সামান্য পুঁজি নিয়ে একটি ব্যবসা করছেন; পাশাপাশি শেয়ার ব্যবসাও করছেন। আগের চাকরি থেকে তিনি ৪ লাখ টাকা এবং বাকি সাড়ে ৫ লাখ টাকা ধার করে শেয়ারব্যবসায় লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, আগে চাকরি করতাম কিন্তু তাতে যে টাকা পেতাম—তা দিয়ে সংসার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। পরে চাকরি চেড়ে দিয়ে নিজে একটি ব্যবসা পরিচালনা করছি এবং পাশাপাশি শেয়ার ব্যবসা করছিলাম। আড়াই বছর ধরে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ থেকে ৪ লাখ টাকা লাভ তুলে নিয়েছি। আমির হোসেন মিজান সাম্প্রতিক বিপর্যয়ে তার পুঁজি হারিয়েছেন বলে জানান। বর্তমানে তার পুঁজির ২ লাখ টাকা চলে গেছে। তিনি বলেন, আমাদের মতো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের যে পুঁজি, তা দিয়ে অন্য ব্যবসা পরিচালনা করা খুবই কঠিন। এজন্য স্বল্প পুঁজি নিয়ে অনেকেই শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, অর্থ উপদেষ্টা কীভাবে এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়েছেন—তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এ ধরনের লোক কীভাবে উপদেষ্টা হতে পারেন এবং এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার পরও দায়িত্বে রয়েছেন, তা বুঝতে পারছি না। তাদের দায়িত্বহীন বক্তব্যের কারণে বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
জোবায়েল খান : কিশোরগঞ্জের জোবায়েল খান জানান, তিনি তার বোনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা এবং নিজের জমানো ৬০ হাজার টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু তা এখন তার পোর্ট ফলিওতে যে শেয়ার রয়েছে, তার মূল্য নেমে এসেছে মাত্র ৫০ হাজার টাকায়। বোনের ঋণের টাকা কীভাবে শোধ করবেন—এ নিয়ে তিনি উত্কণ্ঠিত। তাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
মোশাররফ হোসেন : কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মোশাররফ হোসেন মাত্র দু’মাস আগে শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামাদি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এ যুবক জমি বিক্রি করে এবং ব্যবসা থেকে ৯ লাখ টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করেছিলেন। এতে তিনি কোনো মুনাফা তো পানইনি বরং শেয়ারবাজার বিপর্যয়ে তিনি পুঁজি হারিয়েছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকারও বেশি।
সাইফুল আলম : সালাম অ্যান্ড কোম্পানিজ সিকিউরিটিজ হাউজে লেনদেন করেন সাইফুল আলম। এক্সেসরিজ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হলেও গত বছর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ শুরু করেন। এ পর্যন্ত ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এ অর্থের একটি বড় অংশ এসেছে ব্যবসা ও বাবার কাছ থেকে। একটি অংশ এসেছে প্রাইমারি মার্কেটে শেয়ার বিক্রি থেকে। এক সময় লাভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৯ লাখ টাকা। এখন লাভ তো গেছেই বরং মূলধনও কমে গেছে প্রায় ২ লাখ টাকা।
সাইফুল আলম বলেন, সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় শেয়ারবাজার নিয়ে দায়িত্বহীন বক্তব্য রাখছেন। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। বাজার যখন বেড়েছিল, তখন তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এখন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, উপদেষ্টা দায়িত্বহীন কথা বলছেন। তাদের দায়িত্বহীন বক্তব্যের জন্য বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে।
জাহিদ হোসেন : আরেকজন জাহিদ হোসেন লেনদেন করছেন সাহিক সিকিউরিটিজ হাউসে। পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি গত ৫ বছর ধরে শেয়ার ব্যবসা করে আসছেন। তিনি এ পর্যন্ত ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এর মধ্যে ব্যবসার উত্স থেকে ১০ লাখ টাকা, বাকি ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন আত্মীয়স্বজন থেকে ধার করে। ব্যবসা থেকে মুনাফা হলেও এখন মুনাফার কোনো অংশই বাকি নেই। উরপন্তু বিনিয়োগ থেকে আরও ২ লাখ টাকা কমে গেছে।
শফিকুর রহমান : শেয়ারবাজারে ২০০৭ সালে যুক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। পুস্তক ব্যবসার পাশাপাশি তিনি শেয়ার ব্যবসা করছিলেন। বিনিয়োগের একটি বড় অংশই ভাইবোনদের কাছ থেকে ধার করে এনেছেন, যার পরিমাণ ৮ লাখ টাকা। বাকি ৬ লাখ টাকা জোগান দিয়েছেন নিজস্ব ব্যবসা এবং অন্যান্য উত্স থেকে। দীর্ঘদিন এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা এ বিনিয়োগকারী জানান, তিনি আড়াই লাখ টাকা শেয়ার ব্যবসা থেকে লাভ করেছেন। কিন্তু এখন তার পুঁজি কমে এসেছে সাড়ে ৮ লাখ টাকায়। সরকারের মন্ত্রীরা অজ্ঞের মতো কথা বলছেন। বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়েছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ সময় তাদের সান্ত্বনা না দিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। একসময় অর্থমন্ত্রীও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য উত্সাহ দিয়েছিলেন। এখন বিনিয়োগকারীদের সমাজের শত্রু বলা হচ্ছে।